সদ্যই ফিরেছেন ঢাকা থেকে। ‘মাটি’ ছবির শ্যুট সেরে। এক দিনের ছুটি নিয়ে তিনি আবার তাঁর পরিচিত সিরিয়াল পাড়ায়। মনামী ঘোষ টানা ১৯ বছর ধরে সিরিয়ালে নায়িকা হওয়ার রহস্য উন্মোচন করলেন।
প্র:১৯ বছর ধরে নায়িকার ভূমিকায়। কী করে সম্ভব?
উ: দর্শকের ইচ্ছায় আর ভালবাসায়।
প্র: রাজনীতিতে আসছেন নাকি?
উ: কেন বলুন তো?
প্র: উত্তরগুলো তো সে রকম দিচ্ছেন!
উ: আসল কথা হল, আমার পরিবারে কারও বয়স বোঝা যায় না। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমিও সেই গুণটাই পেয়েছি। আর নিয়মিত জিম, লেট নাইট না করা, লাইফস্টাইল নর্মাল রাখাও জরুরি। অবশ্য শুধু চেহারাতে নয়, মনেপ্রাণেও আমি খুব ছোট্ট। মাটিতে পা আছে। সিরিয়ালে নায়িকার চরিত্র না পেলে আমার কিন্তু মানসিক কষ্ট হয়।
প্র: চ্যানেল থেকে নাকি একবার বলা হয়েছিল আপনার মুখে বয়সের ছাপ পড়েছে…
উ: এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে আছি, এ কথা কখনও শুনিনি। সে রকম হলে ‘পুন্যিপুকুর’ এত জনপ্রিয় হতো না!
প্র: মানে আপনি বোন, দিদি এ সব চরিত্র সিরিয়ালে করবেন না?
উ: করেছি তো। বেশ কয়েক বছর আগে অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় একটি সিরিয়ালে বোনের চরিত্র করেছিলাম। তখনও কিন্তু সবাই ওই চরিত্রটা নিয়েই কথা বলত। বড় হলে মাসি, কাকিমা, দিদিমা সব করব। এখন না। প্লিজ।
প্র: নতুনদের সঙ্গে কাজ করতে অসুবিধা আছে?
উ: (থামিয়ে) সকলের সঙ্গে মিশতে পারি। আমি জলের মতো। যে পাত্রে রাখবেন সেই পাত্রের আকার ধারণ করব। কোনও কিছুতেই আমার সমস্যা নেই। সিরিয়াল এখন অনেক টেকনিক-নির্ভর। আগে যেমন রবি ওঝার ‘এক আকাশ’ করেছি। সব চরিত্রদের থাকতে হতো। সেখানে চ্যালেঞ্জ ছিল। এখন একাই শট দিয়ে গেলাম। যে যার কাজ ভাল করে করলেই হল।
প্র: সেই কারণেই কি এত দিন টিকে গেলেন?
উ: সেই ’৯৯ সাল থেকে টেলিভিশনে লিড করছি। কমপক্ষে পঁচাশিটা বিয়ে করেছি। আমার একঘেয়ে লাগে না। আর এর সঙ্গে ছবিও করেছি। ‘হিয়ার মাঝে’ শেষ করে যেমন ‘বেলাশেষে’ করেছিলাম।
প্র: ‘বেলাশেষে’র ফ্লোর থেকে সিরিয়ালে ফিরতে কষ্ট হয়নি?
উ: একেবারেই না। সৌমিত্রজেঠু, ঋতুদি, অপাদি, আর শিবুদাদের সঙ্গে এত ভাল সম্পর্ক যে, পরিবারের সঙ্গে আছি মনে হয়েছে। যদি গ্রিসে গিয়ে নাচের শ্যুট করে আসতাম, তখন হয়তো সিরিয়ালে ফিরতে সামান্য ধাক্কা লাগত। কাজটা এনজয় করি। চেহারাটাও আছে। অভিনয়টাও করতে পারি। তাই হয়তো টিকে আছি। ‘পুন্যিপুকুর’ করতে করতে ‘মাটি’ করলাম। লীনাদিদের সঙ্গে কাজ করাই তো একটা অভিজ্ঞতা।
প্র: সিনেমা না সিরিয়াল কাকে আগে রাখবেন?
