Rudraneel Ghosh

ধর্ষণের হুমকি নিন্দনীয়, কিন্তু দেবলীনার মা কি দুর্গাপুজোয় গরুর মাংস রান্না করেন?

মহিলাদের উপর আক্রমণ নেমে আসছে দেখেও কেন রুদ্রনীল সেই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন না? জানালেন খোদ অভিনেতা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২১ ১২:৫৮
Share:

রুদ্রনীল ঘোষ ফাইল চিত্র

'এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার'- অন্ধকার সকালের গ্লানি মুছে দেওয়ার প্রয়াসে সোমবার রাস্তায় নেমেছিল টলি পাড়া। জমায়েতে ছিলেন কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। নারীবিদ্বেষী প্রবণতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেন প্রত্যেকে। কখনও গানে, কখনও ভাষণে।
কিন্তু টলি পাড়ার বিখ্যাত মুখ রুদ্রনীল ঘোষ উপস্থিত ছিলেন না কেন? সেই প্রশ্নটি জানার জন্যেই আনন্দবাজার ডিজিটাল যোগাযোগ করল অভিনেতার সঙ্গে।
'পথে নামার প্রয়োজন পড়ল কেন?' প্রথমেই এই প্রশ্নটি করলেন অভিনেতা। তাঁর মতে, গণধর্ষণ এবং খুনের হুমকি এলে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করা উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে সাইবার সেলের মতো শক্তিশালী দফতর রয়েছে। তাদের সাহায্য নেওয়া হয়নি কেন!
অভিনেতার ভাষায়, "যারা এই হুমকিগুলো দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা উচিত। আমি তো জানি, কলকাতা পুলিশ খুবই সক্রিয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার উদাহরণ পেয়ে থাকি। এই ক্ষেত্রে তারা কিছু করছে না কেন? তার মানে কি সায়নী ঘোষ ও দেবলীনা দত্ত সেই পথ অনুসরণ করেও কোনও সুরাহা পাননি? তাই আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হলেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর চাই আগে।"
মহিলাদের উপর আক্রমণ নেমে আসছে দেখেও কেন রুদ্রনীল সেই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন না? এই প্রশ্নের উত্তরে রুদ্রনীল জানালেন, তিনি কোনও আমন্ত্রণ পাননি। এ রকম কোনও সভার তথ্য ছিল না তাঁর কাছে।
তবে এই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর কয়েকটি বক্তব্য রয়েছে। তিনি মনে করেন, ‘‘মহিলাদের উপর এই ধরনের হুমকি অত্যন্ত অন্যায়। কঠোর সাজা দেওয়া উচিত সেই মানুষগুলোকে। কিন্তু এই ধরনের হুমকিগুলোর সূত্রপাত কোথায়? দেবলীনা দত্ত টেলিভিশনে গোটা দেশের সামনে যে ভাবে অষ্টমীর দিন গরুর মাংস রান্না করার কথা বলেছিলেন, তাতে একাধিক ধার্মিক মানুষ আঘাত পেয়েছেন। সেই মানুষগুলো যে কেবল বিজেপি, সেই ভাবনাটা ভুল।’’ রুদ্রনীল যোগ করলেন, "দেবলীনার বৃদ্ধা মা আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন শুনলাম। দেবলীনার মাকে জিজ্ঞেস করুন তো, দুর্গা পুজোর সময়ে কখনও গরুর মাংস রান্না করার কথা ভেবেছেন কি? এ রকম কথায় হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষেরা আঘাত পান জেনেও এই ধরনের কথা বলার কী মানে? আমাদের শিল্পীদেরও একটি নৈতিক দায়িত্ব বর্তায় কিন্তু!" রুদ্রের মতে, ‘‘যে কোনও নির্বাচনের আগে মানুষ একটু বেশি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। নির্বাচনের আগে প্রত্যেক দলের সমর্থক ও কর্মীরাই এই আক্রমণাত্মক প্রবণতার শিকার। তাই অনেক ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি বা অসভ্য আচরণ করে ফেলেন।’’ একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝালেন অভিনেতা। সম্প্রতি ফেসবুকে তিনি যেই পোস্টটি দিয়েছিলেন তাতে ভয়ঙ্কর ট্রোলের শিকার হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রুদ্রনীল একটি সেল্ফি পোস্ট করেছিলেন। তার নীচে নেটাগরিকরা রুদ্রর বানান ভুল থেকে শুরু করে দল পাল্টানোর বিষয়টিকে তুলে আনেন। সেই প্রসঙ্গে রুদ্রের বক্তব্য, "আমি কি কিছু বলেছি তাঁদের? বলিনি, কারণ জানি এটা কেবল এই নির্বাচন পর্যন্ত চলবে। যেই নির্বাচনী হাওয়া চলে যাবে, অমনি তাঁরা আমায় ফের অভিনেতা হিসেবেই দেখবেন।"

Advertisement

শেষে ফের আগের বাক্যটিকেই তুলে এনে রুদ্র বলতে চাইলেন, "যদি এ রকম হুমকি কেউ দিয়ে থাকেন, তা হলে সেটা নিন্দনীয়। ধর্ষণ তো অনেক বড় কথা, দেবলীনাকে যদি কেউ চড় মারার কথা বলত, সেটাও খুব নিন্দনীয়। এবং রাজ্য সরকারের উচিত সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করা। যদি তার পরেও লাগাতার ভাবে এই ঘটনা ঘটতে থাকে, তখন রাস্তায় নামুন!"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement