ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বুধবার থেকে টলিপাড়ায় একাধিক নারী নির্যাতনের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। এই অবস্থায় চলচ্চিত্র জগতে নারীসুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এক দিকে আরজি কর-কাণ্ডে ন্যায়বিচারের দাবিতে মহিলারা প্রতিবাদ করছেন। অন্য দিকে অভিনয়ে যুক্ত মহিলা শিল্পীদের হেনস্থা নিয়ে সমাজমাধ্যমে সবর হয়েছেন অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে ফেডারেশন (ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া) এবং আর্টিস্ট ফোরাম কতটা চিন্তিত?
ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও মহিলাকে হেনস্থার ঘটনায় ফেডারেশন কী কী পদক্ষেপ করতে পারে, আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে প্রশ্ন রাখা হয় ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের কাছে। তিনি বললেন, ‘‘ইন্ডাস্ট্রিতে এ রকম নানা কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ এগিয়ে এসে অভিযোগ জানাননি।’’ তবে অভিযোগ না জানালেও, ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও নারীনিগ্রহকে ফেডারেশন যে সমর্থন করে না, সে কথাও স্পষ্ট করলেন স্বরূপ।
কয়েক বছর আগে ফেডারেশনের তরফে দৈনিক শুটিংয়ের সময়সীমা ১৪ ঘণ্টায় বেঁধে দেওয়া হয়। স্বরূপের কথায়, ‘‘ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই জানেন এর নেপথ্যে অনেকগুলো কারণ ছিল। শুটিংয়ের পর গভীর রাতে মহিলা কলাকুশলীদের বাড়ি ফিরতে অসুবিধা হত। পাশাপাশি আরও নানা ধরনের অভিযোগ উঠত।’’
স্বরূপের মতে, সাম্প্রতিক আরজি কর-কাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মহিলা শিল্পীদের মনের জোর বাড়িয়েছে। তাই অনেকেই এখন সাহস করে এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করছেন। তিনি জানালেন, যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার মোকাবিলায় ফেডারেশন প্রস্তুত। স্বরূপ বলেন, ‘‘বাংলা চলচ্চিত্র জগতে মহিলাদের উপর কোনও রকমের অত্যাচার ফেডারেশন সহ্য করবে না। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি ফেডারেশনের কাছে এই বিষয়ে কেউ যদি কোনও অভিযোগ করেন, তা হলে আমি শেষ পর্যন্ত যাব।’’ স্বরূপ জানান, কেউ অভিযোগ করতে চাইলে ফেডারেশন তাঁর পরিচয় গোপন রাখবে। মহিলা শিল্পীদের জন্য তাঁর পরামর্শ, ‘‘সাড়ে আট হাজার কলাকুশলীর হয়ে বলছি, ভয় পাবেন না। এগিয়ে আসুন, অভিযোগ জানালে আপনার লড়াই আমরা লড়ব।’’
অতীতে টলিপাড়ায় একাধিক বার হেনস্থার অভিযোগে মহিলা শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছে আর্টিস্ট ফোরাম। গত বছর অরিন্দম ভট্টাচার্য পরিচালিত ‘শিবপুর’ ছবিটি মুক্তির আগে ছবির অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, ছবির প্রযোজকের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। তখন ইম্পা (ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স প্রাইভেট লিমিটেড) ছাড়াও আর্টিস্ট ফোরাম অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিল। সংগঠনের তরফে দিগন্ত বাগচী বললেন, ‘‘শুটিং ফ্লোরে শিল্পীর সঙ্গে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এবং অভিযোগ করা হলে অবশ্যই আমরা তাঁর পাশে থাকব।’’ তবে এ ক্ষেত্রে আর্টিস্ট ফোরামের সীমাবদ্ধতা যে শুধুই শুটিং ফ্লোর পর্যন্ত, সে কথাও উল্লেখ করলেন দিগন্ত। তাঁর যুক্তি, ‘‘কাজের বাইরে ব্যক্তিগত পরিসরে কোনও শিল্পীর সমস্যা হলে, সে ক্ষেত্রে ফোরাম পদক্ষেপ করতে পারে না। তখন তাঁকে আইনের দ্বারস্থ হতে হবে।’’