পিরিয়ড ফিল্মে সেফ আলি খান।
বুন্দেলখণ্ডের ধু-ধু পাথুরে জমিতে মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে বুভুক্ষু এক নাগা সন্ন্যাসী। তার খোঁজ এসে শেষ হয় একাধিক মৃত্যুতে, সব হিসেব-নিকেশের শেষে। আর এই দীর্ঘ খোঁজে সামিল হতে হয় দর্শককে। দেখতে হয়, কী ভাবে দুর্বল চিত্রনাট্যের পাকে হাঁসফাঁস করছেন কয়েক জন দুরন্ত অভিনেতা।
নভদীপ সিংহের নাম শুনলেই ‘এনএইচ টেন’ স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এবং প্রত্যাশাও বেড়ে যায় চড়চড়িয়ে। পিরিয়ড ফিল্মে সেফ আলি খানকে নিয়ে তিনি আরও ‘সেফ’ খেললেই পারতেন। গণ্ডগোল করে ফেললেন অজস্র চরিত্র, তাদের ব্যাকস্টোরি, সাবপ্লটের আধিক্য, কাহিনির একঘেয়েমি এবং সর্বোপরি ছবির দৈর্ঘ্য বাঁধতে না পেরে। বক্সারের যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বুন্দেলখণ্ড-রোহিলখণ্ডে বুনেছেন ছবির প্লট। পরাধীনতার দুর্দিন শুরুর সময়কার বিশ্বাসঘাতকতার গল্প দিয়ে সাজিয়েছেন সেই প্লটের ভিত। কিন্তু তার দীর্ঘ বিশ্লেষণে ছবির শেষে গিয়ে আঁচ নিভে এসেছে উত্তেজনার, প্রতিশোধস্পৃহারও। সেফ আলি খান আপ্রাণ চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা করতে পারলেন না।
নাগা সন্ন্যাসীর ভূমিকায় সেফ ভয়ঙ্কর, সুন্দরও। তাঁর একার জেহাদই ছবিটাকে শেষ অবধি ধরে রেখেছে। প্রথমার্ধে ঊষর প্রান্তরে গোসাঁইয়ের (সেফ) হার-না-মানা লড়াই বেশ উপভোগ্য। তাঁর ভস্মমাখা মুখ আর কাজল চোখে প্রতিহিংসার আর্তিতে দর্শক একাত্মবোধ করেন। স্যাঞ্চো পানজ়া দীপক দোবরিয়ালও তুখড়। ‘মুক্কাবাজ়’-এর পর এই সুযোগ পেয়ে জ়োয়া হুসেন আবার বুঝিয়ে দিলেন, তাঁকে আরও বেশি ব্যবহার করা উচিত বলিউডের। তুলনায় মূল অ্যান্টাগনিস্ট হিসেবে মানব ভিজ খানিক দুর্বল। নীরজ কবির ক্যামিও ছোট পরিসরে যথাযথ হলেও সোনাক্ষী সিংহ যেন চোখের পলকে মিলিয়ে গেলেন।
লাল কাপ্তান পরিচালনা: নভদীপ সিংহ অভিনয়: সেফ, মানব, দীপক, জ়োয়া, নীরজ ৫/১০
ব্যক্তিগত বদলার হাত ধরাধরি করে চলেছে বিদেশিদের অনুপ্রবেশ, স্থানীয়দের বেইমানির কাহিনিও। সেই মিশেল আর একটু ইতিহাস-নির্ভর হলে ভাল লাগত। মরাঠি সেনাদের হাস্যকর দেখানোর চেষ্টাও চোখে লাগে। আবহের অভাব কিছু দৃশ্যকে দীর্ঘায়িত করেছে। মূল চরিত্র আর তার অভিনেতা, দুই শক্ত খুঁটি পেয়েও তার সদ্ব্যবহার করা হল না এই ছবিতে। তাই সম্ভাবনা সত্ত্বেও মনে রয়ে যাওয়ার মতো ছবি হয়ে উঠল না ‘লাল কাপ্তান’।