সার্সি-জেমি
হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে ৭০০ ফুট উঁচু বরফের দেওয়াল। ৮০০০ বছর ধরে অতিপ্রাকৃত শক্তির হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করেছে এই দেওয়াল। এ বার মৃত্যুর পরে বাঁচিয়ে তোলা ভিসেরিয়নের সাহায্যে তা পেরিয়ে হাজির নাইট কিঙ্গ। সঙ্গে বিশাল হোয়াইট বাহিনী। এ ভাবেই শেষ হল ‘গেম অব থ্রোনস’-এর সপ্তম সিজন।
কী কী ঘটল এই সিজনে?
শুরুর কয়েকটি পর্বে সিংহাসন দখলের লড়াই গুরুত্ব পেলেও ক্রমশ সামনে এসেছে হোয়াইট ওয়াকারদের কথা। তাদের রুখতে না পারলে যে সিংহাসনে বসার মতো কেউ বেঁচে থাকবে না, তা বারবার শোনা গিয়েছে বিভিন্ন চরিত্রের মুখে। তাদের বিরুদ্ধে পুরো দেশকে সংগঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে জন স্নো। শেষমেশ ড্যানেরিসের বিশ্বাস অর্জন করতে সমর্থ হয় জন। আপাতত সিংহাসন জয় করার ভাবনা দূরে সরিয়ে রেখে জনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে ড্যানেরিস। ইতিমধ্যেই তার ক্ষতির তালিকায় রয়েছে একটি ড্রাগন।
বুদ্ধির লড়াইয়ে প্রথমে একের পর এক সঠিক চালে এগিয়ে গিয়েছিল সার্সি ল্যানিস্টার। তার পরেই গল্প মোড় নেয় অন্য দিকে। প্রতিশ্রুতি দিয়েও হোয়াইট ওয়াকারদের সঙ্গে যুদ্ধ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয় সার্সি। তার সঙ্গে ভাই জেমির দূরত্ব বাড়ছিলই। ভাইকে অন্ধকারে রেখে ইউরনের সঙ্গে পরামর্শ করা সেই কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিল।
ব্র্যান স্টার্ককে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখার আশায় ছিলেন ভক্তেরা। কিন্তু একমাত্র শেষ পর্বে তাকে এই ভূমিকায় দেখা গেল। পিটার বেলিশের বিশ্বাসঘাতকতার প্রমাণ দাখিল করে সে। সিজনের শুরুতে আরিয়া এসে পৌঁছয় উইন্টারফেলে। কিন্তু সানসার সঙ্গে তার সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটে। পরে অবশ্য জানা যায়, পিটারকে দোষী প্রমাণিত করার জন্যই ঝগড়ার অভিনয় করছিল তারা।
ড্যানেরিস-জন
নিজের আসল পরিচয় নিয়ে এখনও অন্ধকারে জন। তবে ব্র্যান এবং স্যামের কল্যাণে দর্শক জেনেছেন, রেগার টারগারিয়েন এবং লিয়্যানা স্টার্কের বিয়ে হয়েছিল। জনের আসল নাম এগন টারগারিয়েন। ওয়েস্টেরোসের সিংহাসনের দাবিদার সে। এমনকী, ড্যানেরিসের চেয়েও তার দাবি জোরদার। যদিও আয়রন থ্রোন নিয়ে এই মুহূর্তে মাথাব্যথা নেই জনের।
সপ্তম সিজনের গল্প যে ভাবে এগিয়েছে, তা নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি অনেক দর্শকই। গল্প অতি দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে গিয়ে প্রায়ই প্লট খেই হারিয়েছে বলে মত অনেকের। তবুও পরের সিজনের জন্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে অপেক্ষা। কবে দেখা যাবে এই শো-র ফিনালে?
আগামীর টিজার
•
নির্মাতারা জানিয়েছেন, শেষ সিজনে থাকবে ছ’টি এপিসোড
•
প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৮০ মিনিটের কাছাকাছি
•
তাই অপেক্ষা করতে হবে ২০১৯ পর্যন্ত
•
এই সিরিজ থেকে চারটি স্পিন-অফের সম্ভাবনা রয়েছে
শেষমেশ কী আছে ভাগ্যে?
গল্পের শেষ কোথায়, তা নিয়ে ভক্তদের মধ্যে জল্পনা তুঙ্গে। ভেসে বেড়াচ্ছে নানা ‘ফ্যান থিয়োরি’।
যুদ্ধ আসছে। আর সেই যুদ্ধে বহু মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। জন এবং ড্যানেরিসের মধ্যে কারও মৃত্যু হবে বলে আশঙ্কা দর্শকদের। আগামী সিজনের শুরুর দিকে নজর থাকবে হোয়াইট ওয়াকারদের সঙ্গে যুদ্ধে। তার পরে নজর পড়তে পারে সিংহাসনের জন্য লড়াইয়ে। সেখানে ফের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে দেখা যাবে সার্সি ও ইউরনকে।
আগামী সিজনের শুরুর দিকেই হয়তো জন নিজের পরিচয় জানতে পারবে। তখন কোন পথে এগোবে তার সঙ্গে ড্যানেরিসের সম্পর্ক? সিংহাসনের আরও এক দাবিদার হিসেবে ড্যানেরিস কি তাকেও শত্রু হিসেবে মনে করবে? না কি দু’জনের যুগলবন্দিতে তারা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে? আর একটি ড্রাগনের পিঠে চড়তে দেখা যাবে কি জনকে? তবে জনের নৈতিক চরিত্রের কথা ভাবলে মনে হয়, ড্যানেরিসের সঙ্গে তার সম্পর্ক ধাক্কা খাবে। হোয়াইট ওয়াকারদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়লেও তার পরে কী হবে বলা যায় না। জনের পরিচয় ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক, দু’দিকেই টালমাটাল অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। ড্যানেরিস কি সত্যিই সন্তানধারণে অক্ষম? তার উত্তরাধিকারী নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বহুবার। তার স্বামীর হত্যাকারীর দেওয়া অভিশাপ আদৌ সত্যি কি না, সে প্রশ্ন তুলেছে জনও। তাই ড্যানেরিসের সন্তানকে দেখা যাবে সিংহাসনে, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।
নাইট কিঙ্গ
আজোর আহাই কে?
বহু আগে হোয়াইট ওয়াকারদের হারিয়েছিল এই প্রবাদপ্রতিম চরিত্রটি। তার ফিরে আসার ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। ভক্তদের ধারণা, বিপরীতধর্মী গুণের মিশেলে এই চরিত্রটি জন ছাড়া আর কেউ নয়। সিরিজটি নিয়ে এই উন্মাদনা সেটির জনপ্রিয়তারই পরিচয় দেয়। শেষে কী হবে তা জানতে এখন থেকেই শুরু হল প্রতীক্ষা।