জ়িনতকে বাগে আনতে কালঘাম ছুটছে বনকর্মীদের। —ফাইল ছবি।
গলায় রেডিয়ো কলারের ট্র্যাকার থাকায় গতিবিধি জানা যাচ্ছে। কিন্তু কোনও ভাবেই ওড়িশা থেকে আসা বাঘিনি জ়িনতকে বাগে আনতে পারছেন না বনকর্মীরা!
বছর সাতেক আগেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ঝাড়গ্রামে। ২০১৮ সালে একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার লালগড়ের জঙ্গলে ঢুকে পড়ায় গোটা জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। বাঘটিকে ধরতেও কালঘাম ছুটেছিল বন দফতরের। সেই বাঘও এসেছিল ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে। শেষমেশ ভিন্রাজ্যে মৃত্যু হয়েছিল বাঘটির। মেদিনীপুর বনবিভাগের চাঁদড়ায় শিকারিরা বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে, টাঙ্গির কোপে বাঘটিকে মেরে ফেলেছিল। জ়িনতের আগমনে সেই স্মৃতি টাটকা হয়ে উঠেছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে পাওয়া খবর, কটাচুয়ার জঙ্গল থেকে কাঁকড়াঝোড় ও ময়ূরঝর্ণার জঙ্গলে ঢুকেছে বাঘিনি। সেখানে বনকর্মীরা জ়িনতকে তন্নতন্ন করে খুঁজেও তার হদিস পায়নি অবশ্য।
এখন পর্যটনের ভরা মরসুম। যেখানে জ়িনত রয়েছে বলে খবর, তার আশপাশে কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে ৭টি হোমস্টে। ফলে, বাড়তি সতর্ক বন দফতরের কাছে চ্যালেঞ্জ। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলছেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে যদি একান্তই বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তা হলে রেঞ্জ অফিসার ও বিট অফিসারকে জানালে বন দফতরের গাড়ি ‘এসকর্ট’ করবে।’’ এলাকায় ২৪ ঘণ্টা বন দফতরের নজরদারি ও গাড়ি থাকছে। পড়শি রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বন দফতর সূত্রে খবর, বাঘিনির গতিবিধি জানতে আনা হয়েছে উচ্চ ক্ষমতার ড্রোন ক্যামেরা। রেডিয়ো কলারের সঙ্কেত জানতে অত্যাধুনিক সফ্টঅয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। বাঘিনি ধরার খাঁচা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রাণী অ্যাম্বুল্যান্স, বাঘিনির টোপের জন্য গৃহপালিত গবাদি পশুও আনা হয়েছে।
ওই এলাকার বেশির ভাগ স্থানীয় মানুষের মূল জীবিকা জঙ্গল-নির্ভর। বাঘিনি আসার খবর রটে যেতেই শিমূলপাল অঞ্চলে জঙ্গলের ডালপাতা, কুরকুট, বিভিন্ন গাছের কন্দ, ধুনো, হরিতকি, বহেড়া, বুনো আমলকি সংগ্রহের কাজ বন্ধ। বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘বাঘ সম্পর্কে অভিজ্ঞ আধিকারিকদের এলাকায় পাঠানো হয়েছে। নজরদারি চলছে। সুন্দরবন থেকেও বিশেষজ্ঞ দল আসছে।’’