সুশান্ত সিংহ রাজপুতের আত্মহত্যার পরে তাঁর কাছের মানুষের পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেকেই মুখ খুলেছেন, প্রতিনিয়ত খুলছেন। গত রবিবার দুপুরে বান্দ্রার ফ্ল্যাটে অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছিল, শনিবার রাতে বন্ধু মহেশ শেট্টিকে ফোন করেছিলেন সুশান্ত, যদিও দুই বন্ধুর কথা বলা হয়ে ওঠেনি। আক্ষেপ, যন্ত্রণা, পুরনো দিনের কথা নিয়ে বন্ধুর উদ্দেশে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন মহেশ। লিখেছেন, ‘‘প্রথম আলাপেই অদ্ভুত নাড়ির টান অনুভব করেছিলাম। এক মায়ের গর্ভজাত না হলেও আমাদের বন্ধুত্ব ছিল দুই ভাইয়ের মতোই।’’ সুশান্তের হিট ধারাবাহিক ‘পবিত্র রিশতা’র সহ-শিল্পী ছিলেন মহেশ। কেরিয়ারের শুরুর দিকে ফিল্মসিটিতে দুই বন্ধু পায়চারি করতে করতে নানা বিষয়ে গল্প করতেন। দীর্ঘ তেরো বছরের বন্ধুত্বে হঠাৎ করেই দাঁড়ি পড়ল, আক্ষেপ মহেশের। শুক্রবার ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ সুশান্তের অ্যাকাউন্টে ‘রিমেমবারিং’ শব্দটি জুড়েছে। যার ফলে এই অ্যাকাউন্টে অন্য কেউ লগ ইন করতে পারবে না।
বড় প্রযোজনা সংস্থার চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন কি সুশান্ত? শেখর কপূরের টুইট, কঙ্গনা রানাউতের ভিডিয়ো... ইঙ্গিতে বলা কথার ভিড়েই উঠে আসছে অপ্রকাশিত তথ্য। পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী দাবি করেছেন, ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘হেট স্টোরি’ ছবিটির জন্য সুশান্তকে চেয়েছিলেন তিনি। তবে বালাজি টেলিফিল্মস সুশান্তকে ছবিটি করার অনুমতি দেয়নি। পরের বছরেই অবশ্য ‘কাই পো চে’ দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন সুশান্ত।
এ দিকে পেশাগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে সুশান্তের মানসিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে মুম্বই পুলিশ। সুইসাইড নোট পাওয়া না গেলেও তাঁর বাড়ি থেকে পাঁচটি ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে, যা তদন্তে সাহায্য করবে বলেই বিশ্বাস পুলিশের। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুশান্তের মনোরোগ চিকিৎসক কার্সি চাভরা জানিয়েছেন, প্রথম প্রেমিকা অঙ্কিতার সঙ্গে বিচ্ছেদ সুশান্তের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। কারণ তার পরে কোনও প্রেমেই অঙ্কিতার মতো বন্ডিং অভিনেতার তৈরি হয়নি। রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে নাকি প্রথম থেকেই ঝামেলা ছিল সুশান্তের। ছোট ছোট বিষয়ে ঝগড়া করতেন রিয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় দু’জনের ছবি পোস্ট করা নিয়ে রিয়ার নাকি প্রবল আপত্তি ছিল।
জানা গিয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০২০-র মধ্যে তিনটি কোম্পানি খুলেছিলেন সুশান্ত। এর মধ্যে একটিতে বোর্ড মেম্বার হিসেবে ছিলেন রিয়া এবং তাঁর ভাই শৌভিক। শোনা গিয়েছে, আগামী কয়েকটি ছবির চিত্রনাট্যও লিখছিলেন সুশান্ত। প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর পরে নাকি ভেঙে পড়েছিলেন অভিনেতা। দিশার সূত্রেই তাঁর বড় একটি প্রজেক্ট পাওয়ার কথা ছিল বলে জানা গিয়েছে।
এত তথ্যের ভিড়ে সত্যিটা কী, সেটাই এখন খুঁজছে পুলিশ।