lata mangeshkar

Lata Mangeshkar Death: ‘রুমা কিশোরকে নিয়ে ফার্স্ট ক্লাসে উঠে পড়ত রোজ’, লিখলেন

‘রুমা কিশোরকে নিয়ে ফার্স্ট ক্লাসে উঠে পড়ত রোজ’

Advertisement

শ্রমণা চক্রবর্তী (গুহঠাকুরতা)

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৩১
Share:

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে লতাজি আর কিশোরকুমারের অনুষ্ঠানের সেই দৃশ্য আমি কখনও ভুলব না! দেখি, হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর বাকেট ভর্তি বরফের টুকরো নিয়ে ঢুকছেন। স্টেজে গেলাস উপচে পড়া বরফ রাখা হল। দেখি অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে লতাজি সেই বরফগলা জলেই চুমুক দিচ্ছেন।

Advertisement

এত ঠান্ডা জল খেয়েও কেউ গাইতে পারে! এবং তিনি নাকি লতা মঙ্গেশকর। পরে ভয়ে ভয়ে আমি বাপিকে (কিশোরকুমার) ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করতেই তাঁর কী হাসি! হাসতে হাসতে লতাজিকেই বলে উঠলেন, লতা দেখো, মামনি (আমার ডাকনাম) তুম কো কেয়া পুছনা চাহতি হ্যায়! আমার প্রশ্ন শুনে লতাজি বললেন, ‘আমি তো ওটাই খাই!’ সেদিন লতাজি যা বলেছিলেন, তা আমার কাছে এক বিরাট শিক্ষা হয়ে আছে! ওঁর মতে, ঠান্ডা খেলে গলা ধরে বা টক খেলে গলা ধরে এ সবই নাকি মিথ! লতাজি বলেছিলেন, আমি লঙ্কা বা ঝাল ছাড়া বাঁচবই না! টক বা ঝাল খেয়ে
গলার ক্ষতি হলে মরাঠি বা দক্ষিণ ভারতীয়েরা কেউ কখনওই গান গাইতেই পারত না! বরং গলা ছেড়ে গাইবার জন্য অনেকে লতাজিকে আলাদা করে লঙ্কা খেতেও দেখেছে। আমায় সে বার উনি সস্নেহে বলেন, খুব সে আইসক্রিম খাও! গানের গলার ক্ষতি হবে না। তবে গনগনে রোদে দাঁড়িয়ে কনকনে ঠান্ডা জল খাওয়াটা খারাপ। নিজের শিল্পী-জীবনে এটা বরাবর মেনে চলেছি।

আমার মা রুমা গুহঠাকুরতা ও বাবা অরূপ গুহঠাকুরতার সঙ্গে কিশোরকুমারের (রুমার প্রাক্তন স্বামী) আজীবন বন্ধুতার সূত্রেই মু্ম্বইয়ের গৌরীকুঞ্জেও (কিশোরের বাড়ি) আমি লতাজির সান্নিধ্য পেয়েছি। মা, বাপি ও লতাজি এক সময়ে বম্বে টকিজ়ে চাকরি করতেন। ওঁরা সকলেই লোকাল ট্রেনে স্টুডিয়োয় যেতেন। তখনকার একটা মজার গল্প লতাজির থেকেই শোনা! তখন বাংলা ও হিন্দিতে বঙ্কিমচন্দ্রের রজনী-র শুটিং হচ্ছে। মা নায়িকা, হিরো অশোককুমার। একমাত্র মায়ের জন্য ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট বরাদ্দ ছিল। বাকিরা থার্ড ক্লাসে যেতেন। লতাজি বলেছিলেন, ‘দেখতাম, রুমা রোজ কিশোরকে টেনে নিয়ে ফার্স্ট ক্লাসে উঠে পড়ত! হম লোগ দেখতে রহ জাতে থে।’

Advertisement

আমার দাদা অমিতকুমারের জন্মের আগে কিশোরকুমারের হাসিখুশি চেহারাটাও লতাজির গল্পেই শুনেছি। তখন নাকি বাপি স্টুডিয়োয় ঢুকতই এক কাল্পনিক বাচ্চার হাত ধরে! সেই বাচ্চার সঙ্গে নিজের মনে কত গল্প করত। লতাজি বার বার বলতেন, কিশোর তখন খুব আনন্দে ছিলেন। লতাজি বাপিকে খুব ভালবাসতেন। রীতিমতো নিয়ম মেনে রাখি পরাতেন।

দাদাভাই অমিতকুমারের সঙ্গেও লতাজির খুবই কাছের সম্পর্ক ছিল। আমাদের পরিবারের কাছে এ নিকটাত্মীয় বিয়োগেরই মুহূর্ত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement