সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন। —ফাইল চিত্র।
সিনেমায় ‘কারার ওই লৌহকপাট’ গানের সুর পাল্টানো নিয়ে ‘হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বাঙালি’-র একযোগে প্রতিবাদ দেখে ভাল লাগছে সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিনের। তবে তাঁর প্রশ্ন, কাজী নজরুল ইসলামের এই ‘ভাঙার গান’-এর সুর বিকৃত করার দায় সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানের, না কি সংশ্লিষ্ট ছবিটিতে যাঁরা তাঁকে দিয়ে কাজটি করিয়েছেন, সেই পরিচালক-প্রযোজকের?
‘পিপ্পা’ নামে একটি ছবিতে রহমানের নতুন সুরে ‘কারার ওই লৌহকপাট’ শুনে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে দুই বাংলাতেই। তসলিমা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি ভাবছি দোষটা কি এ আর রহমানের? নাকি দোষটা পিপ্পা সিনেমার পরিচালক বা প্রযোজকের যাঁরা এ আর রহমানকে কারার ওই লৌহ কপাট গানের লিরিক্স দিয়ে নিজের মনের মাধুরি মিশিয়ে সুর দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন? তাহলে দোষটা তাঁদের দেওয়াই ভালো।’ (বানান ও ভাষা অপরিবর্তিত)
বস্তুত, তসলিমার মতে, ‘তামিল ছেলে’ এ আর রহমান হয়তো জানেনই না, কাজী নজরুল ইসলাম কে ছিলেন। তিনি লিখছেন ‘গানটির অর্থ হয়তো তাঁকে ব্রিফ করা হয়েছে, সেই অর্থ অনুযায়ী এ আর রহমানের যে সুর পছন্দ হয়েছে সেই সুরই তিনি ফাইনাল করেছেন। আমার মনে হয় না, গানটির আসল সুর শুনে সেটি কিচ্ছু হয়নি বলে তিনি নতুন সুর দিয়েছেন। যদি দিয়ে থাকেন, তাহলে সেটা বন্ধ করার দায়িত্ব পরিচালক এবং প্রযোজকের ছিল। দোষ কারও একার নয়, টীমের দোষ।’
সঙ্গীতশিল্পী সাহানা বাজপেয়ীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ত্যাগরাজার গান নিয়ে এই সব হলে কর্নাটকি সঙ্গীতমহল ছেড়ে দিত?’’ নবীন সঙ্গীতশিল্পী সমদীপ্তা মুখোপাধ্যায় ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কারার ওই লৌহকপাট গানটির এ রকম পরিবেশন, বড্ড লজ্জার...।’ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের সরাসরি মন্তব্য, রিমেক করে নজরুলের দেশাত্মবোধক গানটিকে হত্যা করেছেন রহমান। এক্স হ্যান্ডলে (পূর্বতন টুইটার) তিনি লেখেন, ‘১৯২১ সালে নজরুলের লেখা গানটিকে নিষিদ্ধ করেছিল ব্রিটিশ সরকার। নজরুলকে জেলে বন্দি করা হয়েছিল। রিমেক না করে রহমান বরং যা করে থাকেন, তাতেই মন দিন!’