Srijit Mukherji Jhulan Goswami

‘ক্রিকেটের মাঠে বিনোদনের অনুপ্রবেশ!’ ঝুলন গোস্বামীর সঙ্গে বাইশ গজের আড্ডায় সৃজিত

“ব্যাঘ্র প্রকল্পের মতো বোলার সংরক্ষণ চালু হোক! নইলে ক্রিকেটের ক্ষতি!’’ বললেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২৪ ০৯:০০
Share:

আইপিএলে ধারাভাষ্যকার রূপে দেখা গিয়েছে সৃজিত এবং ঝুলনকে। —নিজস্ব চিত্র।

একটা সময় নিয়মিত ক্রিকেট খেলতেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। জেএনইউ-তে অর্থনীতি পড়ার সময় একাধারে ব্যাটার ও উইকেটরক্ষক ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে একটি দুর্ঘটনার জেরে খেলাধুলো খানিকটা কমে যায়। এর পরে ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে ব্রিটেন ও ভারতীয় দূতাবাসের মধ্যে একটি ম্যাচে অংশ নেন সৃজিত। ১৯৭১ সালে ভারতীয় ক্রিকেটের উত্থান নিয়ে ছবি করার পরিকল্পনা রয়েছে সৃজিতের। এর মধ্যেই চিত্রনাট্য তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।

Advertisement

আইপিএল-এর মরসুমে সম্প্রতি ভারতীয় মহিলা দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ঝুলন গোস্বামীর সঙ্গে ক্রিকেটের আড্ডায় মজলেন সৃজিত। বোলারদের পক্ষে সওয়াল করলেন। খেলার মাঠে বিনোদনের প্রবেশ আখেরে খেলার ক্ষতি করছে বলে যুক্তি-তর্কে জড়ালেন তাঁরা।

আড্ডায় সৃজিত প্রশ্ন তোলেন, “প্রতি দিন এই বিধ্বংসী ব্যাটিং দেখলে ছোটরা কি বড় হয়ে বোলার হতে চাইবে?” সৃজিতের কথায়, বর্তমানে বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করা হলে এক কথায় ওরা বলে ওঠে, “আমি বড় হয়ে ব্যাটার হব!”

Advertisement

অন্য দিকে ঝুলন গোস্বামীর মতে, ক্রিকেট ক্রমশ একপেশে খেলায় পরিণত হচ্ছে। “খেলাটা ব্যাটারকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। বোলাররা বল করছে মার খাওয়ার জন্য। একমুখী ক্রিকেট হচ্ছে,” এই বার্তায় অনেকটা ডব্লুজি গ্রেসের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন ঝুলন।

সৃজিত ব্যঙ্গ করে বললেন, “এর পরে তো দেওয়াল ক্রিকেট হবে! দেওয়ালে বল ছুড়ে ব্যাটিং করা হবে।” উনিশ শতকের ‘ক্যাটাপল্ট’ (একটি প্রাচীন ‘ব্যালেসটিক’ যন্ত্র, যা অনেক দূর থেকে ব্যবহার করা হত) পদ্ধতির কথা তুলে ধরলেন পরিচালক। ভবিষ্যতে বল ছোড়ার মেশিনের সাহায্যে ক্রিকেট খেলা হবে বলে আশঙ্কা পরিচালকের।

সৃজিতের কথায়, “আমরা যখন ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলতাম, বোলার বাড়ি থেকে নিজের বল নিয়ে আসত।’’ এর পর তিনি খানিক হেসে বললেন, ‘‘সেই বলে আমি ময়শ্চারাইজ়ার, কন্ডিশনার যা লাগানোর আমি লাগাব! তবেই তো মজা!” স্মৃতির পাতায় ডুব দিলেন সৃজিত। “আজকাল যে সব বাচ্চা ক্রিকেটের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, তারা কি আদৌ আর কেউ বোলার হতে চায়?” ধন্দে সৃজিত।

ঝুলন গোস্বামী জানালেন, বিনোদনের জন্য ক্রিকেটের মাঠ থেকে বোলারদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে! বেশি রান, বেশি স্কোরের পিছনে ছুটছে সকলে। মনে হচ্ছে, বোলিংয়ের লক্ষ্যই হল ব্যাটারদের কাছে মার খাওয়া। “উইকেট লাগবে, উইকেট! ক্রিকেটে ভারসাম্য রাখতে উইকেট তোলা জরুরি। না হলে ২২ গজের চ্যালেঞ্জটা হারিয়ে যাবে,” বললেন ঝুলন গোস্বামী।

ওয়াইড, নো বল, ফ্রি হিট থাকলে ‘ডট’ বলে নেগেটিভ রান দেওয়া উচিত। বোলার না থাকলে ক্রিকেট হবে না। পাশাপাশি ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটারদের নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সৃজিত, ঝুলনেরা। তাঁরা বলেন, ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটারের ফলে অলরাউন্ডারদের ধারণাটাই উঠে যাচ্ছে।

সৃজিত মনে করেন, বাঘ সংরক্ষণের মতো বোলারদের সংরক্ষণ করতে হবে। তাঁর কথায়, “ব্যাঘ্র প্রকল্পের মতো আমাদের বোলার প্রকল্প চালু করতে হবে। না হলে বিলুপ্তির পথে চলে যাবেন বোলাররা।” আরও এক বার বিখ্যাত সংলাপ স্মরণ করিয়ে দিলেন তিনি, “ফারাকটা বুঝতে হবে, ব্যাটার ‘লাক্সারি’, বোলার ‘নেসেসিটি’।” পাশাপাশি তিনি এও মনে করেন, যে বোলাররা পিছিয়ে পড়েছেন, তাঁদের একটু সঠিক ভাবে চালনা করা প্রয়োজন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement