শ্রীলেখা মিত্র।
এ বারে নেটমাধ্যমে ফাঁস হল বাম সমর্থক শ্রীলেখা মিত্রর ফোন নম্বর। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করা হল অভিনেত্রীর সম্পর্কে। নেটাগরিক জানতে চান, 'ওঁনার রেট টা কী চলছে...একজনের সঙ্গে কতো? দুজনের সঙ্গে কতো?' নেটাগরিকের পোস্টটির একটি ছবি তুলে নিজের প্রোফাইলে নিয়ে এলেন শ্রীলেখা। সঙ্গে কড়া জবাব দিতে ভুললেন না তিনি।
পোস্টের শুরুতে লেখা, ‘ভাত চাই? শ্রীলেখা মাসিকে কল করুন’। কিন্তু তার পরে অভিনেত্রীর সম্পর্কে কুৎসিত কথাবার্তা লেখা হয় সেখানে। অভিনেত্রী তাঁর পোস্টে নেটাগরিককে ‘বোনপো’ সম্বোধন করে বলেন, শুধু ভাত কেন? কোভিড সংক্রান্ত যে কোনও প্রয়োজনে তিনি তাঁর সাধ্য মতো সাহায্য করতে রাজি। শেষে তিনি জানতে চান, নেটাগরিক কোন দলের সমর্থক। শ্রীলেখা লেখেন, ‘তুমি তৃণমূল না বিজেপি? মানে বোঝার চেষ্টা করছি কার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই ভাষায় আমার সম্পর্কে লিখলে’? সেই পোস্টেই কলকাতা পুলিশ ও সাইবার সেলকে উল্লেখ করে নেটাগরিকের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করার আর্জি জানালেন অভিনেত্রী।
সপ্তম দফার নির্বাচনের দিন নেটমাধ্যমে ফাঁস করা হয় তারকা প্রার্থীদের ফোন নম্বর। তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। এক নেটাগরিক তারকা প্রার্থীদের ফোন নম্বর প্রকাশ করেন একটি তালিকায়। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, বৈশালী ডালমিয়া, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সেখানে রয়েছে রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, জুন মাল্য, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়নী ঘোষ, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, যশ দাশগুপ্ত, বাবুল সুপ্রিয়, রুদ্রনীল ঘোষ, পার্নো মিত্র প্রমুখের নম্বর। পোস্টে লেখা হল, ‘করোনায় ভয় কিসের? আপনার পাশে মানুষের কাজ করার জন্য প্রাণ আনচান করা নেতারা! মাস্ক, স্যানিটাইজার, রক্ত, অক্সিজেন, অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য এক্ষুনি ফোন করুন...’। দু’দলে ভাগ হয়ে যায় নেটমাধ্যম। কেউ প্রশ্ন করেন, ‘এ ভাবে ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ফাঁস করে দিয়ে তাঁদের বিপদে ফেলা কি ঠিক’? কারও কটাক্ষ, ‘এঁরা তো মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন, তা হলে করোনা অতিমারির সময়ে মানুষ তাঁদের সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন, এতে অসুবিধা কোথায়’! উল্লেখযোগ্য, যাঁদের নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিজেপি এবং তৃণমূলের প্রার্থী। বাম বলের কারও নম্বর নেই বলে সন্দেহের চোখ সে দলের দিকেই যায়।
এ প্রসঙ্গে পরিচালক ও তৃণমূলের প্রার্থী রাজ চক্রবর্তী আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, ‘‘সিপিএমকে সারা জীবন একটা শিক্ষিত, রুচিশীল দল বলেই দেখে এসেছি। তারা এ রকম কাজ করতে পারে, এটা আমার কাছে খুবই আশ্চর্যজনক। এমনকি ইন্ডাস্ট্রির অনেক সিপিএম সমর্থকও এই ঘটনাটিকে সমর্থন করছেন।’’
তারকা প্রার্থীদের নম্বর ফাঁস করে দেওয়াকে ‘বুদ্ধিদীপ্ত বদমায়েশি’ বলেছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে কথা বলার সময়ে এ কথা বলেছিলেন তিনি। যদিও তিনি কারো ফোন নম্বর ফাঁস করে দেওয়াকে সমর্থন করেন না বলেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কথায়, ‘‘যিনিই কাজটি করে থাকুন তিনি বুঝেছেন কাজের ছুতোয় তারকাদের দলবদল বা রাজনীতিতে যোগদান সাধারণের কাছে প্রচণ্ড হাস্যকর। কেউ এই যুক্তি বিশ্বাস করেনি। তাই এই ধরনের পোস্ট নেটমাধ্যমে শেয়ার হতেই ভাইরাল।’’
আর তাই কি এমন পাল্টা অপমান ফিরে এল তাঁর দিকে? কিন্তু সব থেকে উল্লেখযোগ্য বিষয়, অভিনেত্রী এক বারের জন্যও নম্বর ফাঁস হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেননি। বরং নেটাগরিকের নারীবিদ্বেষী মন্তব্যেরই প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। যদিও স্ক্রিনশটটি পোস্ট করার আগে নিজের নম্বরটি মুছে দিয়েছেন শ্রীলেখা।