শ্যুটিং সেটেই হোক কিংবা সেটের বাইরে। তারকাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা থেকে শুরু করে হাতাহাতির খবর প্রায়ই শোনা যায়।
কিন্তু জানেন কি একবার সেটেই এক পরিচালক চড় মেরেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে! অভিনয় সেখানোর জন্যই নাকি পরিচালক তাঁকে চড় মেরেছিলেন!
জনপ্রিয় ওই অভিনেত্রী ছিলেন তনুজা এবং ওই পরিচালক ছিলেন কিদর শর্মা।
অভিনয় জগতের নামজাদা পরিবারের মেয়ে তনুজা। তাঁর মা শোভনাও ছিলেন প্রথম সারির অভিনেত্রী।
তনুজার বোন নূতনও তখন বলিউডে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন। তনুজা সে সময় একটি ফিল্ম করছিলেন।
১৯৬১ সালে মুক্তি পায় ‘হামারি ইয়াদ আয়েগি’ ছবিটি। এই ছবির পরিচালক ছিলেন কিদর শর্মা।
তিনি মধুবালা, মালা সিন্হার মতো প্রথম সারির অভিনেত্রীদের কেরিয়ার গড়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
সেই পরিচালকের ছবিতেই এ বার তনুজার কাজ করার কথা ছিল। এই ছবিতে তনুজার বিপরীতে ছিলেন পরিচালকেরই ছেলে অশোক শর্মা।
আরও একটি কারণে তিনি পরিচিত ছিলেন কিদর। কাজের জায়গায় অত্যন্ত কঠোর ছিলেন তিনি। সেটে বসে আড্ডা মারা তাঁর একদমই পছন্দ ছিল না।
তনুজা রোজ সেটে পৌঁছে অভিনয়ের থেকে বেশি ব্যস্ত থাকতেন হাসিঠাট্টা করতে। বিষয়টি নজর এড়িয়ে যায়নি পরিচালকের।
এর পর একদিন তনুজার একটি কান্নার দৃশ্যের শ্যুটিং ছিল। কী ভাবে কাঁদতে হবে, পরিচালক তাঁকে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু অনেক বার চেষ্টার পরও তনুজা নাকি কিছুতেই কাঁদতে পারছিলেন না।
যতবারই পরিচালক ‘অ্যাকশন’ বলছিলেন, তিনি কাঁদার বদলে হেসে গড়িয়ে পড়ছিলেন। পরিচালক তাঁর কাছে গেলে তনুজা এমন একটা কথা বলেন যা শুনে সকলের সামনেই তাঁর গালে চড় মেরে দেন কিদর।
তনুজাকে যখন শেষবারের মতো কান্নার দৃশ্যটি বুঝিয়ে দিতে যান কিদর, তিনি নাকি পরিচালকের মুখের উপর জানিয়ে দেন ওই দিন তাঁর কাঁদার মন নেই।
পরিচালকের হাতে চড় খেয়ে সেই মুহূর্তেই ছলছল চোখে বাড়ি চলে যান তনুজা। বাড়ি পৌঁছে মাকে পুরো বিষয়টি জানান।
তনুজা ভেবেছিলেন তাঁর মা তখনই তাঁর সঙ্গে সেটে ছুটে গিয়ে ওই পরিচালককে উচিত শিক্ষা দেবেন। হয়েছিলও প্রায় তাই।
তখনই মেয়ের সঙ্গে সেটে পৌঁছন মা শোভনা। কিন্তু গিয়ে ওই পরিচালকের সামনে ফের তনুজাকে চড় মারেন তিনি। হতভম্ব তনুজা কেঁদে ফেলেন। পরিচালককে সেই অবস্থাতেই কান্নার দৃশ্যটি শ্যুট করে নিতে বলেন মা শোভনা।
নিজের ভুল ওই দিনই বুঝে গিয়েছিলেন তনুজা। তারপর থেকে সেটে অত্যন্ত নিয়মানুবর্তি হয়ে ওঠেন তিনি। সে দিনের ওই ঘটনা না ঘটলে হয়তো এত দীর্ঘ সফল কেরিয়ার হত না তনুজার।