সিদ্ধার্থ
প্র: দীর্ঘ সময় পরে আপনার ছবি মুক্তি পাচ্ছে। ‘শেরশাহ’ নিয়ে কতটা উৎসাহী আপনি?
উ: অতিমারির কারণে সিনেমা হল দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। তাই সকলের ক্ষেত্রে কমবেশি বিরতি হয়েছে। তবে ‘শেরশাহ’ সিনেমা হলে আসুক বা অ্যামাজ়ন প্রাইমের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মে, এই ছবি নিয়ে আমি খুব উৎসাহী। এটা আমার কেরিয়ারে একটি বিশেষ ছবি। পাঁচ বছর আগে ক্যাপ্টেন বিক্রম বত্রার পরিবার বলেছিল, বিক্রমের চরিত্রে সিদ্ধার্থকে খুব ভাল মানাবে। তাই চরিত্রটি যথাযথ ভাবে তুলে ধরা আমার কাঁধে গুরুদায়িত্ব। ক্যাপ্টেন বিক্রম বত্রার জীবনের অনেক অচেনা দিক দর্শক দেখতে পাবেন।
প্র: কার্গিল যুদ্ধের নায়ক ক্যাপ্টেন বিক্রমের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তুতি কেমন ছিল?
উ: প্রথম বার রিয়্যাল লাইফ হিরোর চরিত্রে অভিনয় করছি। ছবিতে কিছু দৃশ্য রয়েছে, যা বাস্তব থেকেই তুলে ধরা। ট্রেলারে যে সংলাপগুলো রয়েছে, তার অনেকটাই ক্যাপ্টেন নিজের পরিবার ও কমরেডদের কাছে বলেছিলেন। ছবিটা তৈরি হতে সময় নিয়েছে বলে আমিও প্রস্তুতির সময় বেশি পেয়েছি। বিক্রমের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে ওঁর পছন্দ-অপছন্দ জেনেছি। ব্যক্তিজীবনে বিক্রম একজন সহৃদয় পঞ্জাবি ছিলেন। নিজে পঞ্জাবি বলে সেই বিষয়টার সঙ্গে রিলেট করতে পেরেছি। আবার যুদ্ধক্ষেত্রে বিক্রম ছিলেন একজন বিচক্ষণ নেতা। ওঁর অধস্তনরা এটাই বলতেন, ‘‘জব বত্রা সাব লিড করতে হ্যায়, হাম কমফর্টেবল হোতে হ্যায়।’’ এ ছাড়াও একজন ভাল সৈন্যের বডি ল্যাঙ্গোয়েজ, সেনাবাহিনীর নিয়মানুবর্তিতার মতো টেকনিক্যাল দিকগুলো শিখেছি। মুম্বইয়ে এক উচ্চপদস্থ সেনা অফিসারের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। কার্গিলের কঠিন উপত্যকায় সব অ্যাকশন দৃশ্যের শুট হয়েছে। অনেক পরিশ্রম করেছি ছবিটার জন্য।
প্র: ছবিতে প্রথম বার কিয়ারা আডবাণীর বিপরীতে আপনি। বাস্তবের প্রেমের ঝলক কি পর্দায় ফুটে উঠবে?
উ: কোন প্রেমের কথা বলছেন? (ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি) ক্যাপ্টেন বিক্রমের সঙ্গে ডিম্পলের (কিয়ারার চরিত্র) যে প্রেম ছিল, সেটাই ছবিতে দেখতে পাবেন দর্শক।
প্র: দক্ষিণী অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দানার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: ‘মিশন মজনু’ দিয়ে রশ্মিকা হিন্দিতে ডেবিউ করছে। ছবিটা ঠিক কবে রিলিজ় করবে, জানি না। তবে ওটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি আমার কাছে। গল্পের প্রেক্ষাপট সত্তরের দশক। আমি ছবিতে এক স্পাইয়ের ভূমিকায়। সত্যি ঘটনা অবলম্বনে ছবিটা তৈরি হয়েছে। কুড়ি শতাংশ শুটিং বাকি। রশ্মিকার প্রথম দক্ষিণী ছবি দেখেছি। ওর চোখ দুটো খুব সুন্দর (হাসি)!
প্র: অনিবার্য কারণেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে হিন্দি ছবির মুক্তি অব্যাহত। কিন্তু দর্শকের ছবি দেখার অভ্যেস কি এতে বদলে যাচ্ছে?
উ: আমার মতে, অতিমারির জন্য সাবধানতা অবলম্বন করতেই হবে। কিছু তো করার নেই। আর সিনেমা হলে রিলিজ় করার পরে ছবি এখন ওটিটিতে আসবেই। আমার অন্য অনেক ছবি ইতিমধ্যে ওটিটিতে রয়েছে। আমরা বড় পর্দায় ছবি দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম। আমার ডেবিউ হয়েছে বড় পর্দায়। কিন্তু এখন দু’টি মাধ্যমের ফারাক অনেক কমে এসেছে।
প্র: বলিউডের এই প্রজন্মের সুদর্শন নায়কদের মধ্যে আপনি গণ্য হন। সুদর্শন নায়ককে সাধারণ চরিত্রে কাস্ট করায় কি অসুবিধে রয়েছে?
উ: আমার কেরিয়ারে এখনও অবধি সবচেয়ে বড় হিট ‘এক ভিলেন’।
প্র: কিন্তু ওই ছবিতেও আপনাকে গুডলুকিং ভিলেনই লেগেছে...
উ: আমি এটা কমপ্লিমেন্ট হিসেবেই নেব (হাসি)। ক্যামেরার সামনে আমাকে দেখতে ভাল লাগলে ক্ষতি তো নেই। ‘ইত্তেফাক’ ছবিতে আমার চেহারায় অনেক ক্ষত ছিল। কিন্তু দর্শক আমার অভিনয়েরও প্রশংসা করেছিলেন। চরিত্রটা ধূসরও ছিল। ‘শেরশাহ’ ছবিতেও যুদ্ধের দৃশ্যে আমার চেহারায় ক্ষত থাকবে। সুদর্শন হওয়ার শুধু সুবিধেই রয়েছে।
প্র: অতিমারি গত এক বছরে জীবন কতটা বদলে দিয়েছে?
উ: সকলের জীবনই এখন ঘরবন্দি। চেনা রুটিন বদলে গিয়েছে। যার যতটুকু আছে, সেটাকে মূল্য দেওয়া উচিত। সত্যি কথা বলতে, আমি অভিনয় খুব মিস করেছি। কারণ পরিচালক-লেখকেরা বাড়িতে বসেও নিজের কাজ করতে পারেন। কিন্তু অভিনেতাদের ক্যামেরা চাই। সেটের বদলে বাড়ির আবহে সেই কাজটা করা খুব সহজ নয়। পরিবারের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছি এই বিরতিতে। রান্না করেছি, বেকিং শিখেছি।
প্র: কোন কোন পদ রাঁধতে শিখলেন?
উ: সুপ, প্রনের পদ করেছি। সি ফুড খেতে ভালবাসি। আর আমি এক ধরনের ব্রেড বেক করেছি, যার মধ্যে প্রোটিন রয়েছে কিন্তু ইস্ট নেই। ওটা খুব স্বাস্থ্যকর।
প্র: কর্ণ জোহর আপনার মেন্টর। গত বছর নেপোটিজ়ম বিতর্কে উনি রোষের মুখে পড়েছিলেন। কী বলবেন?
উ: সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কী শেয়ার করছে, কোন পোস্টে লাইক করা হচ্ছে, তা নিয়ে সকলেরই দায়িত্ববান হওয়া উচিত।