Dev as Byomkesh

আর পাঁচটা ‘ব্যোমকেশ’ তৈরি করতে চাইনি, নোলান বানালে যে ভাবে বানাতেন, সে ভাবেই দেখেছি: দেব

নিজের দুর্বলতাগুলি তিনি ভালই জানেন। তাই চেষ্টা করেন, নিজের জোরের জায়গাগুলি তুলে ধরার। ‘ব্যোমকেশ’ হয়ে ওঠার গল্প আনন্দবাজার অনলাইনকে শোনালেন দেব।

Advertisement

পৃথা বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৪০
Share:

‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ ছবিতে দেব। ছবি: সংগৃহীত।

সাক্ষাৎকারের নির্ধারিত সময় খানিকটা পিছিয়ে গিয়েছিল। কারণ, দেবের শরীর ভাল নেই। ঘণ্টাখানেক দেরিতে শুরু হল কথোপকথন। শরীর কেমন আছে জানতে চাওয়ায় চিরাচরিত দেবসুলভ হাসিতে জানালেন, এখন ভাল আছেন। আসলে তাঁর আগের দিনই ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’-এর ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে দেবের দুর্গে আমন্ত্রণ ছিল অন্য ব্যোমকেশের। মানে, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের। সঙ্গে ছিলেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, সত্যবতীরূপী সোহিনী সরকার, প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা-সহ আরও অনেকে। এত জনকে এক মঞ্চে জড়ো করে এমন একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন খুব একটা সহজ ছিল না। গোটাটাই একা হাতে সামলেছেন দেব। কী হয়েছিল জিজ্ঞেস করায় বললেন, ‘‘কাল পর্যন্ত বড্ড চাপ ছিল। অনুষ্ঠান শেষে শরীর ছেড়ে দিয়েছিল। রাতে একটু অসুস্থই হয়ে পড়ি।’’

Advertisement

প্রশ্ন: ‘প্রজাপতি’র পর থেকে তো দেবের সময়টা খুবই ভাল যাচ্ছে। এখনও এত চাপ নিয়ে কাজ করেন?

দেব: ভগবান এবং দর্শকের আশীর্বাদে এমন ভাল সময় আমার কেরিয়ারে একাধিক বার এসেছে। একমাত্র ‘অগ্নিশপথ’ ছবিটা সে ভাবে চলেনি। কিন্তু তার পর থেকে ‘আই লাভ ইউ’, ‘চ্যালেঞ্জ’, ‘পরাণ যায়…’, ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘অ্যামাজ়ন অভিযান’— সবই হিট। গত তিন-চার বছরে ‘টনিক’, ‘গোলন্দাজ’, ‘কাছের মানুষ’-এর মতো ছবি আছে। এমন নয় যে, ‘প্রজাপতি’র পর হঠাৎ ভাল সময় শুরু হয়েছে। তবে এখনও যে কোনও ছবি মুক্তির আগে অনেক বেশি চাপ পড়ে আমার উপর। আসলে আমার একটা খারাপ অভ্যাস হল, জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ— সবেতেই মাথা ঘামানো। প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টের কাজ যেন সমান ভাবে ভাল হয়, সে দিকে নজর দিই। তাই প্রচুর পরিশ্রম হয়। তবে একটা দিক থেকে এই সময়টা সত্যিই ভাল। দর্শক আমার উপর চির কালই বিশ্বাস রেখেছেন। এখন পরিচালকেরাও করছেন। অনেক ধরনের চরিত্র আমার জন্য লেখা হচ্ছে। সে সব চরিত্র নিয়ে হয়তো আগে সকলে ভাবতেন, ‘দেব এ সব করতে পারবে না’! সেই মিথগুলি ভাঙতে পেরেছি। প্রযোজকেরাও ভরসা রাখছেন। যে কোনও বড় বাজেটের ছবি হলে আমার কাছে একটা ফোন আসেই।

