(বাঁ দিকে) সপরিবার সুদীপা চট্টোপাধ্যায়, সস্ত্রীক সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
রথের রশিতে টান মানেই দুর্গাপুজোর আাবাহন। প্রতি বছরের সেই রীতি মেনে এ বছরেও সুদীপা চট্টোপাধ্যায় আর ত্বরিতা চট্টোপাধ্যায়ের দেবী বন্দনার আয়োজন। সুদীপার বাড়িতে এ দিন জগন্নাথদেবের পুজোর পাশাপাশি কুমোরটুলিতে কাঠামোপুজো হয়। ত্বরিতার দেশের বাড়ির পুজোর এ বছর ৩৫০ বছর। সেই উপলক্ষে এ দিন অভিনেতা স্বামী সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তিনি উপস্থিত সেখানে। মৃৎশিল্পীর সঙ্গে ঠাকুরদালানে প্রতিমার কাঠামোয় প্রথম মাটি দেন অভিনেতা।
কুমোরটুলিতে পুজোর বায়না দেওয়ার আগে জগন্নাথদেবের পুজো। বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথদেবের সঙ্গে বলভদ্র ও সুভদ্রার পুজোও হয়। অভিনেত্রী-সঞ্চালিকার বাড়ির বিশেষ রীতি মেনে এ দিন জগন্নাথদেবকে ৫৬ ভোগের অন্যতম ‘কণিকা ভোগ’ বা বিশেষ ভাবে বানানো মিষ্টি পোলাও নিবেদন করা হয়। সুদীপা এর আগে জানিয়েছেন, জগন্নাথদেব পুরীর রথে আসীন হলেই বাড়ির বিগ্রহের কাছে অনুমতি নিয়ে তাঁরা কুমোরটুলির উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানেও কিছু বিশেষ নিয়ম মানেন চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যেরা। যা তাঁদের একান্ত নিজস্ব। যেমন, কাঠামোপুজোর আগে প্রথমে দেব বিশ্বকর্মার অনুমতি প্রার্থনা করা হয়। তার পর মন্ত্রোচ্চারণ করে আবাহন করা হয় মাকে। মায়ের কাঠামো পূজিত হয় মালা, ফুল দিয়ে। এর পরেই গঙ্গা নিমন্ত্রণ। এ সবের পালা মিটলে নিজের হাতে কাঠামোয় প্রথম মাটি দেন অগ্নিদেব। চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপ্রতিমা গড়েন শিল্পী পশুপতি রুদ্র পাল। তাঁর কর্মশালাতেই এ দিন কাঠামোপুজো হয়।
ত্বরিতার দেশের বাড়ির পুজোর কিছু ঝলক ক্যামেরাবন্দি করেছেন সৌরভ। এই প্রথম তিনি অভিনেত্রী স্ত্রীর বাড়ির পুজোর কাঠামোপুজোয় অংশ নিলেন। সৌরভের ভাগ করা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে ঠাকুরদালানে কাঠামোপুজোর আয়োজন। বাড়ির পাশে ছোট্ট পুকুর। তাকে ঘিরে সবুজের সমারোহ। কলাগাছ, আমগাছ, জামগাছ, কাঁঠাল গাছের ছায়া। সেই পুকুর থেকে জল নিয়ে মাটি মাখেন মৃৎশিল্পী। পুরোহিত পুজো সারার পর তাতে প্রথম মাটির প্রলেপ দেন শিল্পী। এ দিন সৌরভও নিজের হাতে প্রতিমার কাঠামোয় মাটি দিলেন। তাঁর পরনে পট্টবস্ত্র। নেপথ্যে তখন বেজে উঠেছে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’র স্তোত্রপাঠ।