স্বস্তিকা দত্ত। ছবি-সংগৃহীত।
গোটা পুজোটাই কাজ নিয়ে মেতে ছিলেন। কখনও পুজো পরিক্রমা। কখনও আবার কোনও ব্র্যান্ডের হয়ে প্রচার। অবশেষে দশমীতে নিজের জন্য পুজো মণ্ডপে গেলেন স্বস্তিকা দত্ত। জীবনে প্রথম বার দেবীবরণ করলেন অভিনেত্রী। আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “আমি এখনও দেবীবরণ করার ঘোর থেকে বেরোতে পারিনি।
কিন্তু এ বার দেবীবরণ করার সিদ্ধান্ত কেন? স্বস্তিকা বলেন, “এ বছর মায়ের থেকে একটু বেশি শক্তি দরকার। একটু বেশি আশীর্বাদ ও ভালবাসা দরকার। যত বড় হচ্ছি, নিজের ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধও বাড়ছে। সেই জন্যই মায়ের হাতটা মাথার উপর দরকার। হঠাৎই ঠিক করলান মাকে বরণ করব। কোনও পরিকল্পনা ছিল না। পরিকল্পনা করে আমি যা-ই করি, সেগুলো ভেস্তে যায়। তবে এই বরণের অনুভূতি অসাধারণ। গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল।”
নিয়ম অনুযায়ী, দেবীকে বরণ করেন সধবা মহিলারা। তবে গত কয়েক বছরে সেই ছক ভেঙেছেন বহু মহিলাই। স্বস্তিকাও সেই পথেই হাঁটলেন। অভিনেত্রী বলেন, “প্রথমে একটু অদ্ভুত লাগছিল, সমস্ত বিবাহিত মহিলাদের মধ্যে আমি একা। কিন্তু তেমন কোনও অস্বস্তি নেই। ইচ্ছে ছিল বরণ করার। করেছি। নিয়ম বিরুদ্ধ অনেকেই বলতে পারেন। তবে নিয়ম মেনে কে কী করছেন, সেটা সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। ঈশ্বরের কাছে পৌঁছতে মানুষের তৈরি করা নিয়ম ভাঙতে আর কী! বিবাহিত হলেই শুধু বরণ করতে পারি, এমন আমি বিশ্বাস করি না।”
স্বস্তিকার মতে নারী স্বাধীনতার প্রতীক সিঁদুর খেলা। এর জন্য বিবাহিত বা সধবা মহিলা হতেই হবে এর কোনও মানে নেই। তাঁর কথায়, “মা দুর্গা তো যুদ্ধ করছিলেন। নারীশক্তির জয়কে সিঁদুর খেলার মাধ্যমে আমরা উদযাপন করি। এই লাল রংটাকে আমরা খুব পবিত্র হিসাবে মানি। আসলে এই বাঁধা গতের ধারণাগুলো বাদ দেওয়া প্রয়োজন। আমি যেটা ঠিক মনে হয় সেটাই করি। আর নাম থাকলে বদনামও হবে।”
দেবী দুর্গার পুজো করলেও নিজের জন্য তেমন কিছু চাইতে পারেননি স্বস্তিকা। প্রতিমার সামনে গিয়ে অপলক দৃষ্টিতে কেবল তাকিয়ে ছিলেন। অভিনেত্রীর কথায়, “আমি নিজের জন্য কিছু চাইতে পারি না সঙ্গে সঙ্গে। হয়তো চাওয়ার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু সেই সময়ে স্তব্ধ হয়ে যাই।”
তবে এ বছরের পুজো নিয়ে কোনও উত্তেজনা ছিল না স্বস্তিকার। পুজোটা যেন নিমেষে কেটে গেল। এ ভাবেই পুজোটা এ বার যেন হওয়ার ছিল। দেবী দুর্গাও নিজের অস্তিত্ব সেই ভাবে বোঝাতে চাননি এ বার। মনে করছেন স্বস্তিকা।