Advertisement

প্রশ্ন: নিজের প্রযোজনা সংস্থা খুলেছিলেন যখন, অনেকে আপনাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিলসেখান থেকে আজ আপনি ইন্ডাস্ট্রিতে ঐক্য বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। শেষ হাসিটা তা হলে আপনিই…

দেব: আসলে বিষয়টা সহজ। অতিমারির পর হলে দর্শকেরা খুব কম সংখ্যায় আসছেন। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এতই ছোট যে, কোনও রকমে পাঁচ টাকা আয় হয়। তার মধ্যে যদি সবাই লড়াই করি, তা হলে এক জনকে না খেয়ে ঘুমোতে হবে। তার চেয়ে যদি আড়াই টাকা করে ভাগ করে নিই, তা হলে দু’জনেরই ঘুম ভাল হবে। যদি বলেন ‘প্রজাপতি’র পর সময় ভাল যাচ্ছে, তা হলে সেই সাফল্যটা কী ভাবে ব্যবহার করছি, সেটাও দেখা জরুরি। আমিও দম্ভ নিয়ে বসে টুইট করতে পারতাম, ‘অন মাই ওন টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন্‌স’ বলে। কিন্তু সে পথে আমি হাঁটিনি। আমি চেষ্টা করেছি সকলকে জানাতে যে, আমাদের মধ্যেও সদ্ভাব আছে। আমার কিন্তু মোটে ৩০ সেকেন্ড লেগেছিল। শ্রীকান্তদাকে (মোহতা, এসভিএফের অন্যতম কর্ণধার) ফোন করে বলি, আমার ছবি আর ওদের ওয়েব সিরিজ়টা যখন একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে না, তখন আর ঝগড়া করে কী লাভ! ওরা যদি আমার ট্রেলারটা লঞ্চ করে, আমি তা হলে ওদেরটা করব। আমার ছবিটা ভাল চললে দর্শক উৎসাহ নিয়ে দেখবেন, ওরা কী বানিয়েছে। ওদেরটা ভাল চললে শ্রীকান্তদার আর্থিক লাভ হবে। হয়তো পরে এসভিএফের সঙ্গে কাজ করলে সেই টাকাটা কাজে লাগবে। ইন্ডাস্ট্রিতে সবেরই তো যোগ রয়েছে। অভিনেতা এবং রাজনীতিবিদ হিসাবে আমি সফল হয়েছিলাম মানেই যে প্রযোজক হিসাবেও সফল হব, তার কোনও মানে নেই। প্রথম দিকে আমারও অনেক লোকসান হয়েছে। তবে সাত বছর আগে একটা গাছ লাগিয়েছিলাম। এখন সেটায় ভাল ফল হচ্ছে।

‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ ছবিতে দেব এবং অম্বরীশ। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: আপনার এই পরিণত মনোভাবও কি সময়ের ফসল? না কি সাফল্যের?

দেব: ব্যর্থতার। সাফল্য তো শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত। তার পরেই আমার পরের ছবির প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। প্রথম তিন দিনের পর যা করার দর্শকই করেন। তবে আমি খুব তাড়াতাড়ি নিজের ভুলগুলি থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করি। ব্যর্থতা আমায় অনেক কিছু শিখিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম শিক্ষা— ঝগড়া করে কখনও কোনও লাভ হয় না।

প্রশ্ন: তা হলে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সব ঝগড়া এখন মিটে গিয়েছে?

