বিচ্ছেদ নিয়ে মানুষের পুরনো ধারণার বদল ঘটছে। সম্পর্কের ভার যখন একে অন্যের পক্ষে দুঃসহ হয়ে ওঠে, তখন সেই সম্পর্ক বয়ে নিয়ে যাওয়ার থেকে বিচ্ছেদই শ্রেয় বলে মনে হয়। অবশ্য বিচ্ছেদের পরে একসঙ্গে সময় কাটানোর দৃষ্টান্তও তৈরি করেছেন তারকারা। তারকাদের হাত ধরে বিচ্ছেদের সংজ্ঞার বদল ঘটেছে অনেকখানি। এমন কিছু তারকা দম্পতির বিচ্ছেদ নিয়েই এই প্রতিবেদন। যাঁদের কেউ ২ বছর, কেউ আবার ২২ বছর একসঙ্গে কাটানোর পর বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
হৃতিক রোশন এবং সুজান খান: হৃত্বিক এবং সুজানের বিয়ে হয়েছিল ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর। ১৪ বছর একসঙ্গে কাটিয়েছিলেন তাঁরা। এর পর ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে তাঁরা শান্তিপূর্ণ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।
আরবাজ খান এবং মালাইকা অরোরা: একসঙ্গে ১৮ বছর দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন আরবাজ এবং মালাইকা। ১৯৯৮ সালে ১২ ডিসেম্বর পরস্পরের প্রেমে হাবুডুবু খেয়েই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, সেই সম্পর্কে চিড় ধরেছে। ১৮ বছরের দাম্পত্য তাই ২০১৭ সালে শেষ করে দেন তাঁরা। তার পর আরবাজ এবং মালাইকা দু’জনেই অন্য সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েন।
অমৃতা সিংহ এবং সইফ আলি খান: ১৯৯১ সালে নিজের থেকে ১৩ বছরের বড় সেই সময়ের সুপারহিট নায়িকা অমৃতা সিংহকে বিয়ে করেছিলেন সইফ আলি খান। তাঁদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে। ২০০৪ সালে তাঁরাও বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। এর আট পর সইফ করিনা কপূরকে বিয়ে করেন।
ফারহান আখতার এবং অধুনা ভবানী: ২০০০ সালে হেয়ার স্টাইলিস্ট অধুনা ভবানীকে সঙ্গে বিয়ে করেন ফারহান আখতার। ১৬ বছর একসঙ্গে কাটানোর পর ২০১৭ সালে তাঁদেরও বিচ্ছেদ হয়। তাঁদের দুই মেয়ে রয়েছে। তার পর শিবানি দন্ডেকরের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন ফারহান।
পূজা ভট্ট এবং মনীশ মাখিজা: ২০০৩ সালে পূজার ছবি ‘পাপ’-এ কাজ করার সময় থেকেই তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা শুরু হয়। কয়েক মাস মেলামেশার পরই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। তার পর ১১ বছরের দাম্পত্য জীবন। ২০১৪ সালে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেন তাঁরা।
মাসাবা গুপ্ত এবং মধু মন্টেনা: অভিনেত্রী নীনা গুপ্তের মেয়ে মাসাবা ছবি পরিচালক মধু মন্টেনাকে ২০১৫ সালে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের তিন বছরের মধ্যেই সম্পর্কে চিড় ধরে। ২০১৮ সালে তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন এবং ২০১৯-এ আইনত বিচ্ছেদ হয় তাঁদের।
অর্জুন রামপাল এবং মেহের জেসিয়া: দীর্ঘ ২১ বছরের দাম্পত্যে দাঁড়ি টেনেছেন তাঁরা। ২০১১-র শুরুর দিকেই নাকি এই সম্পর্কে ভাঙন ধরে। সে সময় মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে এসেছিলেন শাহরুখ খান। শেষমেশ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পারেননি। দুই মেয়ে মাইরা এবং মাহিকার সম্মতিতেই ২০১৯-এ বিচ্ছেদ হয় তাঁদের।
হিমেশ রেশমিয়া এবং কোমল: ২২ বছর ধরে যে গানটা বেঁধেছিলেন, হঠাৎই সুর কেটে যায় তার। ২০১৭ সালে জনপ্রিয় সুরকার, গায়ক এবং অভিনেতা হিমেশের সঙ্গে স্ত্রী কোমলের বিচ্ছেদ হয়। হিমেশের ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, টেলিভিশন অ্যাঙ্কর সনিয়া কপূরের সঙ্গে হিমেশের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কই নাকি এই বিচ্ছেদের অন্যতম প্রধান কারণ।
রণবীর শোরে এবং কঙ্কনা সেনশর্মা: সম্পর্কে চিড় ধরেছিল ২০১৫-য়। তার পর থেকে দু’জনে আলাদাই থাকতেন। বিয়ের ৫ বছর পরে ২০১৫ সালেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এই অভিনেতা-অভিনেত্রীর। পরে অবশ্য ছেলের জন্য তাঁদের কাছাকাছি আসতেও দেখা গিয়েছে।
রিয়া পিল্লাই এবং সঞ্জয় দত্ত: ১৯৯৮ সালে রিয়া এবং সঞ্জয়ের বিয়ে হয়। ক্রমে তাঁদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব বেড়ে যেতে থাকে। অবশেষে ২০০৫ সালে তাঁরা বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।
করিশ্মা কপূর এবং সঞ্জয় কপূর: ২০০৩ সালে বিয়ে এবং ২০১৪ সালে বিচ্ছেদ। এর মাঝের বেশির ভাগ দিনগুলোই কেটেছে একে অপরের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়িতেই। বিচ্ছেদের পর তাঁদের দুই সন্তান করিশ্মার কাছেই থাকেন।
মনীষা কৈরালা এবং সম্রাট দাহাল: ২০১০ সালের ১৯ জুন মনীষা বিয়ে করে নেপালি শিল্পপতি সম্রাট দাহালকে। তাঁদের আলাপ হয়েছিল ফেসবুকে। সনাতনী নেপালি রীতিতেই বিয়ে করেন দু’জনে। মধুচন্দ্রিমা হয় ফ্লোরিডায়। কিন্তু দু’বছরের মাথায় ভেঙে যায় দাম্পত্য। এর পরই জানা যায়, মনীষা ক্যানসারে আক্রান্ত। প্রথমে মুম্বই, তার পরে তাঁর চিকিৎসা হয় আমেরিকায়।
শ্বেতা তিওয়ারি এবং রাজা চৌধুরী: হিন্দি টেলিভিশনের বিখ্যাত অভিনেত্রী শ্বেতার সঙ্গে অভিনেতা-প্রযোজক রাজার বিয়ে হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। ২০০০ সালে একমাত্র মেয়ে পলকের জন্ম হয়। ২০০৭ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের।
আমির খান এবং কিরণ রাও: তারকাদর বিচ্ছেদ-তালিকায় নবতম সংযোজন আমির খান-কিরণ রাও। সম্প্রতি নেটমাধ্যমে একটি যৌথ পোস্টে দীর্ঘ ১৫ বছরের দাম্পত্যের ইতি ঘোষণা করেছেন তাঁরাও।