29th Kolkata International Film Festival

চলচ্চিত্র উৎসবের মাঝে নন্দনে ‘হনুমানের উৎপাত’! দর্শককে দাঁত খিঁচিয়ে, ভয় দেখিয়ে হইহই কাণ্ড

বৃহস্পতিবার চলচ্চিত্র উৎসবে হনুমানের কাণ্ডকারখানা দেখতে সিনেপ্রেমীদের ভিড় জমল। ছদ্মবেশের আড়ালে ছিলেন এক জন অভিনেতা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৫১
Share:

বৃহস্পতিবার চলচ্চিত্র উৎসবে হনুমানের ছদ্মবেশে হাজির এক অভিনেতা। —নিজস্ব চিত্র।

বৃহস্পতিবার বিকালে বৃষ্টি মাথায় চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেপ্রেমীরা ব্যস্ত। হাতের বুলেটিন ঘেঁটে পছন্দ মতো সিনেমার সন্ধানে ব্যস্ত সকলে। ইতিমধ্যে সকলকে চমকে দিয়ে নন্দন চত্বরে হাজির এক হনুমান! প্রেস কর্নারের বাইরে সটান সে পাঁচিলে উঠে বসল। সে রীতিমতো দাঁত খিঁচিয়ে উপস্থিত দর্শকদের ভয় দেখাতে ব্যস্ত। কখনও সিঁড়ি বেয়ে উঠে পড়ছে, কখনও আবার ক্যামেরার জন্য হেসে পোজ় দিচ্ছে। তবে চমক ভাঙল কিছু ক্ষণ পর। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, হনুমানের ছদ্মবেশে আসলে উৎসবে হাজির হয়েছেন এক অভিনেতা!

Advertisement

(বাঁ দিক থেকে) পরিচালক হায়দর খান, জ্যাকি ওয়াদওয়ানি ও প্রযোজক অনিল চৌধরি। —নিজস্ব চিত্র।

উৎসবে দেখানো হচ্ছে হায়দর খান পরিচালিত তথ্যচিত্র ‘লঙ্গুর’। তথ্যচিত্রটি তৈরি হয়েছে গুজরাটের এক ভবঘুরের জীবনের আধারে। তাঁর নাম জ্যাকি ওয়াদওয়ানি। কিন্তু তিনি বাঁদরের ছদ্মবেশে কেন? খোলসা করলেন পরিচালক। হায়দর বললেন, ‘‘ছোট থেকেই জ্যাকির বাঁদর পছন্দ। এক সময় অর্থ উপার্জনের জন্য ও এই বাঁদরের বেশেই রাস্তায় খেলা দেখাতে শুরু করে।’’ কিন্তু জ্যাকিকে পরিচালক কী ভাবে খুঁজে পেলেন, তা-ও বেশ আকর্ষণীয়। হায়দর বললেন, ‘‘মুম্বইয়ে এক দিন রাতে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দেখি, রাস্তায় একটা হনুমানকে এক দল কুকুর তারা করেছে। সেটা ছিল জ্যাকি। ওকে আমার বাড়িতে এক রাতের জন্য নিয়ে যাই। তার পরেই মনে হয় ওর জীবনের উপর একটা তথ্যচিত্র তৈরি করা উচিত।’’

৩০ মিনিটের এই গুজরাটি তথ্যচিত্রে মূলত জ্যাকি কী ভাবে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং তাঁর পরিবারের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। হায়দর বললেন, ‘‘জ্যাকির জীবনের একটি ইচ্ছে ছিল যাতে ওর পরিবার ওকে গ্রহণ করে। কলকাতায় ছবিটা নির্বাচিত হয়েছে এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে এখন জ্যাকির প্রতি ওর পরিবারের সম্মান বেড়ে গিয়েছে।’’ আর যাকে নিয়ে এত কথা সেই জ্যাকির কী মত? গুজরাটের ভাওনগরের বাসিন্দাটি বললেন, ‘‘মুম্বইয়ে কাজের সন্ধানে এসে প্রতারিত হই। শেষে পরিচালকের নজরে এসে এখন মানুষ আমাকে চেনেন। জীবনে অনেক লাঞ্ছনা সহ্য করেছি। অবশেষে সম্মানিত হয়ে ভাল লাগছে।’’ জ্যাকি এখনও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গায়ে রং করে এবং রূপটানের সাহায্যে বাঁদরের ছদ্মবেশে খেলা দেখিয়েই উপার্জন করেন।

Advertisement

২০২০ সালে মুক্তি পায় প্রতীক বৎস পরিচালিত ছবি ‘‘ইব আলে ও!’’ ছবিতে দিল্লির এক ভবঘুরের অন্য রকম সরকারি চাকরির কথা উঠে আসে। তাঁর কাজ ছিল সরকারি বাড়ি থেকে বাঁদর তাড়ানো। যদিও হায়দর জানালেন, তাঁর ছবির সঙ্গে ওই ছবিটির কোনও সাদৃশ্য নেই। চলতি বছরেই এই তথ্যচিত্রের শুটিং করেছেন পরিচালক। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবেই এই প্রথম তথ্যচিত্রটি প্রতিযোগিতা বিভাগে দেখানো হচ্ছে বলে তিনি আনন্দিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement