নেল পলিশ
পরিচালনা: বাগস ভার্গব কৃষ্ণ
অভিনয়:অভিনয়: মানব, অর্জুন, রজিত, আনন্দ, মধু
৬/১০
ওটিটি প্ল্যাটফর্মের পছন্দের জ়ঁর থ্রিলার। সেই মোড়কে বোনা হয়েছে জটিল মনস্তত্ত্বের গল্প। বিষয় হিসেবে নতুন না হলেও, অভিনয়ের গুণে উপভোগ্য জ়ি ফাইভের অরিজিনাল ছবি ‘নেল পলিশ’।
‘দিল্লি বেলি’, ‘তারে জ়মিন পর’-খ্যাত অভিনেতা বাগস ভার্গব কৃষ্ণ পরিচালিত এই ছবির কাস্টিংও চমকপ্রদ। মূল ধারার ছবির অভিনেতা অর্জুন রামপালের সঙ্গে চরিত্রাভিনেতা মানব কল! লাইমলাইটের সবটুকুই কেড়ে নিয়েছেন মানব।
চেনা থ্রিলারের মতো এখানে ঘটনার ঘনঘটা নেই। নেই সেই রুদ্ধশ্বাস গতিও। বরং একটি জঘন্য অপরাধের তদন্ত করতে গিয়ে ধীরে ধীরে খোলসা হয় মূল বিষয়টি। গোটা ছবির ট্রিটমেন্টে এক সূক্ষ্মবোধ কাজ করেছে। চোখে আঙুল দিয়ে মূল বিষয়টি বলা হয়নি। ফলে জটিল মনস্তত্ত্বের প্রহেলিকা ছবি শেষের পরেও ভাবতে বাধ্য করবে দর্শককে।
লখনউতে পরপর খুন হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাবালক ছেলেমেয়েরা। তাদের মৃতদেহ এমন ভাবেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে, শনাক্ত করা যায় না। কিন্তু ঘটনাচক্রে আধপোড়া দু’টি দেহের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় শহরের স্পোর্টস অ্যাকাডেমির এক গণ্যমান্য কোচ বীর সিংহকে (মানব)। রাজ্যসভায় সিট পাওয়ার লোভে বীরের মামলায় আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত হয় সিদ্ধার্থ জয়সিংহ (অর্জুন রামপাল)। সরকারি পক্ষের কৌঁসুলি অমিত কুমার (আনন্দ তিওয়ারি)। প্রধান বিচারপতি পদে রয়েছে কিশোর ভূষণ (রজিত কপূর)। কোর্টরুম ড্রামা, জেল ছবির অনেকটা অংশ জুড়ে। বাদী ও বিবাদী পক্ষের সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে কাঁটাছেড়া চলতে থাকে নিরন্তর। বীরের বিরুদ্ধে যেমন অপরাধের প্রমাণ রয়েছে, আবার তা খণ্ডনেরও পরিসর রয়েছে। তবে কি সেই আসল অপরাধী? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ধরা পড়ে বীরের অচেনা সত্তা, মানসিক বিকার।
বীরের চরিত্রে মানব এ ছবির সম্পদ। এত নিখুঁত তাঁর শরীরী ভাষা যে, বীরের একাধিক সত্তা বিশ্বাস করতে অসুবিধে হয় না। অর্জুন চেষ্টা করেছেন। চাপে থাকা কৌঁসুলীর চরিত্রে আনন্দও ভাল। রজিত কপূর তাঁর চেনা মেজাজেই ধরা দিয়েছেন।
সেনাবাহিনীর প্রাক্তন অফিসারেরা অনেক সময়েই পরবর্তী জীবনে মানসিক বিকারের শিকার হন। বাস্তব অভিজ্ঞতার নিরিখে এই তথ্য সত্যি। প্রাক্তন সেনা অফিসার বীরের বিকারের পিছনে তেমন কোনও ঘটনা দেখানো হয়নি। বরং তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাই এর পিছনে দায়ী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু সেই ‘ব্যাকস্টোরি’ বিশদে দেখানো হয়নি, যা ছবির বড় খামতির জায়গা।। রজিতের স্ত্রীর চরিত্রে অনেক দিন পরে পর্দায় দেখা গিয়েছে ‘রোজা’খ্যাত মধুকে। কিন্তু এই ক্রাইম-ড্রামার সঙ্গে কিশোরের মদ্যপ স্ত্রীর অনুষঙ্গ ঠিক স্পষ্ট নয়।
তবে ছবির যে প্রশ্নগুলির উত্তর সরাসরি দেওয়া হয় না, সেখানে ইতি টানা হয় আইনের হাত ধরে। আর এই ট্রিটমেন্টে ছবির আপাত ধূসর মোড়কে লেগেছে নেশ পলিশের রঙিন ছোঁয়া।