Khorkuto

Shoot from home: শ্যুট করে রাখা পর্ব শেষ, ‘মোহর’, ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ কী? শঙ্কিত টেলিপাড়া

ফুরিয়ে আসছে ধারাবাহিকগুলির শ্যুট করে রাখা পর্বের ভাণ্ডার। তবে বাড়ি থেকে শ্যুট করা নিয়ে বিরোধ তৈরি হয় ফেডারেশন এবং আর্টিস্ট ফোরামের মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২১ ১৩:৩৮
Share:

কী হবে ধারাবাহিকগুলির ভবিষ্যৎ?

‘শ্যুট ফ্রম হোম’ বা বাড়ি থেকে কাজ করে ধারাবাহিক চালিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে বিভক্ত আর্টিস্ট ফোরাম এবং ফেডারেশন। অন্য দিকে ফুরিয়ে আসছে ধারাবাহিকগুলির আগাম শ্যুট করে রাখা পর্বের ভাণ্ডার।

Advertisement

স্টার জলসায় সম্প্রচারিত ‘শ্রীময়ী’-র শ্যুট করা পর্বের সম্প্রচার শেষ হয়ে যাচ্ছে ২ জুন। একই সঙ্গে ‘মোহর’, দেশের মাটি’ এবং ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের আগাম শ্যুট করা পর্বগুলি দেখা যাবে যথাক্রমে ১, ২ এবং ৪ জুন পর্যন্ত। তার পরে কী ভাবে ধারাবাহিক চলবে, তার সিদ্ধান্তে এখনও পৌঁছতে পারেনি সংগঠনগুলি। ১৬ মে স্টুডিয়ো-পাড়ার ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায় সরকারি নির্দেশে। তার আগে অবধি বেশ কিছু ধারাবাহিকের আগাম দৃশ্য শ্যুট করা ছিল। করোনার জন্য সরকারি বিধি নিষেধ চলতে থাকায় ধারাবাহিকের ভাঁড়ার এখন শূন্য। ঠিক করা হয় বাড়ি থেকে ধারাবাহিকের কাজ চলবে। কিন্তু এই বাড়ি থেকে শ্যুট করা নিয়ে বিরোধ তৈরি হয় ফেডারেশন এবং আর্টিস্ট ফোরামের মধ্যে।

এ রকম অবস্থায় বাড়ি থেকে শ্যুট করা পর্বগুলি সম্প্রচারিত হবে জানিয়ে মঙ্গলবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় নেটমাধ্যমে। টেলিপাড়ার কয়েকজনের দাবি, ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন প্রোডিউসর্স (ডব্লিউএটিপি)-এর তরফে এটি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাড়ি থেকে শ্যুট করা হলে সেই ধারাবাহিকের সঙ্গে যুক্ত কলাকুশলীরাও তাঁদের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাবেন। ফেডারেশনের বক্তব্য ছিল, বাড়ি থেকে শ্যুট করা হলে শুধু অভিনেতা এবং প্রযোজকের ঘরেই টাকা আসবে। কলাকুশলীরা কিছুই পাবেন না। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলা হয় কাজ চললে, ধারাবাহিক সম্প্রচার হলে সেই ইউনিটের সব সদস্যই ১০ ঘণ্টা কাজের ভিত্তিতে টাকা পাবেন। তার সঙ্গে উল্লেখ করা হয় কোনও কারণে ‘শ্যুট ফ্রম হোম’ বাধাপ্রাপ্ত হলে বা বাড়ি থেকে শ্যুট করা পর্ব সম্প্রচারিত না হলে ন্যায্য পারিশ্রমিক কাউকেই দেওয়া যাবে না।

Advertisement

নেটমাধ্যমে ঘোরাফেরা করছে এই বিজ্ঞপ্তি।

স্টার জলসার ‘খড়কুটো’ ধারাবাহিকের ‘পটকা’ অম্বরীশ ভট্টাচার্য আপাতত সব বিবাদ মিটলে ফের কাজ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছেন। তাঁর কথায়, “বহু মানুষ এই ধারাবাহিকগুলোর অপেক্ষায় বসে থাকেন। তাই সব মতানৈক্য ভুলে একটা সিদ্ধান্তে এলে আবার কাজ শুরু করা যাবে।” অভিনেতার সুরে সুর মিলিয়ে ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের ‘ডিঙ্কা’ সপ্তর্ষি মৌলিক বললেন, “ধীরে ধীরে কাজটা শুরু করলে এর পর নিয়ম মেনে পরিকল্পনা করে ভাল ভাবে শ্যুট ফ্রম হোম হতে পারে। গত বছরও ফেডারেশন আমাদের সাহায্য করেছিল। সে কথা আমার মনে আছে। অনেক মানুষের বিনোদনের উৎস এই ধারাবাহিকগুলি। দর্শকরা অপেক্ষা করে থাকেন।”

অতিমারিকালে সারা বিশ্ব ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ অর্থাৎ বাড়ি থেকে কাজ করার উপর নির্ভরশীল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরেও কাজের পদ্ধতি নিয়ে টেলিপাড়ার অন্দরে গোল বেঁধেছে।

প্রোডিউসর্স গিল্ডের মতোই আর্টিস্ট ফোরামও ছোট পর্দাকে সচল রাখার চেষ্টা করতে প্রস্তুত। এই পদ্ধতিতে যদি কাজ চালিয়ে যাওয়া যায়, ধারাবাহিকের সঙ্গে যুক্ত সকলের আর্থিক অবস্থার অবনতি হবে না বলে তাদের বিশ্বাস।

তবে এই পন্থাকে মান্যতা দিতে আপত্তি জানিয়েছে ফেডারেশন। তারা মনে করছে ‘শ্যুট ফ্রম হোম’ করে আখেরে কোনও কার্যসিদ্ধি হবে না। সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ফোরামের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে খুব শীঘ্রই একটি বিবৃতি প্রকাশ করতে চলেছে ফেডারেশন।

লকডাউন চলাকালীন ফেডারেশনের বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে শ্যুট চালিয়ে যাওয়ার খবর চাউর হতেই প্রযোজকদের একটি কড়া চিঠি পাঠায় ফেডারেশন। তার পাল্টা জবাবে রবিবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রোডিউসর্স গিল্ড জানায়, দুঃসময়ে সকলের রুজি-রুটি জোগাড় এবং দর্শকের মন ভাল রাখার জন্যই বাড়ি থেকে শ্যুট করে কাজ চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু ফেডারেশন এই বিষয়ে সহমত নয়। কী হবে টেলিপাড়ার ভবিষ্যৎ? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন সবাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement