সৃজিত এবং পঙ্কজ।
বাঘের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বুক বাজিয়ে বলছেন পঞ্চায়েত প্রধান গঙ্গারাম, ‘তুমি শের হলে আমি শেরদিল!’ অর্থাৎ, এক ফোঁটাও ভয়ডর অবশিষ্ট নেই তাঁর শরীরে। এই কথা গঙ্গারাম সপাটে বলেছেন দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্যেও। ‘গঙ্গারাম’-এর এই সংলাপ পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের লেখা।
শুক্রবার বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে তাঁর বাংলা ছবি ‘X=প্রেম’। একই দিনে প্রকাশ্যে সৃজিতের দ্বিতীয় হিন্দি ছবি ‘শেরদিল’-এর প্রথম ঝলক। যেখানে ‘গঙ্গারাম’ পঙ্কজ ত্রিপাঠি। ছবির ঝলকে তাঁরই ‘হুঙ্কার’ গমগম করে বেজেছে।
ছিমছাম এই ছবিতে এক গ্রামের গল্প বলেছেন ‘অটোগ্রাফ’ ছবির পরিচালক। যেখানে জঙ্গলের শ্বাপদের সঙ্গে সহবাস গ্রামবাসীদের। হিংস্র পশুরা যখন তখন গ্রামে ঢুকে পড়ে। ফসল নষ্ট করে দেয়। মেরে ফেলে গ্রামবাসীদের। প্রাণ বাঁচাতে গঙ্গারাম উপস্থিত সরকারি দফতরে। সবিস্তার জানিয়ে সরকারি সাহায্য চাইতেই তাঁর কপাল জোটে সরকারি কর্মীদের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ। পঞ্চায়েত প্রধান প্রথমে গ্রামবাসীদের হিংস্র প্রাণী (পড়ুন বাঘ)-র মোকাবিলার অনুরোধ জানান। বদলে তিনি সরকারি প্রকল্পের ১০ লক্ষ টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তার পর? জানতে গেলে ২৪ জুন যেতে হবে প্রেক্ষাগৃহে।
ছবির ঝলক বলছে, ছবির শুরু থেকে শেষ পঙ্কজ-ময়। পরিচালক তাঁকে সুযোগ দিয়েছেন। অভিনেতা তার সদ্ব্যবহার করেছেন। টি সিরিজ, রিলায়েন্স এন্টারটেনমেন্ট আর সৃজিতের নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা ম্যাচকাট জুটি বেঁধেছে এই ছবিতে। পঙ্কজ ছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সায়নী গুপ্তা, নীরজ কবি প্রমুখ। হঠাৎ গভীর জঙ্গলের ধারে গড়ে ওঠা গ্রামবাসীদের এই জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে কেন ছবি বানালেন সৃজিত? জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালকের দাবি, ‘‘পিলিভিত টাইগার রিজার্ভ-এর গায়ে গড়ে ওঠা গ্রাম এই সমস্যার সম্মুখীন। আমি নিজে দেখেছি। দেখেই মনে হয়েছিল, এটিই আমার পরের ছবির বিষয়।’’ তাঁর মতে, পরিবারকে বাঁচাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করার জন্য অনেক সাহসের প্রয়োজন। তাঁর ছবি সেই সাহসিকতার গল্প বলবে। শহরবাসীরাও বুঝবেন, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে কী ভাবে প্রতি দিন বেঁচে থাকেন জঙ্গলের গায়ে গড়ে ওঠা গ্রামের মানুষেরা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।