ওঁর সাক্ষাৎকার দেখি মাঝে মধ্যেই। একটি ভিডিয়োর বারবার মনে পড়ে। ইংরেজি ভাষায় কথা বলা শুরু করে থেমে যান শ্রীদেবী। বলেন, ‘‘আমি এত পড়াশোনা করিনি। হিন্দিতেই বলি বাকিটা।’’ সুপারস্টার শ্রীদেবীকে ছাপিয়ে গিয়ে আমার কাছে তাঁর ব্যক্তিত্ব, সততা, সারল্য প্রকট হয়ে ওঠে।
শ্রীদেবী-শ্রীলেখা
এ ভাবে চলে যাওয়াটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না। এখনও সব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। প্রশ্নের উত্তর খোঁজাও বন্ধ করে দিয়েছে সবাই। রহস্যের আড়ালে থেকে গেলেন নায়িকা। তিনি শ্রীদেবী। মধুবালার পরেই তাঁর প্রতি এই মুগ্ধতা আসে আমার। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরে নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রীরা দল বেঁধেও সেই শূন্য়তা দূর করতে পারেননি। সম্ভবও নয়।
তাঁর নাচ, তাঁর অভিনয়, তাঁর চাহনি, তাঁর মোহময়ী আবেদন, সবই অতুলনীয়। খুব বেছে বেছে চিত্রনাট্যে অভিনয় করেছেন তিনি। দীর্ঘ দিনের অবসর নেওয়ার পরে ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ ছবিতে ফিরে এসেছিলেন শ্রীদেবী। তাঁর সময়ে দর্শক কী পছন্দ করতেন, সে কথা মাথায় রেখে তখন ছবি করতেন। তার পরে নতুন প্রজন্ম কাছে কোনটা আকর্ষণীয়, সেটা মাথায় রেখে ‘ইংলিশ ভিংলিশ’-এর মতো চিত্রনাট্যকে বেছে নিয়েছিলেন। উল্টো দিকে মাধুরী দীক্ষিত যখন পর্দায় ফিরলেন, তিনি কিন্তু সেই ‘আজা নাচলে’ গোছের ছবি বেছে নিয়েছিলেন। জনপ্রিয় হলেও মানের নিরিখে শ্রীদেবীর ছবি অনেক বেশি উন্নত।
ওঁর সাক্ষাৎকার দেখি মাঝে মধ্যেই। একটি ভিডিয়োর বারবার মনে পড়ে। ইংরেজি ভাষায় কথা বলা শুরু করে থেমে যান শ্রীদেবী। বলেন, ‘‘আমি এত পড়াশোনা করিনি। হিন্দিতেই বলি বাকিটা।’’ সুপারস্টার শ্রীদেবীকে ছাপিয়ে গিয়ে আমার কাছে তাঁর ব্যক্তিত্ব, সততা, সারল্য প্রকট হয়ে ওঠে।
অভিনয় শিল্পে পর্যবেক্ষণ করা খুব দরকার। শ্রীদেবীর ক্ষেত্রে সেই দক্ষতায় শান দিয়েছি আমি। অভিনেত্রী সত্তার খোলসের ভিতরে তাঁর ওই মনটাকে দেখতে পেয়েছিলাম আমি। তাই ওই মানুষটার প্রতি বাড়তি ভাললাগাটা রয়েই গিয়েছে আমার।
অনেকগুলি বছর পেরিয়ে গিয়েছে বলে হয়তো সেই যন্ত্রণা আগের মতো নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তো সব কিছুই সয়ে যায় মানুষের। তাও বলব, আজও তাঁর ছবি দেখলে বা তাঁর সাক্ষাৎকার শুনতে চোখের কোণায় জল চলে আসে আমার।
ভাগ্যিস তিনি ইনস্টাগ্রাম রিলের যুগে বেঁচে নেই। না হলে মাধুরীর মতো রিল বানাতে হত। সেটা দেখলে একটু কষ্ট হত আমার। যদিও বিশ্বাস করি, তিনি আজ বেঁচে থাকলেও রিল বানাতেন না। প্রয়োজন পড়ত না তাঁর।