Unlock 1.0

তারকাদের ‘আনলক’ প্ল্যান

কাজে ফেরাই হোক বা শখপূরণ, লকডাউন শেষে সেলেবরা কী করছেন? অনির্বাণ ভট্টাচার্য যেমন থিয়েটারের সহযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন লকডাউনের বেশির ভাগ সময়ে।

Advertisement

সায়নী ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ০০:৪৫
Share:

পাওলি-ইমন-অনির্বাণ (উপরে বাঁ দিক থেকে),অনুপম-ঋতাভরী-প্রিয়ঙ্কা(নীচে বাঁ দিক থেকে)।

সারা দেশের মতো এ শহরও নিজেকে ‘আনলক’ করতে শুরু করে দিয়েছে। শুটিং শুরু-সহ আরও বেশ কিছু সেক্টরে কাজ শুরু করার ছাড়পত্র পাওয়া গেলেও এখনই কিন্তু পুরোদমে কাজে ফেরার পরিস্থিতি সে ভাবে তৈরি হয়নি বাংলা বিনোদন দুনিয়ায়। লকডাউনে শিল্পীরা সকলেই কাজের জায়গা ছাড়াও কমবেশি মিস করছেন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা, বেড়াতে যাওয়া, এমনকি বিরিয়ানিও! এ বার লকডাউন পর্ব শেষ হতেই খোঁজ নেওয়া গেল তারকাদের আনলক প্ল্যানিং সম্পর্কে।

Advertisement

অনির্বাণ ভট্টাচার্য যেমন থিয়েটারের সহযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন লকডাউনের বেশির ভাগ সময়ে। কাজে ফেরার তাড়াহুড়ো বা প্ল্যানিং এই মুহূর্তে নেই। বললেন, ‘‘কী ভাবে শুরু করব, এখনই ভাবছি না। আর জরুরি কাজ ছাড়া বাইরেও বেরোচ্ছি না এই মুহূর্তে।’’ একই সুর শোনা গেল অনুপম রায়ের কণ্ঠেও। মে মাসে বন্ধুদের সঙ্গে পর্তুগাল বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই প্ল্যান ভেস্তে যাওয়ায় বেশ মনমরা তিনি। ‘‘এখনও এয়ারলাইনসের সঙ্গে ই-মেল চালাচালি চলছে টিকিট ক্যানসেলেশনের ব্যাপারে। প্রতি বছরই এই গরমের সময়টায় বেড়ানোর প্ল্যান থাকে। এ বার বানচাল হলেও আমরা হাল ছাড়ছি না, সব স্বাভাবিক হয়ে গেলে যাবই,’’ প্রত্যয়ী শোনাল অনুপমকে। অনলাইন কনসার্টে বিশেষ বিশ্বাস নেই তাঁর, আগামী মাসখানেক লাইভ শোয়ের সম্ভাবনাও দেখছেন না। আটকে রয়েছে তাঁর ছ’টি ছবির কাজও। তবে সম্প্রতি একটি মরাঠি ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের কাজ শুরু করেছেন বাড়ি থেকেই।

বাড়িতে বয়স্ক অভিভাবক ও পারিপার্শ্বিক সকলের কথা ভেবে এখনই কোনও আনলক প্ল্যানিং করতে রাজি নন পাওলি দামও। লকডাউনে বাড়িতে বসেই সেরেছেন ওয়েব সিরিজ়ের প্রচার। লকডাউন উঠে গেলে কোনটা প্রথমেই করবেন ভাবছেন? ‘‘একটা মিনিয়েচার গার্ডেনিংয়ের শখ সম্প্রতি মাথায় চেপে বসেছে। সব কিছু স্বাভাবিক হলে সেটা করব ভাবছি,’’ বললেন পাওলি। লকডাউনে বিরিয়ানি মিস করেছেন গায়িকা ইমন চক্রবর্তী। ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি চুটিয়ে অনলাইন কনসার্ট করেছেন গায়িকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে সাধ্যমতো সাহায্যও করেছেন দুঃস্থদের। তবে আগামী কয়েক মাস তো বটেই, এমনকি পুজোতেও ফিজ়িক্যাল কনসার্টের সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি। ‘‘টাকা দিয়ে শো অ্যারেঞ্জ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে সময় লাগবে। আমার বন্ধু নীলাঞ্জনের সঙ্গে মিলে একটা স্টুডিয়ো সেট-আপে কাজ শুরু করছি,’’ বললেন ইমন।

Advertisement

আরও পড়ুন: আমার কাছে ‘পথের পাঁচালী’ সাদাকালো ছবি হিসেবেই ম্যাজিকাল থাকবে

প্রিয়ঙ্কা সরকারের বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবা, ছেলে সহজও ছোট। তাই এখনই বাইরে বেরোনোর ঝুঁকি নেবেন না বলেই জানালেন নায়িকা। তিনি যে নতুন রিয়্যালিটি গেম শো হোস্ট করছিলেন, লকডাউনে তা স্থগিত, যশের সঙ্গে করা ছবিটির আউডডোরও বাকি। টলিউডে আনলক প্রক্রিয়া শুরু হলেও তিনি কবে শুটিং ফ্লোরে ফিরবেন, তা ঠিক করেননি এখনও। মিস করছেন হলে গিয়ে সিনেমা দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও। তবে জনজীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে প্রথমেই পরিবারের সকলকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে ফুল বডি চেক-আপ করাতে চান প্রিয়ঙ্কা। ‘‘লকডাউনের আগেই বাবার শরীরটা খারাপ হয়েছিল। মা, বাবা, বোন, সহজ সকলকে নিয়েই রুটিন চেকআপ করিয়ে নেব ভাবছি,’’ বললেন প্রিয়ঙ্কা। মায়ের জন্য চিন্তা ধরা দিল ঋতাভরী চক্রবর্তীর গলাতেও। ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে, তাতে মা খুবই চিন্তিত। আমাদের দুই প্রতিবেশী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। দিনকয়েক আগে পর্যন্তও মায়ের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল না। দিদিও মুম্বইয়ে, আসতে পারছে না। তাই কাজে ফেরার প্রশ্ন এখনই নেই,’’ বললেন ঋতাভরী। লকডাউনে ফের দেখানো হচ্ছে তাঁর অভিনীত ‘ওগো বধূ সুন্দরী’। তাঁর সদ্য কেনা মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটটি এই ক’মাস বেজায় মিস করছেন নায়িকা। ‘‘শুনলাম, ফ্ল্যাটে ইঁদুর হয়েছে! সব নর্ম্যাল হলে প্রথম কাজ হবে মুম্বই গিয়ে ফ্ল্যাটের ইঁদুর তাড়ানো,’’ বললেন ঋতাভরী।

টলি-তারকাদের আনলক প্ল্যানে এখনও করোনা-ছায়া। তাই কাজ হোক বা শখপূরণ, কাগজে-কলমে ‘আনলক’ হলেও, বাড়ির বাইরে বেরোনোর আগে দু’বার ভাবছেন সকলেই।

আরও পড়ুন: গানে-কবিতায় লোপামুদ্রা-শ্রীজাত-সুজয়প্রসাদের 'ঋতু' স্মরণ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement