সম্পর্ক ভাঙাগড়ার খেলা যেখানে নিত্যনতুন ঘটনা, সেই বলিউডে কোনও জুটির দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক সবসময়েই বাকি তারকাদের কাছে ঈর্ষণীয়। সে দিক দিয়ে শাহরুখ-গৌরীকে বলা হয় ইন্ডাস্ট্রির পাওয়ার কাপল এবং ফার্স্ট কাপল। কিন্তু তাঁদের সম্পর্কও ক্ষতবিক্ষত হয়েছে প্রিয়ঙ্কা-কাঁটায়।
শূন্য থেকে শুরু করে বলিউডের সুপারস্টার হয়েছেন শাহরুখ। পরিবারে অভিনয়ের ইতিহাস বা গডফাদার, কোনওটাই তাঁর নামের পাশে ছিল না। খড়়কুটো অবলম্বন করে তাঁর এই লড়াইয়ে সব সময় পাশে ছিলেন প্রথমে প্রেমিকা ও পরে স্ত্রী গৌরী।
শোনা যায়, নিজের কেরিয়ারের প্রথম থেকেই শাহরুখের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ছিল প্রিয়ঙ্কার। তবে শাহরুখের সঙ্গে তাঁর অভিনয় লেন্সবন্দি হতে সময় লেগেছে। ২০০৬-য় ‘ডন’ ছবিতে প্রথম একসঙ্গে দেখা যায় শাহরুখ-প্রিয়ঙ্কাকে।
তবে বিভিন্ন পার্টি এবং অনুষ্ঠানে দেখা হওয়ার সুবাদে দু’জনের পরিচিতি ছিল অনেক দিনের। ছবিতে একসঙ্গে অভিনয়ের সুবাদে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে।
বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে শাহরুখ বলেছেন প্রিয়ঙ্কার কথা। তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রির সবাই তাঁকে স্টার মনে করে। একমাত্র প্রিয়ঙ্কার কাছে তিনি শুধুই ‘কো-স্টার’।
শাহরুখের কথায়, তাঁর চুল যখনই অবিন্যস্ত হয়ে পড়ে, ঠিক মতো তা ব্রাশ করে দেন প্রিয়ঙ্কা। অন্তরঙ্গ বন্ধুত্বের কথা স্বীকার করেন দু’জনেই। কিন্তু তাঁদের বন্ধুত্ব নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে গুঞ্জন ছড়াতে থাকে।
বিশেষ করে ‘ডন টু’-এর পরে প্রিয়ঙ্কার প্রতি শাহরুখের আচরণ নাকি একদম বদলে যায়। তিনি পরিচালক প্রযোজকদের অনুরোধ করতে থাকেন প্রিয়ঙ্কাকে ছবিতে নেওয়ার জন্য।
সে সময় শাহরুখের বাসভবন ‘মন্নত’-এ প্রায়ই যেতেন প্রিয়ঙ্কা। বিভিন্ন পার্টি, অনুষ্ঠান এবং আইপিএল ম্যাচে তিনি-ই থাকতেন শাহরুখের বাহুলগ্না হয়ে। ফলে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন ছড়াতে দেরি হয়নি।
শাহরুখের কথায় নাকি কর্ণ জোহর নিজের জন্মদিনের পার্টিতে নিমন্ত্রণ করেছিলেন প্রিয়ঙ্কাকে। যদিও সে সময় কর্ণের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে প্রিয়ঙ্কা আদৌ ছিলেন না। সেই প্রার্টিতে নাকি শাহরুখ গালে চুম্বন করে প্রিয়ঙ্কাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
শোনা যায়, সবার সামনে শাহরুখের এই আচরণ মোটেও ভাল ভাবে নেননি গৌরী। পার্টিতে নাকি প্রিয়ঙ্কার সঙ্গেই বেশি সময় কাটান শাহরুখ। এই নিয়ে প্রকাশ্যেই নাকি স্ত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় শাহরুখের।
সামনে না এলেও প্রিয়ঙ্কাকে ঘিরে নাকি শাহরুখ-গৌরী দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। ইন্ডাস্ট্রিতে গৌরীও যথেষ্ট প্রভাবশালী। তাঁর কথাতেই নাকি কর্ণ জোহর-সহ বলিউডের একটা বড় অংশ প্রিয়ঙ্কার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন।
এমনকি, শাহরুখকেও নাকি প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে অভিনয় করতে দেননি গৌরী। প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে অভিনয় করলে বিবাহবিচ্ছেদের হুমকিও নাকি দেন গৌরী। নিজের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে আগ্রহী শাহরুখ বাধ্য হন গৌরীর দাবিতে সায় দিতে।
‘ডন টু’-এর পরে শাহরুখ-প্রিয়ঙ্কা কোনওদিন প্রকাশ্যে মুখোমুখি হননি। বরং, প্রিয়ঙ্কা নিজের নজর ঘুরিয়ে ফেলেন হলিউডের দিকে।
তবে বলা হয়, হলিউডে প্রিয়ঙ্কার কেরিয়ারের পিছনেও শাহরুখের আবদান আছে। একটি চ্যাট শো-এ প্রিয়ঙ্কা কার্যত স্বীকার করে নেন শাহরুখের সঙ্গে তাঁর বিশেষ সম্পর্কের কথা। একটি জ্যাকেট দেখিয়ে বলেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সেটা তাঁকে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত ওই একই জ্যাকেট এর আগে শাহরুখকে পরতে দেখা গিয়েছে।
তবে ইন্ডাস্ট্রিতে আর একটি গুঞ্জন অনেক দিন ধরেই চর্চিত। বলা হয়, শাহরুখ এবং প্রিয়ঙ্কা গোপনে বিয়েও করেন কানাডার টরন্টোয়। কারণ প্রিয়ঙ্কার অসুস্থ বাবা চেয়েছিলেন মৃত্যুর আগে নিজের মেয়ের বিয়ে দেখে যেতে। তবে সত্যি যা-ই হোক না কেন, প্রকাশ্যে তাঁরা দূরত্ব বজায় রেখেই চলেছেন।
প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার বিয়েতে শুভেচ্ছা জানান শাহরুখ। কিন্তু প্রকাশ্যে তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে এখনও নেই প্রিয়ঙ্কা। শোনা যায়, গৌরীর নির্দেশেই মন্নত-এর সব পার্টিতেই শ্রীমতি জোনাস এখনও ব্রাত্য।