নুসরতকে তোপ দাগলেন তসলিমা।
নুসরত জাহানকে নিয়ে দ্বিতীয় বার পোস্ট করলেন তসলিমা নাসরিন। প্রথম এবং দ্বিতীয় পোস্টে সম্পূর্ণ ভিন্ন মত প্রকাশ করলেন তিনি। প্রথম পোস্টে তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও দ্বিতীয় পোস্টে তাঁকে তোপ দাগলেন বাংলাদেশের লেখিকা।
বুধবার রাতে নুসরতের সন্তানের বাবার পরিচয় প্রকাশ্যে এসেছে। নুসরতের ছেলের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম নথিভুক্ত হয়েছে কলকাতা পুরসভার সাইটে। সেখানেই পাওয়া গিয়েছে ঈশানের জন্ম শংসাপত্র। এত দিন ধরে তাঁর সন্তানের বাবার পরিচয় নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি করেছিলেন নুসরত, তা কেটে গেল এক নিমেষে। নিজের মুখে স্বীকার না করলেও পুরসভার সাইটের মাধ্যমে সবই প্রকাশ্যে আনলেন নুসরত। বাবার নামের পাশে লেখা দেবাশিস দাশগুপ্ত ওরফে যশ।
অনেকেই ভেবেছিলেন, নুসরত নিজেকে ‘সিঙ্গল মাদার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন। জানা গিয়েছিল, পুরসভায় গিয়ে সেই বিষয়ে খোঁজ খবরও নিয়ে এসেছিলেন তিনি। নুসরতের সন্তান জন্মের পর থেকে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন কলকাতার একাধিক ‘সিঙ্গল মাদার’। কঠিন পথে একা লড়াই করছেন বলে বহু মানুষ আগে থেকেই সমর্থন জানিয়েছিলেন তাঁকে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম নাম তসলিমা।আজ নুসরতকে এই রূপে দেখবেন, এ কথা ভাবেননি তসলিমা। তাই তাঁকে পুরুষতন্ত্রের ছক ভাঙা মহিলাদের দলে ফেলতে চাইলেন না। তসলিমা লিখলেন, ‘প্রচুর লেখালেখি, প্রচুর স্বাগত জানানো, শুভেচ্ছা জানানো, স্যালুট জানানো— এসব বরং এক্সট্রাঅরডিনারি সাহসী এবং পুরুষতন্ত্রের ছক ভাঙ্গা মেয়েদের জন্য তোলা থাকুক। ট্র্যাডিশনাল মেয়েদের পেছনে সময় নষ্ট করা, তাদের বাহবা দেওয়া আপাতত স্থগিত থাকুক।’
নুসরতকে নিয়ে ঠিক দেড় মাস আগে সম্পূর্ণ ভিন্ন মতের পোস্ট করেছিলেন তসলিমা। লেখিকার মতে, শুধু মাত্র শুক্রাণুর জন্যই সন্তান ধারণের সময় পুরুষের উপর নির্ভরশীল নারী। এই জায়গা থেকে তিনি আগের সেই পোস্টে লিখেছিলেন, ‘এমনও দিন আসবে যে দিন মেয়েদের স্টেম সেল থেকে স্পার্ম তৈরি হবে। অথবা স্পার্ম তৈরি হবে মেয়েদের বোন ম্যারো থেকে।’ আরও লিখেছিলেন, ‘নুসরত প্রতিষ্ঠিত মেয়ে। কারওর দাসিবাঁদি নয়। নিজের ইচ্ছের মূল্য দিতে জানে। সে তার সন্তানকে ভাল মানুষ করবে, এ আমার বিশ্বাস।’
তার পর বুধবার রাতের ঘটনা। তসলিমার চোখে বিশেষ জায়গায় আসীন থাকা নুসরত যেন সাধারণের দলে চলে গেলেন। তসলিমা লিখলেন, ‘কলকাতার অভিনেত্রী নুসরাতকে সে যতটা না বিল্পবী তার চেয়ে বেশি ভেবে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম নুসরাত তার সন্তানকে শুধু নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দেবে। কার স্পার্ম সে নিয়েছে গর্ভবতী হওয়ার জন্য, সেটা মোটেও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হবে না। কিন্তু না, নুসরাত আসলে অন্য যে কোনও রমণীর মতোই রমণী।’ তসলিমার দাবি, সন্তানের বাবার নাম যদি নিতেই হত, তা হলে এত দিনের লুকোচুরির কোনও মানে নেই। তসলিমা জানালেন, তিনি যদি জানতে পারেন যে নুসরত গোপনে যশকে বিয়ে করেছেন, তা হলেও অবাক হবেন না তিনি। তাই তাঁর প্রশ্ন, ‘যে কোনও ট্রাডিশানাল মেয়ের চেয়ে নুসরাতের তফাৎটা কোথায়?’