রণজয় বিষ্ণু ও শ্বেতা ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।
টেলিপাড়ার পরিচিত মুখ শ্বেতা ভট্টাচার্য ও রণজয় বিষ্ণু। বর্তমানে ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিকে জুটি বেঁধেছেন তাঁরা। পর্দায় তাঁদের রসায়ন ইতিমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছে দর্শকের মনে। শুটিংয়ের ফাঁকে তাঁরা কথা বললেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে।
পর্দার জুটি তো হল, বাস্তবের জুটি শ্বেতা-রুবেলের প্রেমও চলছে চুটিয়ে। সলজ্জ হেসে অভিনেত্রী আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “রুবেল এখন ভাল আছে। জমিয়ে ‘নিম ফুলের মধু’ ধারাবাহিকের শুটিং করছে। সামনের বছর জানুয়ারিতে বিয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে তারিখ ঠিক হয়নি এখনও।” তিনি আরও জানালেন, কলকাতায় বিয়ের আসর বসবে। সাবেকিয়ানার ছোঁয়া থাকবে।
দু’জন দুই দিকে শুটিংয়ে ব্যস্ত। পরস্পরের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য তাই রবিবারকেই বেছে নিয়েছেন তাঁরা। “রবিবার দেখা করি আমরা। আমার আগে প্যাক-আপ হলে ওর ফ্লোরে চলে যাই। তবে অধিকাংশ দিন ওর আগে শুটিং শেষ হয়ে যায়। তখন আমার এখানে চলে আসে রুবেল,” বললেন শ্বেতা।
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রণজয়কে উদ্দেশ্য করে শ্বেতা বললেন, “রণদার জন্য মেয়ে খুঁজছি আমরা। রণদা বলেছে বিয়ে করবে।” রণজয়ের উত্তর, “সত্যিই আমার জন্য মেয়ে খোঁজার দায়িত্ব নিয়েছে ওরা।”
পাত্রীর খোঁজ চলছে ঠিক আছে কিন্তু সোহিনীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে রণজয়ের কি প্রেমে নৈব নৈব চ? শ্বেতার সটান উত্তর, “না না, এ রকম কোনও ব্যাপার নয়। মেয়ে খুঁজে দেব, তার পরে বিয়ে করুক অথবা নিজে পছন্দ করে প্রেম করে বিয়ে করুক তাতে অসুবিধা নেই।”
“আমি নিজে পছন্দ করে যাকে ধরে রাখতে চাইছি সে দূরে চলে যাচ্ছে,” বিষণ্ণতা ছুঁয়ে গেল রণজয়ের কথায়। “আমি বলেছি না রণদা, যে চলে যায় সে তোমার ছিল না। আর যে থাকার সে হাজার খারাপের পরেও তোমার থাকবে। তাই যে চলে গিয়েছে সে জাহান্নামে যাক,” বললেন শ্বেতা। শ্বেতার কথার বিরোধিতা করে রণজয়ের বক্তব্য, “না না একদমই না। এ রকম বলা ঠিক নয়। সকলে ভাল থাকুক। সুস্থ থাকুক।” এখানেই থেমে থাকেননি শ্বেতা। “না না তোমাকে অত কাতর হতে হবে না,” পাল্টা জবাব অভিনেত্রীর।
সমাজমাধ্যমে নতুন প্রেমিকের সঙ্গে প্রাক্তন প্রেমিকা সোহিনী সরকারের ছবি দেখলে বিষণ্ণতা ঘিরে ধরে রণজয়কে? অভিনেতার মতে, “ছবি দেখলে মন থেকে মঙ্গল কামনা আসে। যার সঙ্গে এক সময় সম্পর্ক ছিল, তার সঙ্গে প্রেম ভেঙে গিয়েছে বলে কি তার খারাপ চাইব? এটা হয় কখনও!” তিনি আরও জানালেন, যদি কারও সঙ্গে ভাল মুহূর্ত কাটিয়ে থাকেন অথবা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে থাকার স্বপ্ন দেখেন, তাঁর প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল রণজয়। প্রাক্তনের বর্তমান সম্পর্কের প্রতিও শ্রদ্ধা রয়েছে অভিনেতার। “আমাদের বিচ্ছেদের নিশ্চয়ই কোনও কারণ ছিল,” বললেন তিনি। খারাপ-ভাল বলার ঊর্ধ্বে এই বিষয়টি। সব কিছু মাপকাঠি দিয়ে বিচার করা হয় না বলে মনে করেন অভিনেতা।
তবে রণজয়ের ব্যক্তিগত জীবনের আঘাত তাঁর কাজের উপরেও প্রভাব ফেলে, জানালেন শ্বেতা। “রণদার মনটা ভীষণ নরম। ওঁর অতীতের প্রসঙ্গে কথা হোক এটা আমরা কেউ চাই না। অতীত নিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি করার কী দরকার! ভবিষ্যতের দিকে তাকাই আমরা,” বললেন তিনি। তবে প্রিয় রণদার জন্য পাত্রীর খোঁজ জারি রেখেছেন শ্বেতা। তাঁর কথায়, “আমি তো রণদাকে অনেক মহিলার কথা বলছি, কাউকে মনে ধরছে না ওঁর!”
রুবেলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে শ্বেতা জানালেন, শ্রদ্ধা, বিশ্বাস আর বন্ধুত্বই তাঁদের সম্পর্কের চাবিকাঠি। বন্ধুর সঙ্গে মন খুলে সব কথা বলা যায়। কিন্তু অভিনেত্রী মনে করেন, প্রেমিক বা প্রেমিকা হলে একটা পর্দা চলে আসে। “মনে হয় এটা বললে সঙ্গী কী প্রতিক্রিয়া দেবে!” কোথাও একটা দ্বিধা কাজ করে। এমনটাই ভাবেন শ্বেতা। “কিছু গোপন রাখা উচিত নয় সম্পর্কে। খারাপ কিছু হলে বলে দাও সরাসরি। কারণ তোমার থেকে শুনলে যতটা না খারাপ লাগবে, অন্য কারও মুখে শুনলে আরও বেশি খারাপ লাগবে!” সতর্ক করলেন শ্বেতা।