ফাইল চিত্র।
এমসের মেডিক্যাল বোর্ড ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, খুন নয়, আত্মহত্যাই করেছেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। তবে ওই মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক সুধীর গুপ্তের কণ্ঠস্বরের একটি অডিয়ো টেপ ‘ফাঁস’ হতেই ফের তৈরি হল চাঞ্চল্য। ওই টেপে কিন্তু সুধীরবাবুকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘খুনই করা হয়েছে সুশান্তকে’’ যদিও অডিয়ো টেপের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার পত্রিকা। কিন্তু এর পরেই সুশান্তের পরিবারের তরফে এ বার নতুন ফরেন্সিক তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। গত কাল প্রয়াত অভিনেতার পরিবারের আইনজীবী বিকাশ সিংহও নতুন করে ফরেন্সিক তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য, সুশান্তের দেহ হাতে না-পেয়ে মুম্বইয়ের কুপার হাসপাতালে নিম্ন মানের ময়না-তদন্তের ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি একেবারেই সঙ্গত নয়।
যদিও এমসের রিপোর্টের ভিত্তিতে আজ নিজেদের মুখপত্র ‘সামনা’য় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে শিবসেনা। তাদের মুখপত্রে বলা হয়েছে, যে সমস্ত রাজনীতিবিদ এবং সংবাদমাধ্যম কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে মুম্বই পুলিশ ও তাদের তদন্ত প্রক্রিয়ার উপরে আঙুল তুলেছিল, তাদের অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া উচিত। সুশান্তের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মহারাষ্ট্রের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার উদ্দেশেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে মুখপত্রে। আরও বলা হয়েছে, এই ষড়যন্ত্রে যাঁরা লিপ্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা উচিত মহারাষ্ট্র সরকারের। এর পরেই বলা হয়, ‘এমসের রিপোর্ট কি প্রত্যাখ্যান করছেন অন্ধভক্তেরা?’ কঙ্গনা রানাউতকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে, কোথায় সেই অভিনেত্রী, যিনি সুশান্তের মৃত্যুতে হইচই জুড়ে দিয়েছিলেন? ভোটমুখী বিহারে সুশান্তের মৃত্যুকে নির্বাচনী হাতিয়ার করার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও তাঁর নেতৃত্বাধীন জোটকেও বিদ্রুপ করা হয়েছে সামনায়। এমসের রিপোর্ট নিয়ে সুশান্ত মামলার প্রথম তদন্তকারী সংস্থা মুম্বই পুলিশের প্রধান পরমবীর সিংহ আজ বলেছেন, ‘‘সত্যিটা কী, তা আমরা প্রথম থেকেই জানতাম।’’
গত ১৪ জুন সুশান্তের মৃত্যুর পরে অটোপ্সি রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে তদন্তে এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করেছিল মুম্বই পুলিশ। কিন্তু সুশান্তের পরিবার এবং নানা মহল থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি ওঠে। আজ পুলিশ প্রধান পরমবীর জানান, প্রথম থেকেই তদন্তে পেশাদারিত্ব দেখানো হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্টের ক্ষেত্রেও সেই পেশাদারিত্ব বজায় ছিল। সুপ্রিম কোর্ট যখন মুম্বই পুলিশকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয়, তা-ও করা হয়। সেই রিপোর্টে কোনও গাফিলতি কিংবা ত্রুটি পায়নি আদালত। এর পরেই তিনি জানান, সত্যি সামনে আসবেই। তবে এ ক্ষেত্রে খুব খারাপ ভাবেই বিষয়টি সকলের সামনে এল।
তবে এমসের রিপোর্টের ভিত্তিতে স্বস্তি মেলার কোনও অবকাশ নেই বলেও জানান মুম্বই পুলিশ প্রধান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা সততার সঙ্গেই কাজ করি। তাই তদন্ত নিয়ে কখনওই চাপে থাকতে হয় না।’’ এমসের রিপোর্ট সামনে আসার পরে গত কাল সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। অধীরকে সমর্থন জানিয়ে রিয়ার মুক্তির পক্ষে টুইট করেছেন অভিনেত্রী স্বরা ভাস্করও।