উ: এটা বলা খুব শক্ত! মনামীর পরিচিতির দিক থেকে দেখলে সিরিয়ালকে এগিয়ে রাখব।
প্র: নতুনদের মধ্যে কাদের কাজ ভাল লাগছে?
উ: আমি সিরিয়াল দেখার সময় পাই না। হটস্টারে মাঝে মাঝে নিজের অভিনয় দেখি। কেমন করছি সেটা বোঝার জন্য। রাখি আর পটল খুব প্রিয়।
আরও পড়ুন: ‘আমাকে বহুবার সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যেতে হয়েছে’
প্র: আপনি তো সেটে ছোটদের ধমকও দেন...
উ: এখন সিরিয়ালে অভিনেতা নয়, টেকনিশিয়ানরাও নতুন। তো ভুল করলে বকুনি দেব না? আবার ভালওবাসি।
প্র: সিরিয়াল সমাজকে নষ্ট করছে মানেন?
উ:কিছু সিরিয়াল আমজনতার সমস্যা দেখিয়ে সমাধানও করে। অন্য দিকে কিছু জঘন্য সিরিয়ালও আছে, যেগুলো সমাজের ক্ষতি করছে।
রণিতা দাস ও মধুমিতা সরকার
•সকলে একডাকে তাঁকে বাহা বলেই চেনে। তাঁর নামে শাড়িও জনপ্রিয় হয়েছে। ‘ইষ্টিকুটুম’ রণিতার জীবনে একটা অধ্যায়। ধারাবাহিক শেষ হয়ে যাওয়ার পর চরিত্রটা থেকে বেরোতে তাঁর সময় লেগেছিল, এ কথা নিজেই বলে থাকেন রণিতা। ‘ইষ্টিকুটুম’এর আগে অবশ্য ‘ধন্যি মেয়ে’ করেছিলেন। ‘সোহাগী সিঁদুর’ দিয়ে ফের ধারাবাহিকের লিড চরিত্র হন তিনি।
•কেরিয়ার শুরু ‘সবিনয় নিবেদন’ দিয়ে। মধুমিতা তুমুল জনপ্রিয়তা পান ‘কেয়ার করি না’র পর থেকেই। একটি ধারাবাহিক শেষ হতেই আর একটিতে মুখ্য চরিত্র করেছেন মধুমিতা। ‘বোঝে না সে বোঝে না’র পাখিকেও দর্শক আপন করে নিয়েছিলেন। এখন ‘কুসুম দোলা’তে কেন্দ্রীয় চরিত্র করছেন তিনি।
মানালি দে ও অপরাজিতা দাস
•কাজ করছেন ২০০৮ থেকে। বড় ব্রেক পেলেন এক বছর পর ‘বউ কথা কও’ ধারাবাহিকে। মানালি দে-র সেই জনপ্রিয়তা আজও অটুট। রাস্তাঘাটে তাঁকে দেখলে আম জনতা ‘মৌরি’ বলেই ডেকে ওঠেন। তবে চরিত্রের খোলস ছেড়ে মানালি কিন্তু বেশ সফলভাবেই বেরিয়ে
এসেছেন। ‘সখী’তে তিনি ফের লি়ড চরিত্র করেছেন। অন্যান্য ধারাবাহিকেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র করেছেন। কাজ করেছেন সিনেমাতেও।
•প্রায় ১০-১১ বছর ধরে দর্শকের ভালবাসা পাচ্ছেন অপরাজিতা। ‘একদিন প্রতিদিন’-এর মোহরকে দর্শক মনে রেখেছেন। তার পর ‘এখানে আকাশ নীল’, ‘চেকমেট’, ‘কোজাগরী’। এখন ‘কুসুম দোলা’তেও তিনি। কোনও দিনই টাইপকাস্ট হননি। বাঁধা গতের ‘বউমা’র চরিত্রের বদলে
ছকভাঙা কাজ করে গিয়েছেন অপরাজিতা।