সুশান্তের বাবা (বাম দিকে)। সুশান্ত-অঙ্কিতা (ডান দিকে)। ছবি: সোশ্যাল মিডিায়া থেকে নেওয়া।
“পরপর চারটে মেয়ে। আমাদের তখন একটাই চাওয়া, এবার কোলে ছেলে আসুক। সেই প্রার্থনা জানাতে টানা তিন বছর একটি মন্দিরও বাদ দিইনি। মানতের পর মানত ঈশ্বরের কাছে, এবার ছেলের মুখ দেখতে চাই। সুশান্ত তিন বছরের মানতের ফসল। এভাবে হারিয়ে ফেললাম ভগবানের দান!’’ বৃহস্পতিবার শ্রাদ্ধশান্তি মিটতেই প্রথম মুখ খুললেন সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বাবা কেকে সিং।
ছেলের কথা বলতে গিয়ে বৃদ্ধ, অসুস্থ বাবা অঝোরে কাঁদছেন। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার সাহস, ভাষা হারিয়ে ফেলেছে পরিবার।
নিজেকে সামলাতে সামলাতেই আফশোস কেকে সিংহের, ‘‘একটাই ছেলে ছিল। ছোট থেকে প্রচণ্ড মেধাবী। যে বিষয়ে হাত দিয়েছে, সেরা হয়েছে। ওর উন্নতির কথা ভেবেই পটনায় না রেখে বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়েছিলাম। ছেলে যাতে সেরা হয়ে ফেরে। সেটাই কি কাল হল?’’
সদ্য ছেলে হারানো বৃদ্ধ বাবার এই প্রশ্নের উত্তর কারোর কাছে নেই। তবে এটা ঠিক, হোস্টেলে থাকার সময় বাড়ি, পরিবার এবং বিশেষ করে মাকে ভীষণ মিস করতেন প্রয়াত অভিনেতা। রোজ মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হলেও, সেই অভাব কতটা পূরণ হত? সম্ভবত পূরণ হত না বলেই মায়ের আচমকা মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে-যন্ত্রণায় বিবশ ‘মাহি’ কাঁদতেও পারেননি!
আরও পড়ুন: সুশান্তের শেষ ছবি ‘দিল বেচারা’ জুলাইয়ে অনলাইনে রিলিজ
বৃহস্পতিবার থেকেই সোশ্যালে ঘুরছে, সুশান্তের মালায় সাজানো ফটোর পাশে চুপ করে বসে থাকা হেরে যাওয়া অশীতিপর বাবার ছবি।
আরও পড়ুন: শ্রাবন্তীর নামে ভুয়ো ফ্যান পেজ, চাওয়া হচ্ছে টাকা!
ছেলের কথা বলতে গিয়ে বাবার আরও স্বীকারোক্তি, ‘‘খুব প্রাণবন্ত ছেলে ছিল। সারাক্ষণ হাসত। মনের মধ্যে এত দুঃখ জমিয়ে রেখেছিল, টের পেতে দেয়নি কাউকে! এমন ছেলের চলে যাওয়া কী করে মানব?’’
সেই সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন, সুশান্ত চলে যাওয়ার পর একমাত্র অঙ্কিতা লোখান্ডে মুম্বই এবং পটনার বাড়িতে এসেছিলেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে। অভিমান, ‘‘বান্ধবী হিসেবে এত জনের নাম শুনছি। কই, আর তো কেউ এল না!’’
কেকে সিং জানতেন, ছ‘বছর সম্পর্ক ছিল সুশান্ত-অঙ্কিতার। অঙ্কিতাকে বিয়ে করবেন বলেও সুশান্ত জানিয়েছিলেন বাবাকে।
এর পরেও ভেঙে গেল এত গভীর সম্পর্ক? ‘পিকে’র ক্যামিও স্টারের বাবার আক্ষেপ, ‘‘যেটা থাকার নয়, সেটা কিছুতেই থাকে না। যেমন থাকল না একমাত্র ছেলে সুশান্ত!’’