(বাঁ দিকে) ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। ইন্দ্রাণী হালদার (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
ইন্দ্রাণী হালদার আর ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, দু’জনেই জগন্নাথদেবের ভক্ত। দু’জনেই অন্তর থেকে দেবতার আরাধনা করেন। শুধু তাঁদের পুজোর ধারা ভিন্ন। অভিনেত্রী আর নৃত্যশিল্প— দু’জনের বাড়িতেই দেবতার অধিষ্ঠান। নিত্যপুজোর পাশাপাশি বিশেষ দিনে থাকে বিশেষ আয়োজন। যেমন, প্রতি রথযাত্রায় ইন্দ্রাণীর বাড়িতে গত ৭-৮ বছর ধরে এলাহি আয়োজন। এ বছর কী করছেন তিনি?
জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল অভিনেত্রীর সঙ্গে। তাঁর বক্তব্য, “অনেকগুলো বছর টানা ধুমধাম করে পুজো করেছি। অনেককে আমন্ত্রণ জানাতাম। অনেক লোক পাত পেড়ে বসে খেয়েছেন। খুব আনন্দ হত।” এখন আর আগের মতো অত ঘটা করতে পারেন না। তার পরিবর্তে মাকে নিয়ে ঘরেই নিজের মতো করে পুজো সারেন। সকাল সকাল উঠে স্নান সেরে ভোগ রাঁধেন। অভিনেত্রী বললেন, “পোলাও রাঁধি। একটা পাঁচমিশালি তরকারি থাকে। সর্ষে, নারকেল বাটা দিয়ে রাঁধতে হয় সেই রান্না। একটা টক থাকে। আর থাকে মালপোয়া।” এ ছাড়া, খাজা, পাঁচ রকম ভাজা, ফল তো থাকেই। ইন্দ্রাণীর সঙ্গে তাঁর মা-ও ভোগ রান্নায় থাকেন। তার পর নতুন জামা, ফুলের মালায় দেবতাকে সাজিয়ে পুজো দেন। সারা দিন মা-মেয়ে দেবতাকে নিবেদন করা ভোগ খান। আর প্রত্যেক বছর রথ মিটলেই উল্টোরথের আগে পুরী চলে যান ইন্দ্রাণী। সেখানে মনের আনন্দে উদ্যাপনে শামিল হন।
ডোনাও ওড়িশি নৃত্যশিল্পী। তাঁর নাচের প্রতিষ্ঠান ‘দীক্ষামঞ্জরী’। নৃত্যশিল্পী কী ভাবে এই বিশেষ দিন উদ্যাপন করেন?
রথযাত্রায় ইন্দ্রাণী হালদারের বাড়ির জগন্নাথদেবের আরাধনা। ছবি; সংগৃহীত।
এই মুহূর্তে তিনি লন্ডনে, মেয়ে সানার কাছে। সেখান থেকে ফোনে আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “আমি তো রোজই জগন্নাথদেবের আরাধনা করি। ওড়িশি নাচ শুরুই হয় জগন্নাথ বন্দনা দিয়ে, ‘জগন্নাথস্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে’। আমাদের গীতগোবিন্দে শ্রীকৃষ্ণের বন্দনা। আমাদের নাচের প্রতিটি ছন্দ দেবতাকে স্মরণ করেই। তাই আমি মনে করি, এর থেকে ভাল আরাধনা আর হতেই পারে না।” তার পরেও পুজার্চনা হয়। গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের নিত্য পুরোহিত এই বিশেষ দিনে ফুল, ফল, মিষ্টি দিয়ে পুজো করেন। ডোনার নৃত্য প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরাও ফুল, মিষ্টি নিয়ে আসেন। বিগ্রহ সাজান। মিষ্টি নিবেদন করে সেই মিষ্টি প্রসাদ হিসাবে খান।
রথযাত্রার কথা বলতে বলতে স্মৃতিমেদুর ডোনা। সানা যখন ছোট ছিল তখন প্রতি রথযাত্রায় মেয়েকে রথ সাজিয়ে দিতে হত। গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ির গাড়ির চালকেরা পরিবারেরই সদস্যসমান। তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ের রথ সাজাতেন। সেই রথ সানা টেনে নিয়ে যেতেন দিদার বাড়ি পর্যন্ত। সেখানে উল্টোরথ পর্যন্ত দেবতা থাকতেন, উল্টোরথের দিন রথ ফিরত গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারে।