গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
নামেই সিরিজ বা সিজন। আসলে টুকরো কথায়, গানে, গল্পে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জন স্মরণ। যা মহালয়ার ভোরে করে থাকে বাঙালি। ‘হইচই’ ওয়েব প্ল্যাটফর্মে তারই প্রথম পর্দা প্রতিফলন, ‘তারাদের শেষ তর্পণ’-এ। যার আয়োজনে এই প্রথম গাঁটছড়া বাঁধছে বাংলার দুই প্রথম সারির প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ এবং উইন্ডোজ প্রোডাকশন।
উইন্ডোজের প্রযোজক-পরিচালক জুটির অন্যতম শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানালেন,অভিনয়, খেলা, গান, পরিচালনার দুনিয়ার বহু তারকা ঝরে গিয়েছেন সময়ে-অসময়ে। তাঁদের প্রতিভা, তাঁদের কাজের টানে সাধারণ মানুষ কখন যে তাঁদের আত্মার আত্মীয় হয়েছেন, টেরই পাননি! সেই অনুভূতি থেকেই অনুরাগীদের দায় থেকে যায়, তাঁদের শেষ সম্মান জানানোর। যা হয়তো অবস্থার প্রেক্ষিতে সব সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না। সেই ভাবনা থেকেই এই সিরিজ বা সিজনের জন্ম।
কী ভাবে এই তর্পণের আয়োজন হচ্ছে? শিবপ্রসাদের কথায়: ‘‘সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্যের ‘তারাদের শেষ চিঠি’ বইয়ের অনুপ্রেরণায় এই কাজ। উনি সঞ্চালনার দায়িত্বে রয়েছেন। সুশান্ত সিংহ রাজপুত, পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়, চুণী গোস্বামী, ঋতুপর্ণ ঘোষ, তাপস পাল, সুপ্রিয়া দেবী, মহুয়া লাহিড়ী-সহ ১২ জন তারকাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’’ যাঁদের অজানা স্মৃতি বলবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, মিমি চক্রবর্তী, শতাব্দী রায়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, সুব্রত ভট্টাচার্য, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত আচার্যের মতো ব্যক্তিত্ব। থাকবে গান ও গল্প।
এক এক পর্বে এক এক জনকে স্মরণ করা হবে। সিরিজ পরিচালনার দায়িত্বে আছেন অরিত্র মুখোপাধ্যায়। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর, মহালয়ার সন্ধ্যায় দেখানো হবে ‘তারাদের শেষ তর্পণ’। কাকে দিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুলবেন? অরিত্রের কথায়, এটা এখনও ঠিক হয়নি। এডিটিংয়ের পরে বোঝা যাবে কার জীবন প্রথমে থাকবে। শুটিং জোরকদমে চলছে? ‘‘প্রায় শেষের পথে’’, জানালেন পরিচালক। কীভাবে শুটিং করছেন? ‘‘তারকাদের বাড়ি গিয়ে, সমস্ত সতর্কতা মেনে শুটিং করছি। অনেকে মোবাইলে রেকর্ডিং করেও পাঠাচ্ছেন।’’
এই ধরনের সিরিজে আবহের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ‘‘সেই জন্যই এই দায়িত্বে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, যাতে সেরা জিনিস উপহার পায় দর্শক’’, জানালেন অরিত্র। একমত শিবপ্রসাদও। ইন্দ্রদীপ বলছেন, ‘‘প্রত্যেকটি গল্প অনুযায়ী আলাদা আলাদা আবহ হবে। সেই অনুযায়ী নোট, বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার শুনতে পাওয়া যাবে। প্রাচ্য, পাশ্চাত্য দুই-ই থাকবে হয়তো একসঙ্গে বা আলাদা ভাবে।’’
আরও পড়ুন- করোনায় প্রিয়জনকে হারালেন অভিনেতা দিলীপ কুমার,পরিবারে শোকের ছায়া
এক একটি গল্পের দৈর্ঘ্য১৫ মিনিট। তারকার জীবনীই হবে তাঁর গল্পের দৈর্ঘ্যের মাপকাঠি। সিরিজ হলে একটিতে আট বা ১২ জন তারকার গল্প দেখতে এবং জানতে পারবেন দর্শক, সংযোজন অরিত্রের।
যাঁদের স্মৃতি তর্পণ হবে তাঁরা দেশ-কালের বেড়া ডিঙিয়ে নিজ প্রতিভায় সর্বজনীন। তাই শিবপ্রসাদের দাবি, বিশ্ব বাঙালি তৃপ্ত হবে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মহালয়া তর্পণের নবতম রূপ দেখে।