দেব: আমি তো কোনও দিন কিছু লিখিনি। আমি একটা জিনিস ভাল করে বুঝি, এত ঝগড়া কোরো না, যাতে সব দরজা-জানলা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। ফেরার দরজা যেন খোলা থাকে। আমার সে রকম ফোন করার জায়গা ছিল। আমি কিন্তু টুইটারে এক বারও ‘অন মাই ওন টার্মস...’ লিখিনি। কাউকে জবাবও দিইনি। খুব শান্ত ভাবে চুপচাপ নিজের শুটিং শেষ করেছি। সৃজিত মাঝে অনেকগুলো সাক্ষাৎকার দিয়েছে। আমি কিন্তু কোনও সাংবাদিক বৈঠক করিনি। কোনও সাক্ষাৎকারও দিইনি। তবে আমি ওর সাক্ষাৎকারগুলি দেখেছি। ওর কষ্টটাও বুঝতে পেরেছি। বুঝতে পারছিলাম, আমি উত্তর দিতে শুরু করলে, বিষয়টা আরও বড় হয়ে যাবে। আমি প্রোজেক্টের জন্য কোনও রকম নেতিবাচক পরিবেশ চাই না। ‘প্রজাপতি’র সময়েও আমি তৃণমূল-বিজেপিকে হাতজোড় করে বলেছিলাম, ‘‘তোমরা লড়লে মানুষ ভয় পেয়ে যাবে। প্লিজ় এটা কোরো না।’’ আমি তো সৃজিতের সঙ্গে ছবিও করছি। আমায় সিরাজউদ্দৌলার কথা বলেছিল। আমি গল্প না-শুনে রাজি হতে পারিনি। কিন্তু ওর মাথায় কিছু একটা চলছিল। আমায় আরও একটা গল্প শোনাল। বেশ ভাল লাগল। রাজি হয়ে গেলাম। ঝগড়া কিসের! আমারও কোনও শুত্রু নেই। আর সৃজিত খুবই ভাল পরিচালক। ২০১০ থেকে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে ওর অবদান অস্বীকার করা যাবে না। তবে কলকাতা-মুম্বই মিলে অনেক কাজ করে তো! কখন কোন কথা মনে লেগে যায়! বোঝা মুশকিল। এই সমস্যার সমাধান একটা ফোনে হতে পারত। শেষমেশ আমি সেটাই করেছি।

প্রশ্ন: কোভিডের পর দর্শককে হলে টানতেই কি একটু বড় মাপের ছবির দিকে ঝুঁকছেন? দক্ষিণী সিনেমা কি মডেল?

দেব: প্রযোজক হিসাবে নতুন কিছু করার তাগিদ আমার বরাবরই। এই সময় একটা ‘প্রজাপতি’ যেমন প্রয়োজন, তেমন একটা ‘বাঘাযতীন’ও। আবার ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’-এর মতো সাহিত্যনির্ভর ছবির পাশাপাশি ‘বিনোদিনী’র মতো নারীকেন্দ্রিক ছবিও দরকার। এগুলি সবই গ্র্যান্ড স্কেলে বানানো। দর্শককে নতুন কিছু দিতেই হবে। যা আগে হয়নি, তেমন কিছু তৈরি করার মধ্যে একটা আলাদা আনন্দ থাকে। আমি এখন যে ছবিগুলি বেছে নিই, সেগুলি দেখেই বুঝবেন, হয় আমার ‘জয়’ স্মরণীয় হয়ে থাকবে, নয়তো আমি ‘সব হারাব’। তবে দক্ষিণের মডেলের সঙ্গে তুলনা চলে না। আমি তো ‘বাহুবলী’ বানাচ্ছি না। ‘বাঘাযতীন’-এর মতো বাস্তব চরিত্র নিয়ে কাজ করছি।

প্রশ্ন: আপনি ব্যোমকেশ হবেন শুনেই সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। ট্রেলার বেরোনোর পর কী প্রতিক্রিয়া?

দেব: আসলে এখন কারও কোনও ধৈর্য নেই। কোনও না কোনও টিপ্পনী কাটতেই হবে। আমায় আদৌ মানাচ্ছে কি না, দেখার জন্য অন্তত ছবির ট্রেলার পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতে হবে! আশা করছি, অনেকের অনেক ধারণা ভেঙেছে। ট্রেলার দেখে বেশির ভাগের প্রতিক্রিয়াই হল, এটা বড় পর্দায় দেখার মতো একটা ছবি। ব্যোমকেশ এমনিতে ছোটদের গল্প নয়। কিন্তু ট্রেলার দেখে অনেকেই বুঝেছেন, এই ব্যোমকেশ শুধু বড়দের হতে পারে না। প্রচুর ফোন পেয়েছি। এমন অনেক দর্শক রয়েছেন, যাঁরা হয়তো ‘প্রজাপতি’র দর্শক নন, অন্য ধরনের ছবি পরিবারের সঙ্গে বসে দেখতে চান, তাঁদের জন্য এটা ভাল উপহার।

প্রশ্ন: আপনি দেব বলেই কি দর্শক এবং ইন্ডাস্ট্রির একাংশ আরও বেশি করে সমালোচনা করার জন্য মুখিয়ে থাকেন?

