এমনিতে তিনি কাজের মানুষ। সিনেমা, রাজনীতি, নিজের সদ্য খোলা ফ্যাশন ব্র্যান্ড নিয়েই দিন-রাত এক হয়ে যায় তাঁর। লকডাউনের শহরে এখন কী করে দিন কাটছে নুসরত জাহানের? সাংসদ হিসেবেই বা কতটা দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বাড়ি থেকে? খোঁজ নিতে বোঝা গেল, বেশ টেনশনেই আছেন অভিনেত্রী-সাংসদ।
একটা হঠাৎ পাওয়া ছুটির মেজাজ প্রথম-প্রথম থাকলেও, প্রধানমন্ত্রী টানা ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করার পর থেকেই চিন্তায় আছেন নুসরত। বিশেষ করে, তাঁর নির্বাচন কেন্দ্রের মানুষদের জন্য। এ রাজ্যে করোনা প্রবেশ করার পরপরই কিছু জায়গায় ঘুরে ঘুরে মাস্ক বিতরণ করেছিলেন নুসরত। এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন ওয়র্ক ফ্রম হোম। ‘‘ফোনে পুরোটা কো-অর্ডিনেট করছি। ইমার্জেন্সি ছাড়া আমার কনস্টিটিউয়েন্সির কেউ যাতে বাড়ির বাইরে না বেরোন, সে ব্যাপারে কড়া নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছি। পরিস্থিতি এখন খুবই সিরিয়াস,’’ উদ্বেগ তাঁর কণ্ঠে। জেলাশাসকের সঙ্গে সারাক্ষণ ফোনে যোগাযোগ রাখছেন নুসরত, নিয়মিত আপডেট পেতে। বাড়ি থেকে মেল আর ফোন-কলেই সামলাচ্ছেন কাজ।
আর নিজের জন্য কী করছেন? ‘‘প্রথম দিকে শখ করে কিছুদিন ভালমন্দ রান্না করেছিলাম। একদিন যেমন বিরিয়ানি রাঁধলাম। একদিন পানা কোটা। তবে এখন সে সব বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ ২১ দিন লকডাউন চলবে। মার্কেটের অবস্থাও ভাল নয়। তাই খুব আড়ম্বর করে রান্নাবান্না করে লাভ নেই। এটা বিলাসিতা করার সময় নয়,’’ বললেন নুসরত। তাঁর হাতের বিরিয়ানি কিংবা যে কোনও বেকিং আইটেমের সুনাম রয়েছে। তবে আপাতত খুব সাধারণ রান্নাতেই কাজ চালাচ্ছেন নুসরত ও তাঁর স্বামী নিখিল জৈন। এই সুযোগে নিখিলের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতে পেরে বেশ রিল্যাক্সড তিনি। জানালেন, নিজেদের কাজ নিজেরাই করছেন। ‘‘বেসিক ডাস্টিং, ক্লিনিং নিজেরাই করছি। একসঙ্গে মুভিও দেখছি মাঝেমাঝেই।’’ লকডাউনের আগে নুসরত কাজ করছিলেন ব্রাত্য বসু পরিচালিত ছবি ‘ডিকশনারি’তে। যেখানে তাঁর বিপরীতে রয়েছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। শুধু সেই ছবিই নয়, তাঁর সব শুটিংই বন্ধ এখন। বাড়িতেই তাই মাঝেমধ্যে হালকা টাচ-আপ করে ক্যান্ডিড ফোটোশুট করছেন নায়িকা। বেড়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিটিও।
রান্না ছাড়াও নুসরতের আর একটি শখ পেন্টিং। এখন দেদার ফুরসত, তাই ক্যানভাসের সামনে বসে পড়ছেন মাঝেমাঝেই। সদ্য একটি শেষ করে আর একটি নতুন ক্যানভাস ধরেছেন নায়িকা। এমনিতে তিনি জিম-ফ্রিক। তবে এখন ভাবছেন বাড়িতেই এক্সারসাইজ় শুরু করবেন। সেলফ কেয়ারে মন দিয়েছেন নিজে, দলে টেনেছেন নিখিলকেও। ‘‘বাড়িতেই ফেসপ্যাক তৈরি করে নিজেও মাখছি, ওকেও মাখিয়ে দিচ্ছি,’’ হেসে বললেন নায়িকা। কাটতে না চাওয়া অবসরে আর কী করছেন? ‘‘বহুদিন হল গল্পের বই পড়ার সময় পাই না একেবারেই। সেটা আবার শুরু করেছি। এখন যেমন পড়ছি আয়ান র্যান্ডের ‘দ্য ফাউন্টেনহেড’।’’
নুসরত তাঁর সাংসদ কোটা থেকে ফান্ড তৈরি করছেন যাতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন নিজের এলাকার মানুষদের জন্য। ‘‘খুব শিগগিরই আমরা কিছু মেডিক্যাল ইকুয়িপমেন্ট আনতে চলেছি, যার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ডিটেকশন সম্ভব হতে পারে,’’ জানালেন নুসরত।
নায়িকার লকডাউন পর্ব কাটছে অবসর আর কাজের মিলমিশে। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হয়, আর সকলের মতো তিনিও দিন গুনছেন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)