সিবিআই জেরার পর রিয়া।—ছবি পিটিআই।
মুম্বইয়ে পা দেওয়ার আট দিন পরে রিয়া চক্রবর্তীকে তলব করল সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদ করল দশ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার সময়ে সান্টাক্রুজ়ের ডিআরডিও-র গেস্টহাউসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল ২৮ বছর বয়সি রিয়াকে। এখানেই গত সপ্তাহ থেকে রয়েছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। এখানেই তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে প্রয়াত অভিনেতার সঙ্গীদের। রিয়া আজ তাঁর নিজের বাড়ি থেকে বেরোন সকাল দশটায়। বাড়ির বাইরে সাংবাদিকেরা তাঁর গাড়ির সামনে ভিড় জমান। রিয়া রাগত ভাবে গাড়ির ভিতর থেকে জানলার কাচে কনুই দিয়ে ধাক্কা মারছেন, সাংবাদিকদের উদ্দেশে কিছু বলছেন, এই ভিডিয়ো আজ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সিবিআই সূত্রের খবর, রিয়ার বয়ান রেকর্ড করেছেন নূপুর প্রসাদ। তিনিই মুম্বইয়ে আসা সিবিআই দলটির ভারপ্রাপ্ত অফিসার। ১০টা ৪০-এ গেস্টহাউস পৌঁছন রিয়া। রাত ন’টার পরে সেখান থেকে বেরোন। সিবিআই সূত্রের খবর, কাল বা অন্য কোনও দিন ফের ডাকা হবে রিয়াকে।
রিয়ার সঙ্গেই সিবিআই তলব করেছিল তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তীকেও। গত কালও শৌভিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছি। আজ শৌভিক ও রিয়াকে আলাদা আলাদা ঘরে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, যাতে তাঁদের বয়ানে কোনও অসঙ্গতি থাকলে সহজেই ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন: এ বার ভারতীয় বায়ুসেনার ভূমিকায় কঙ্গনা
রিয়া সিবিআইয়ের গেস্টহাউসে পৌঁছনোর আগে সেখানে পৌঁছে যান সুশান্তের বন্ধু তথা একই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ পিঠানি। গত সাত দিন ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর আড়াইটে নাগাদ সান্টা ক্রুজ়ের গেস্টহাউস থেকে সিদ্ধার্থকে নিয়ে যাওয়া হয় বান্দ্রা কুর্লা কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দফতরে। সন্ধে সাড়ে সাতটায় ফেরত আসেন সান্টা ক্রুজ়ের গেস্টহাউসে।
রিয়াকে ১০ প্রশ্ন
• সুশান্তের মৃত্যুর খবর তাঁকে কে দিল? তখন তিনি কোথায় ছিলেন?
• খবর পেয়ে রিয়া কি সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন? যদি তা না হয়, তা হলে তিনি কোথায়, কখন সুশান্তের মৃতদেহ দেখলেন?
• তিনি কেন ৮ জুন সুশান্তের ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যান?
• ফ্ল্যাট ছেড়ে যাওয়ার আগে তাঁদের দু’জনের মধ্যে কি ঝগড়া হয়েছিল?
• সুশান্তের বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে, ৯ জুন ও ১৪ জুন, এই ছ’দিনের মধ্যে তাঁর সঙ্গে কি সুশান্তের কোনও কথা হয়েছিল?
• এই ছ’দিনের মধ্যে সুশান্ত কি নিজে থেকে রিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন? রিয়া কি সেই সব ফোনকল বা মেসেজের উত্তর দেননি? কেন?
• সুশান্ত কি এই সময়ে রিয়ার পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন? তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছিল?
• সুশান্তের কী কী শারীরিক ও মানসিক সমস্যা ছিল? তাঁকে কোন কোন চিকিৎসক ও মনোবিদ দেখতেন? তিনি কী কী ওষুধ খেতেন?
• সুশান্তের পরিবারের সঙ্গে রিয়ার সম্পর্ক কী রকম ছিল?
• রিয়া কেন সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলেন? তাঁর কী ধারণা হয়েছিল যে, সুশান্তের মৃত্যুর পিছনে কোনও অপরাধমূলক কাজ রয়েছে?
আজ সুশান্তের ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকেও সিবিআইয়ের গেস্টহাউসে তলব করা হয়েছিল। এ ছাড়া, সুশান্তের পাচক নীরজ সিংহ এবং সব সময়ের পরিচারক দীপেশ সবন্তকেও একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। এত দিন সিবিআই রিয়াকে না-ডাকলেও দফায় দফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তা ছাড়া, সুশান্তের মৃত্যুর পরেই রিয়ার বয়ান নথিভুক্ত করেছিল মুম্বই পুলিশ।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্কক ট্রিপে টানা তিন দিন হোটেল থেকে বের হননি সারা-সুশান্ত!
সুশান্তের টাকা তছরুপের তদন্তে নেমে আজ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সমন পাঠিয়েছে গোয়ার এক হোটেল ব্যবসায়ী গৌরব আর্যকে। একাধিক বেসরকারি সূত্রের দাবি, এই গৌরব-ই মাদক সরবরাহ করতেন রিয়া ও সুশান্তকে।