বয়স মাত্র তেইশ। কিন্তু টিকটক-এ তাঁর ভক্তসংখ্যা ইতিমধ্যেই ছাড়িয়েছে এক কোটি ষাট লক্ষ। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাখতে হয়েছে দেহরক্ষী। মেয়ের উপার্জনের আতিশয্যে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন মা। টিকটক ভিডিয়ো করে রাতারাতি লাখপতি ব্রিটিশ তরুণী হোলি হর্ন। ডলারে প্রতি মাসে তাঁর উপার্জন ছুঁয়েছে ৬ অঙ্কের সংখ্যা।
হোলি এখন ব্রিটেনের অন্যতম জনপ্রিয় সুপারস্টার। গ্লসি পাউটেড ঠোঁট, বাদামি চোখ আর ম্যনিকিয়োর করা রঞ্জিত নখ হল মহাতারকা হোলির সাজের ট্রেডমার্ক।তাঁর ভিডিয়োর দৈর্ঘ্য মাত্র ১৫ সেকেন্ডের। কিন্তু এর জনপ্রিয়তা অভাবনীয়।গত বছর টিক টকে আপলোডেড হওয়া তাঁর একটি ভিডিয়ো ক্লিপ এখনও অবধি দেখা হয়েছে ৭ কোটি ৭২ লক্ষ বারেরও বেশি।
ইন্টারনেটে হোলির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। তাঁর ভক্তরা মূলত আট থেকে ১৫ বছর বয়সি। প্রতিদিন হোলির অনলাইন পোস্ট এই ভক্তদের শুভেচ্ছায় ভেসে যায়।
বিনোদনের আধুনিক মানচিত্রে টিকটক ভিডিয়ো প্রথম সারিতে। নিয়ম অনুযায়ী, এর কোনও ভিডিয়োর দৈর্ঘ্য ৫৯ সেকেন্ডের বেশি হবে না। এক মিনিটের কম সময়েই আকৃষ্ট করতে হবে দর্শককে।
পোশাকি ভাষায় টিকটক ভিডিয়োকে বলা হয় ‘জাঙ্কফুড টেলিভিশন’। খাবারের মতো বিনোদনেও বাজিমাত করেছে এই ‘জাঙ্ক’। তার দৌলতে রাতারাতি প্রচারের আলোয় এসে মহাতারকার তকমা পেয়েছেন হোলি হর্ন।
কোনও ভিডিয়োতে হোলি জনপ্রিয় পপ সুরের সঙ্গে লিপ সিঙ্ক করেছেন। আবার কোথাও হয়তো তাঁর তুরূপের তাস মজাদার নাচের ভঙ্গি। অনেকের কাছেই তাঁর ভিডিয়ো ছেলেমানুষি মনে হতে পারে।
কিন্তু বিনোদন দুনিয়ার বিশেষজ্ঞদের মতে, হোলি জানেন নির্দিষ্ট দর্শক তাঁর কাছ থেকে ঠিক কী চান। ফলে তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটার টান দেখা যায়নি। তাঁর দর্শক ছড়িয়ে আছে ব্রিটেনের সীমার বাইরে আন্তর্জাতিক মহলে। ব্রিটেনের বড় বড় একাধিক ব্র্যান্ড প্রোমোশনাল গাঁটছড়া বেঁধেছে হোলির সঙ্গে।
সাধারণত টিকটক ভিডিয়োর বিষয় হয় মজাদার বা ব্যঙ্গাত্মক। দেখা হয়, যাতে এই ভিডিয়ো দর্শক হাল্কা মনে দেখতে পারেন। বন্ধ করা না হলে লুপে একনাগাড়ে চলতেই থাকে টিকটক ভিডিয়ো।
হোলির ধূমকেতুসম উত্থানে সবথেকে বেশি বিস্মিত তাঁর মা, জোডি হর্ন। মধ্যবয়সী জোডি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মেয়ের টিকটক ভিডিয়ো তাঁর উদ্ভট বলে মনে হয়। তিনি ভেবেই পান না কেন বা কী করে এগুলো জনপ্রিয় হয়।
তবে জোডি অতশত ভাবতেও চান না। মেয়ের উপার্জন বেশি হচ্ছে, তিনি এতেই খুশি। তাঁর কাছে শকিং লাগলেও তিনি মনে করেন, টিকটক ভিডিয়ো এখন আকর্ষণীয় কেরিয়ার।
অভাবনীয় উত্থান পাল্টে দিয়েছে হোলির জীবনযাপনও। আগে তিনি থাকতেন সাদামাটা বাড়িতে। এখন তাঁর ঠিকানা ওয়েস্ট সাসেক্সের চার কামরার বড় বাড়ি। বিজ্ঞাপনদাতা এবং বিজ্ঞাপনের এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে তিনি চলে এসেছেন লন্ডনের কাছে।
পরিসংখ্যান বলছে, হোলির ভক্তদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মেয়ে এবং ২০ শতাংশ ছেলে। তারা হোলির পারফরম্যান্স দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তাঁদের জন্য হোলি যেখানে যান, জনজোয়ারে ভেসে যান। মবড হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে একদল নিরাপত্তারক্ষী বাড়ির বাইরে হোলির সর্বক্ষণের সঙ্গী। (ছবি:ফেসবুক)