ধারাবাহিকের গল্প নিয়ে কথা বললেন কণীনিকা।
ধারাবাহিকের মান, নারী চরিত্র, সমাজের অবক্ষয় নিয়ে কিছু দিন আগেই তোপ দেগেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। এ বার মুখ খুললেন ধারাবাহিক ‘আয় তবে সহচরী’র ‘সহচরী’ ওরফে কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর সপাট দাবি, ‘‘দর্শক আগে তাঁদের রুচি বদলান। তা হলে আমরাও ধারাবাহিকের গল্প বদলাব। ভাল বিষয় দেখালে টিআরপি পড়ে যায়। ধারাবাহিক বন্ধ মানেই অভিনেতা, কলা-কুশলীদের উপার্জনও বন্ধ।’’
কিছু দিন ধরেই ‘সহচরী’র গল্প নিয়েও চর্চা চলছে ফেসবুকে, সংবাদমাধ্যমে। ধারাবাহিকের শুরুতে এক মাঝবয়সী নারীর উচ্চশিক্ষা, উত্তরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার গল্প দেখিয়েছিলেন কাহিনীকার সাহানা দত্ত। আচমকাই সেখানে পরকীয়া, দ্বিতীয় নারী, তথাকথিত শাশুড়ি-বউমার কূটকচালির প্রবেশ। প্রতিবাদে ধারাবাহিক পরিচালনা ছেড়ে দিয়েছেন প্রথম পরিচালক। তাঁর দাবি, গল্প আগের জায়গায় ফিরিয়ে না নিয়ে গেলে তিনি আর পরিচালনা করবেন না। নারী দিবসের এক বিশেষ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতেই অভিনেত্রীকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকেরা। তখনই তিনি বলেন এ কথা।
কেবল মাত্র দর্শকদের রুচির কারণে সব ধারাবাহিকে ‘থোড় বড়ি খাড়া আর খাড়া বড়ি থোড়’ গল্প?আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল কণীনিকার কাছে। পর্দার ‘সহচরী’র কথায়, ‘‘এটা বোঝার পরে আমি একা নই, টিম ‘সহচরী’ হতবাক। অসমবয়সী বন্ধুত্ব, সংসার সামলে এক নারীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন এসব নিয়েই চিত্রনাট্য লেখা হয়েছিল ধারাবাহিকের। আমিও তাই রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু অভিনয় করতে করতে দেখলাম, লেখাপড়ার গল্প কোনও দর্শক দেখতেই চান না! রেটিং চার্টে ধারাবাহিকের নম্বর তখন ৫-৬-এর আশপাশে ঘুরছে।’’ কণীনিকার দাবি, যেই পরকীয়ার গল্প যুক্ত হল ওমনি নম্বর ৯-এর ঘরে!
দর্শকদের এই রুচি তৈরি করেছেন কারা? জবাবে কণীনিকার দাবি, প্রত্যেকের শিক্ষা, বাড়ির পরিবেশ প্রত্যেকের রুচিবোধ গড়ে দেয়। সেই অনুযায়ী কেউ দেখেন নেটফ্লিক্স। কেউ পড়েন আনন্দবাজার অনলাইন, কেউ অন্য কোনও পত্রিকা বা ক্রোড়পত্র। আবার কোনও নারী দেখতে ভালবাসে ধারাবাহিকে অন্য নারীর উপরে ঘটতে থাকা অত্যাচার, তার চোখের জল। ‘‘অন্দরমহল’ ধারাবাহিকের সময় লীনা গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখেছি, ‘সহচরী’র সময় সাহানা দত্তকে দেখছি, ওঁরা ভাল কিছু দিতে চাইলেও দর্শক দেখতে চায় না। ওঁরাও নিরুপায়। যত দিন না দর্শকের রুচি বদলাবে, তত দিন ধারাবাহিকে পরকীয়া, এক পুরুষের ১০টা বিয়ে থাকবেই’’, এমনই মত তাঁর। পর্দার ‘পরমেশ্বরী’র আরও আক্ষেপ, বিনোদনে বিশ্ব কোথায় এগিয়ে গিয়েছে। বাংলা এখনও ডুবে সেই তিমিরেই।