তৃণা ছোট পর্দায় থাকবেন তো? দ্বিধাহীন ভাবে ধারাবাহিক ‘কৃষ্ণকলি’র ‘ছোট কর্তা’র দাবি— যখন যেমন, তখন তেমন। দুই পর্দাতেই ভাল কাজের ডাক পেলে করবে। নীলের পরামর্শ, তৃণা যেন কাজের সময়ে তাঁর পরিচালকের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। কারণ, ওঁদের চেয়ে বড় শিক্ষক আর কেউ হতে পারেন না।
নীল ভট্টাচার্য ও তৃণা সাহা
তৃণা সাহা মুম্বইয়ে! নীল ভট্টাচার্য কলকাতায়। বউ ছোট পর্দা, বড় পর্দায় ডানা মেলছেন। সফল নারীর নেপথ্য কারণ হয়ে উঠছেন তাঁর স্বামী। ‘খড়কুটো’র ‘গুনগুন’ হয়ে তৃণার দর্শকদের অন্দরমহল জয় সারা। চলতি মাসেই শ্যুট শুরু করবেন অরিন্দম শীলের ‘ইস্কাবনের বিবি’র। তার পরে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবিতে ‘শ্রীচৈতন্য’ পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে ‘লক্ষ্মীপ্রিয়া’। নীল এখন গর্বিত স্বামী? আনন্দবাজার অনলাইন ফোনে যোগাযোগ করেছিল অভিনেতার সঙ্গে।
ওপারে থাকা অভিনেতার গলা প্রাণবন্ত, ঝরঝরে। উচ্ছ্বাস আর হাসি নিয়েই বললেন, ‘‘অবশ্যই। আনন্দিত, গর্বিত যা বলবেন। একা আমি নই, আমাদের দুই পরিবারেও খুশির আমেজ। তৃণার একের পর এক উন্নতি। আমরা হাওয়ায় ভাসছি।’’ তা হলে উদ্যাপন কই? ছোট পর্দার ‘অভি’ জানালেন, প্রচার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মুম্বইয়ে তৃণা। তিনি কলকাতায় শ্যুটে ব্যস্ত। দু’জনে দু’প্রান্তে থেকে তো উদ্যাপন সম্ভব নয়। তাই সব তোলা রয়েছে। পর্দা তথা নীলের জীবন-নায়িকা ঘরে ফিরলে সবটা গুছিয়ে হবে।
বড় পর্দায় তৃণাকে প্রথম আনছেন অরিন্দম। পীযূষ শাহ-র বই ‘গার্লস অব মুম্বইস্তান’ থেকে ‘সিম্পল গার্ল’ কাহিনিটি বেছে নিয়েছেন পরিচালক। ‘ইস্কাবনের বিবি’তে তৃণার সহশিল্পী অরুণিমা ঘোষ, অর্ণ মুখোপাধ্যায়, জয়দীপ কুণ্ডু, পৌলমী দাস-রা। এর কিছু দিনের মধ্যেই জানা গিয়েছে, জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালকের ছবিতেও তিনি! বড় পর্দায় অভিনয় মানেই স্ত্রী পেশার জগতে আরও ব্যস্ত হয়ে যাবে। ঘর-সংসারের কী হবে? এক বারও মনে হয়েছে? নীলের যুক্তি, ‘‘এটা বরং বেশি ভাল হল। ছোট পর্দায় কাজ মানেই ৩০ দিনের ব্যস্ততা। বড় পর্দার কাজ এখন ১৫-১৮ দিনের মধ্যেই হয়ে যায়। ফলে, তৃণা কাজও করবে। অবসরও পাবে। আমিও ওকে বেশি করে পাব।’’
তখনও তৃণা ছোট পর্দায় থাকবেন তো? দ্বিধাহীন ভাবে ধারাবাহিক ‘কৃষ্ণকলি’র ‘ছোট কর্তা’র দাবি— যখন যেমন, তখন তেমন। দুই পর্দাতেই ভাল কাজের ডাক পেলে করবে। নীলের পরামর্শ, তৃণা যেন কাজের সময়ে তাঁর পরিচালকের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। কারণ, ওঁদের চেয়ে বড় শিক্ষক আর কেউ হতে পারেন না। আগামী দিনে যদি তৃণার পরিচয়ে পরিচিত হতে হয় নীলকে? অভিনেতা স্বামী কিন্তু এই প্রশ্নেও অনর্গল। তাঁর দাবি, ‘‘পাঁচ-সাত বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে। নিজেদের পরিচয় তৈরি করে ফেলতে পেরেছি দু’জনেই। তাই একে অন্যের পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে, এই ভাবনা কোথাও নেই। পাশাপাশি ভয়, হিংসা, নিরাপত্তার অভাববোধ, প্রতিযোগিতা— কিচ্ছু নেই আমাদের মধ্যে।’’ নীলের মতে, তাঁদের আছে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা। একে অন্যকে দেখে শেখা। উদ্বুদ্ধ হওয়া। অনুপ্রাণিত হওয়া। আরও ভাল কাজ করার ইচ্ছে তৈরি হওয়া। এই অনুভূতিগুলোয় ভর করেই আগামী দিনে একসঙ্গে লম্বা পথ হাঁটতে চান ‘তৃনীল’।