দেব: আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। যখন ‘শঙ্কর’ হয়েছিলাম বড় বড় তারকা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তখনও আমি রেগে যাইনি। মনে হয়েছিল, ঠিকই তো বলছেন সকলে। আমি তো সাহিত্য পড়ে বড় হইনি। সেই সময়ে শঙ্কর কে, বিভূতিভূষণ কে— কিছুই জানতাম না। আসলে আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠার সবটাই মুম্বইয়ে। আমাদের বাড়িতে তেমন বই পড়ার চল ছিল না। বহু বাড়িতেই থাকে না। তা বলে কি তাঁরা সবাই ‘গবেট’? কিছু মানুষ পড়াশোনা করে আসেন। আর কিছু মানুষ কাজ করতে করতে শেখেন। আমি দ্বিতীয় গোত্রের। প্রত্যেক মুহূর্তে আমি নিজেকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করি। যাঁরা আমায় ট্রোল করেন, তাঁদের মতামতকেও গুরুত্ব দিই। কখনও কখনও মজা লাগে। কারণ, এই সংখ্যাটা মোটে দুই শতাংশ হবে। ‘কিশমিশ’, ‘টনিক’— দুটোই ভাল চলেছিল। বহু হিন্দি ছবির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ‘প্রজাপতি’ ২০০ দিন রমরমিয়ে চলেছে। তাই ট্রোলিং নিয়ে আমি ভাবি না।

প্রশ্ন: এত সমালোচনা শুনে কি আরও কোমর বেঁধে নেমেছিলেন?

দেব: ব্যোমকেশ আমার কেরিয়ারের অন্যতম কঠিন চরিত্র। প্রথমে কিন্তু আমি করতে রাজি হইনি। যখন হলাম, মনে হল, নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মারলাম।

প্রশ্ন: প্রথমে রাজি হননি কেন?

দেব: মনে হয়েছিল, সবাই তো ব্যোমকেশ হন। আমি না হলেও চলবে। ভগবানের আশীর্বাদে আমার তো সংসার চলে যাচ্ছে। আমার হাতে অন্য ধারার ছবিও আছে। আর কী দরকার! কিন্তু শ্যামসুন্দর (দে, প্রযোজক) যখন বলল, গল্পটা ‘দুর্গরহস্য’, তখন আমি রিসার্চ করে দেখলাম। ক্যানভাসটা সত্যিই বড় বলে হয়তো এত দিন কেউ করেননি। আমি বলেছিলাম, আমি করলে সব সিদ্ধান্ত আমি নেব। পুরো টিম আমি তৈরি করব। এবং এই ক্যানভাসেই (ট্রেলারে যেটা দেখানো হয়েছে) করব। শ্যাম এক কথায় রাজি হয়ে যায়।

(বাঁ দিক থেকে) অম্বরীশ, দেব এবং রুক্মিণী। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: এমন বৈগ্রহিক চরিত্রে অভিনয় করতে ভয় লাগেনি?

দেব: যদি আপনি আপনার খামতিগুলি জানেন, তা হলে কাজ অনেকটা এগিয়ে থাকে। ব্যোমকেশ করতে গিয়ে দেখলাম, ১ থেকে ১০০— পুরোটাই আমার খামতি (হাসি)। ধীরে ধীরে সেগুলির উপর কাজ করা শুরু করতাম। ৫০-৬০-৭০ পর্যন্ত পৌঁছেছি। আশা করছি, বাকিটা দর্শক হলে গিয়ে পাশ করিয়ে দেবেন!

