Tollywood

পার্টিমুখর টলিউড

করোনা বিধি শিকেয় তুলে পার্টির মেজাজে সেলেব্রিটিরা। ইভেন্টের পাশাপাশি চলছে ঘরোয়া পার্টি। সেই সংখ্যাটাই বরং বেশি। কিন্তু সেখানেও তো রয়েছে সংক্রমণের ভয়।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২৪
Share:

রাজ, শুভশ্রী, রুদ্রনীল, সস্ত্রীক পদ্মনাভ।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভীতিও কমে যায়। করোনার ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। উপরন্তু ভ্যাকসিন বেরিয়ে যাওয়ার খবরে, আনন্দ-উৎসবের ক্ষেত্রে নিয়ম পালনেও শিথিলতা এসে গিয়েছে। সামনেই বড়দিন এবং বর্ষবরণ, পার্টি সিজ়নে বিনোদন দুনিয়া হাত গুটিয়ে বসে থাকবে, এমন হয় নাকি! টুকটাক ইভেন্ট যেমন হচ্ছে, তেমনই ঘরোয়া পার্টিও। তাই শীতের পরশ মেখে টলিউডও পার্টিমুখর। কিন্তু সেখানে কি নিয়মকানুন মানা হচ্ছে? ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের খবর, একেবারেই হচ্ছে না। সেলেবরা মুখে অবশ্য তা স্বীকার করবেন না। অধিকাংশেরই বক্তব্য, পার্টিতে সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকা যায় না। আর দূরত্ববিধি মানাও সম্ভব নয়।

Advertisement

যেহেতু নতুন করে সংক্রমণের ঢেউ এসেছে, তাই এই পার্টি সিজ়নে ইউরোপ ফের লকডাউন ঘোষণা করেছে। মহারাষ্ট্র সরকার নাইট কার্ফু ঘোষণা করেছে ৫ জানুয়ারি অবধি। মধ্যরাত পর্যন্ত পার্টি করতে গিয়ে পুলিশের নজরে এসেছিলেন হৃতিক রোশনের স্ত্রী সুজ়ান খান, গায়ক গুরু রণধাওয়া। এ রাজ্যে সরকারি ভাবে নতুন কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি বটে, কিন্তু নিয়মবিধিই বা মানুষ মানছে কোথায়! সম্প্রতি শহরের এক পাঁচতারার হয়ে পার্টি হোস্ট করেছেন সাহেব ভট্টাচার্য। তিনি বললেন, ‘‘এন্ট্রি পয়েন্টে থার্মাল চেকিং, হাত স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে। পার্টিতেও সকলে বারবার হাত স্যানিটাইজ় করে নিচ্ছিলেন।’’ তবে পার্টিতে ঢোকার সময়ে সকলের মুখে মাস্ক থাকলেও, পরে তা দেখা যায়নি। দূরত্ববিধিও মানেননি কেউ। এটি শুধু একটি পার্টির চিত্র নয়, সর্বত্রই তাই। সম্প্রতি শহরের এক হোটেলে পার্টি করতে দেখা গিয়েছে টলিউডের এক নায়িকাকে। সংক্রমণের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘শুধু পার্টিতেই যে করোনা ছড়াবে এমন নয়। আমি এর মধ্যে শুটিংও করেছি। সেখানেও সারাক্ষণ মাস্ক পরা যায় না এবং দূরত্ববিধি মানা যায় না। আর এত দিন ঘরে বন্দি থাকা মানুষ এ বার একটু স্বস্তির শ্বাস নিতে চাইছে।’’

ইভেন্টের পাশাপাশি চলছে ঘরোয়া পার্টি। সেই সংখ্যাটাই বরং বেশি। কিন্তু সেখানেও তো রয়েছে সংক্রমণের ভয়। সম্প্রতি অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের বাড়ির জমায়েতে গিয়েছিলেন রাজ চক্রবর্তী, শুভশ্রী। ছিলেন চিত্রনাট্যকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত-সহ আরও কয়েক জন। রাজের কথায়, ‘‘ঝুঁকি সর্বত্রই রয়েছে। আমরা যে রোজ কাজে বেরোচ্ছি, সেখানেও আছে। তবে কারও বাড়ির ছোট্ট জমায়েতে ঝুঁকি কম। সেখানে হাতেগোনা চার-পাঁচজন আসছেন। তাঁদের গতিবিধি মোটামুটি জানা।’’ ক্রিসমাস-ইভ এবং বর্ষবরণেও বড় কোনও জমায়েতে যাবেন না বলেই জানালেন রাজ। কিছু দিন আগেই ছিল অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন। সেখানে অরিন্দম শীল, রুদ্রনীল ঘোষের মতো ঘনিষ্ঠ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। একই ভাবে ঘরোয়া বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন পরিচালকসৃজিত মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘আমি খুব একটা পার্টিতে যাই না। আর এখন সচেতন নাগরিক হিসেবে পার্টিতে বা কোনও জমায়েতেও যাচ্ছি না। আমার পরিবার আগে। এখনও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন। তাই নিরাপত্তার জন্য পার্টি থেকে দূরে থাকছি। অনেক কাজও ফিরিয়ে দিয়েছি। একটু ভয় পেলে ক্ষতি কী!’’

তবে ঘরোয়া আড্ডায় দোষের কিছু দেখছে না টলিউড। কিন্তু পরিস্থিতির বিচারে কোনও জমায়েতই নিরাপদ নয়। এখন পার্টি না করলেই কি নয়? টলিউডের সব পার্টির মধ্যমণি এক নায়িকাকে প্রশ্ন করতেই তিনি পাল্টা প্রশ্ন তুলে বললেন, ‘‘সম্প্রতি বেশ কিছু বিয়ে হয়েছে টলিউডে। সেগুলোও যে এখুনি করতে হত, এমন তো নয়? সেখানেও লোকে সব সময়ে মাস্ক পরে ঘুরেছেন বা দূরত্ববিধি মেনেছেন, তা নয়। আমি বলছি না বিয়ে করাটা অনুচিত। আসলে আর কত দিন মানুষ সব আনন্দ, ভাল লাগা শিকেয় তুলে রাখবেন?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement