স্মিতা পাতিল। ছবি: সংগৃহীত।
বলিউড ছবিতে নারী চরিত্রের বিবর্তন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন স্মিতা পাতিল। একটি সাক্ষাৎকারে ছবিতে নারী শরীরের প্রদর্শন নিয়ে নিজের অভিমত জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। তিনি মনে করতেন, গোড়ার দিকে বলিউড ছবিতে বাস্তবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারতীয় নারী চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হত। উদাহরণস্বরূপ ‘ভূমিকা’ ও ‘মন্থন’ ছবির কথা তুলে ধরলেন অভিনেত্রী। অবলা, মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না— নানা সমস্যার মুখোমুখি নারীদের জীবনযাত্রা জুড়ে শুধুই অপ্রাপ্তি তুলে ধরা হত না। বরং তাঁরা কী ভাবে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন, তাদের ধৈর্য, শক্তি জায়গা দখল করে নিত ছবির প্রেক্ষাপটে।
স্মিতা পাতিল জানিয়েছিলেন, বাণিজ্যিক ছবিতে নারী চরিত্রদের একই ধাঁচে ফেলে দেওয়া হয়। অধিকাংশ মহিলাদের পতিব্রতা, দুর্বল, স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন, এমনকি কিছু জায়গায় হেয় প্রতিপন্নও করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে খল চরিত্রে দেখানো হয়। তাঁর মতে, দেহব্যবসায়ীদের নেতিবাচক দেখানো হয়। কিন্তু তিনি যখন ছবি করতে শুরু করেছিলেন, সেই সময় যৌনকর্মীদের নিয়ে ভাল ছবি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিমল রায়, গুরু দত্তের ছবির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
দেহব্যবসাকে পেশা হিসাবে বেছে নেওয়ার নেপথ্যে যে দুঃখ, যন্ত্রণা, সেটা গৌণ হয়ে যায়। তার পরিবর্তে শুধু আকর্ষণীয় শরীর প্রদর্শন মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। স্মিতার ‘চক্র’ ছবির পোস্টার সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে, স্মিতা অর্ধনগ্ন অবস্থায় কলের নীচে স্নান করছেন। এই প্রসঙ্গে স্মিতা জানিয়েছিলেন, পুরো বিষয়টি তাঁর হাতে থাকলে তিনি কখনওই ওই ছবিটি বড় পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়ার পথ খোলা রাখতেন না।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, ঝুপড়িতে বসবাসকারী মহিলার জীবনধারা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল সেই ছবিতে। সেই চরিত্রটির বাসস্থান নেই, স্নান করার জায়গা থাকবে কী ভাবে? এই বার্তা দিতে চেয়েছিলেন ছবিনির্মাতারা। কিন্তু ব্যবসার নিরিখে ছবির প্রচারের জন্য ছবিটির ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ছবির প্রতি আকর্ষিত করার উদ্দেশ্যে যৌনতা, অর্ধনগ্ন শরীরের প্রলোভন দেখানো হয় দর্শকদের। এই পন্থা একেবারেই অবলম্বন করা উচিত নয় বলে মনে করতেন অভিনেত্রী।