Tollywood

কেবল গরু নয়, যে কোনও প্রাণীকেই কেটে খেতে কষ্ট হয়: দেবলীনা দত্ত

সাইকেলের পিছনে বেশ কয়েকটা মুরগিকে যখন পুরো উল্টো করে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই মুরগিগুলোর চোখের কথা মনে করালেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২১ ১০:৪৫
Share:

দেবলীনা দত্ত ফাইল চিত্র

অষ্টমীর দিন গরুর মাংস রান্না করার মন্তব্য করায় গণধর্ষণের হুমকি পেতে হয়েছে তাঁকে। সেই অভিনেত্রী নিজে এক জন নিরামিষাশী। সোমবারের প্রতিবাদ সভায় তার কারণ ব্যাখ্যা করে জানালেন তিনি। একই সঙ্গে স্পষ্ট আঙুল তুললেন বিজেপির বিরুদ্ধে।

Advertisement

কোনও রাজনৈতিক রঙ ছাড়াই মেট্রো চ্যানেলে মানুষের ভিড় জমেছিল সোমবার। টলি পাড়া থেকে টেলি পাড়া, কবি-সাহিত্যিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ- এক বৃহৎ উদ্দেশ্যে জমায়েত হয়েছিলেন বাংলার মানুষ। 'এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার' অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল বিজেপির বিরোধিতা করার জন্য। তারকাদের দাবি, বিজেপির মতো এমন ফ্যাসিবাদী শক্তিকে অঙ্কুরে বিনাশ না করলে অনেক বড় আকার নেবে এরা। আর এর থেকেও বেশি আস্ফালনে মানুষের ব্যক্তিগত পরিসরে অনাধিকার প্রবেশ করবে তারা। স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার এই আগ্রাসনকে আটকে দেওয়ার আর্জিতে পথে নেমেছিলেন হাজারো মানুষ।

এই প্রতিবাদ সভার সূচনা কেবল একটি বা দু'টি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নয়। গোটা প্রবণতাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর তোলার দিন ছিল আজ। তবে সম্প্রতি অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ ও দেবলীনা দত্তকে আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয় তাঁদের মতামত প্রকাশের জেরে। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সে দিনের এই সভার আয়োজন।

বহু তারকার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। মঞ্চে উঠেই প্রথমে সকলকে কৃতজ্ঞতা জানালেন অভিনেত্রী। আলোচ্য বিষয়ে কিছু বলার আগে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, যা যা কথা তিনি বলতে চলেছেন, তার সমস্ত প্রমাণ দেবলীনার কাছে আছে।

"আমি নিরামিষ খাই। এর কোনও ধার্মিক কারণ নেই। আমার জীবনে একটিই ধর্ম, 'জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।' আর তাই কোনও পশুকে কেটে খেতেই আমার যন্ত্রণা হয়।"

Advertisement

একটি উদাহরণ তুলে আনলেন অভিনেত্রী। সাইকেলের পিছনে বেশ কয়েকটা মুরগিকে যখন পুরো উল্টো করে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই মুরগিগুলোর চোখের কথা মনে করালেন তিনি। সেই বিস্ফারিত চোখগুলো দেখলে বড্ড কষ্ট হয় তাঁর। আর এই কারণেই তিনি কোনও পশুই খেতে পারেন না। স্বাভাবিক ভাবেই এই মনোভাবের কারণে পশু দেখাশোনার দায়িত্বও নিয়েছেন তারকা দম্পতি। এমনকি তাঁদের কাছে একাধিক বার অসহায় গরুর খবর আসে। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান।
এ বারে সামনে আনলেন কিছু প্রমাণ। দেবলীনার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী তরুণজ্যোতি তেওয়ারির দাবি, তিনি খুনের হুমকি দেননি। নিজের ফোনের স্ক্রিনশট দেখিয়ে সেই যুক্তিকে অসত্য প্রমাণ করলেন দেবলীনা।
ফের নেটাগরিকদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলেন। 'আপনি তো নিজে হিন্দু হয়ে অষ্টমীর দিন গরুর মাংস রান্না করবেন বলেছিলেন। একটা কথা বলুন তো, আপনার কোনও মুসলিম বন্ধুকে ঈদের দিন শুয়োরের মাংস খাওয়াতে পারবেন?' অভিনেত্রী জানালেন, "এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে আমাকে। সে ক্ষেত্রে আমার জবাব, আপনারা একটু পড়াশোনা করে এসে ট্রোল করুন দয়া করে। শুয়োর মানে বরাহ আর বরাহ হল হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর অবতার। আর সেই শুয়োর খেলে আপনাদের কিছু যায় আসবে না?"
তিনি ভয় পান না। কেবল বাংলার মানুষকে সজাগ করতে চান অভিনেত্রী। যাতে এই অন্ধকারের ঘোর থেকে চোখ খুলে আলোর সন্ধান করা শুরু করে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement