‘মেহুল’ শুভশ্রীকে নিয়ে কী বললেন ‘বাবাইদা’ ঋত্বিক চক্রবর্তী? ছবি: ফেসবুক।
সকালে আনন্দবাজার অনলাইন থেকে ফোন, “আজ তো আপনার নায়িকার জন্মদিন।” একটু থতমত খেয়েছিলাম। আমার তো ২০-২৫ জন নায়িকা! কার কথা বলছেন? শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, নামটা শুনেই হেসে ফেলেছি। নিজেকে সামলে বললাম, শুভশ্রীকে আচমকা বললে ও-ও বোধহয় একই উত্তর দিত। ওর তো নায়কের সংখ্যা আরও বেশি।
হ্যাঁ, শুভশ্রী আমার সাম্প্রতিকতম নায়িকা। ‘পরিণীতা’, ‘ধর্মযুদ্ধ’, ‘সন্তান’— রাজ চক্রবর্তীর পরপর তিনটি ছবিতে এক সঙ্গে কাজ করলাম। প্রচণ্ড পরিশ্রমী। অভিনয়ে নিবেদিতপ্রাণ। সেটে এসে কোনও বাজে আড্ডা, কথা নয়, একমনে শুটিং করত। ‘পরিণীতা’য় ওকে প্রচণ্ড খাটতে হয়েছিল। আমরা যে বয়সটা পর্দায় দেখিয়েছি বাস্তবে তো সেটা আমরা নই। শুভ কিন্তু ওজন কমিয়ে, কথায়বার্তায় সেই ছেলেমানুষি ভাব হুবহু ফুটিয়ে তুলেছিল। বাধ্য করেছিল ‘টিন এজ’ হিসেবে ওকে বিশ্বাস করতে। অনেকে জানতে চান, নিশ্চয়ই ওর সেই ধাপে ধাপে পরিবর্তন দেখেছিলাম।
আমি বলব, দেখিনি। কী ভাবে প্রস্তুতি নেবেন, সেটা কেউ দেখান না। সেটা তাঁর নীরব অধ্যবসায়। ঠিক যেমন, মাংসের টুকরো কী ভাবে কাটা হবে সেটা না দেখাই শ্রেয়। তা হলে হয়তো কষা মাংস খাওয়ার ইচ্ছেটাই চলে যেতে পারে। শুভও নিজেকে একেবারে প্রস্তুত করে সেটে এসেছিল। এবং প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত সেই ধারা ধরে রেখেছিল। এই প্রসঙ্গে একটা মজার কথা মনে পড়ছে। রাজের ‘পরিণীতা’য় ‘মেহুল’ তার ‘বাবাইদা’কে পাবে না। ছবির নায়ক প্রেমে ঘা খেয়ে আত্মঘাতী। ‘সন্তান’ ছবিতে আমি মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলে। মা-বাবাকে দেখি না। তাই নিয়ে আইন-আদালত। সেখানে বিরোধী পক্ষের উকিল শুভশ্রী। ছবির ট্রেলার প্রকাশ হতেই সমাজমাধ্যমে মিম ছড়িয়ে পড়ছে, ‘বাবাইদার উপরে শোধ নিতে মেহুল এ বার আইনজীবী!’ আমি কিন্তু খুব মজা পেয়েছি।
‘পরিণীতা’ থেকে ‘সন্তান’— যাত্রাপথে শুভশ্রীকে নানা ভাবে দেখলাম। ‘নায়িকা’ শুভশ্রী অভিনীত ছবি আমার তেমন দেখা হয়নি। আমার সাক্ষাৎ ‘অভিনেত্রী’ শুভশ্রীর সঙ্গে। সেটে শুটের সময় তেমন কথা না হলেও অবসরে গল্পগাছা হত। আমাদের দু’জনেরই সন্তান আছে। ফলে, স্বাভাবিক ভাবেই আড্ডায় সংসার-সন্তানের কথা উঠতই। আর ওর দিলখোলা হাসি। ওর হা হা হাসি দেখতে দেখতে আমরাই হেসে আকুল হতাম।
আমার কাছে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘আইডেনটিটি’ কী বলুন তো? ‘পরিশ্রমী’, ‘অভিনেত্রী নায়িকা’, ‘প্রাণখোলা হাসি’। মন থেকে বলছি, তুমি এ রকমটাই থেকো শুভ।