প্রশ্ন: আপনি নাকি এখন চিত্রনাট্য নিয়ে অনেক মতামত দেন?

দেব: আগেও কিন্তু দিতাম! আমার ভাল লাগে সব ধরনের কাজ করতে। সিনেমা ইজ আ প্রসেস অফ হু কনভিনস্‌ড হুম। হয় পরিচালক আমায় বোঝাবেন। নয়তো আমি পরিচালককে বোঝাব। এটা একটা প্রসেস। বিরসা (দাশগুপ্ত), অভিজিৎদা (সেন), অরুণদা (রায়)— যে পরিচালক আমার সঙ্গে কাজ করেন, তিনি আমার পরামর্শ নেন। যেমন, ‘প্রজাপতি’র শেষে মিঠুনদার (চক্রবর্তী) নয়, আমার দুর্ঘটনা হওয়ার কথা ছিল। তখন বলেছিলাম, আমি বিছানায় থাকলে মমতাদিকে (শঙ্কর) বোঝাতে পারব না। আবেগটা আসবে না। এটা শুটিংয়ের সাত দিন আগে বদল হয়েছিল। ছবির শেষ ১০ মিনিটই কিন্তু ইউএসপি। আসলে পুরোটাই টিমওয়ার্ক। কাজ করতে করতে টিমের আমার উপর একটা ভরসা তৈরি হয়েছে।

প্রশ্ন: এই টিমে বিরসা এলেন কী ভাবে?

দেব: বিরসার সঙ্গে আমি আগেও কাজ করেছি। ও খুবই ভাল মেকার। কিন্তু আমার যেমন বাংলাটা ভাল নয়, বিরসার সমস্যা, ও লিখতে পারে না। ভাল চিত্রনাট্য হাতে পেলে ভীষণ ভাল ভাবে তৈরি করতে পারবে। ঘোষণার দিন ও আমায় মেসেজ করে। আমি বেশ কয়েক ঘণ্টা ভেবেছিলাম। কারণ, আমার কাছে অনেক পরিচালকের ফোন এসেছিল। নাম করতে চাইছি না। আমি এমন মেসেজও পেয়েছিলাম, ‘এক মুখোপাধ্যায় রাজি না হলেও অন্য মুখোপাধ্যায় হাজির আছে’ (হাসি)। আমি কিছু ক্ষণ পুরোটা মনে মনে সাজিয়ে নিই। বিরসা তখন মুম্বইতে ছিল। একটা ওয়েব সিরিজ় করছিল। আমি দেখলাম, তিন-চার জনের মধ্যে বিরসাই সেরা। ঠিক ১০ দিন পর ও মুম্বই থেকে ফিরল। আর আমরা কাজ শুরু করে দিলাম।

প্রশ্ন: আপনার ব্যোমকেশকে একদম অন্য রকম দেখতে লাগছে...

দেব: আই ওয়াজ মেকিং শার্লক হোম্‌স। আর পাঁচটা ব্যোমকেশ, যা হয়ে গিয়েছে, তেমন কোনও ব্যোমকেশ হতে চাইনি। আমি চাইনি যে, আমাদের ব্যোমকেশ দেখে কেউ অন্য কোনওটার ‘কপি’ বলুক। কোনও দৃশ্য দেখে যাতে মনে না হয় যে, এটা আবীর (চট্টোপাধ্যায়) করেছে বা অনির্বাণ (ভট্টাচার্য) করেছে। আমার টিমের ব্রিফ ছিল, অন্য ব্যোমকেশগুলো যেন কেউ না দেখে। আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যোমকেশকে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। ভাবলাম, যদি নোলান (ক্রিস্টোফার) ব্যোমকেশ বানাতেন, তা হলে কী ভাবে বানাতেন? আমি একদম সেটাই করার চেষ্টা করেছি। দেব যদি নতুন কিছু না করে, তা হলে আর কে করবে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement