রণিত রায়
বেশ খানিকটা সময় ও ধৈর্য নিয়ে বসতে হবে সিরিজ়টি দেখতে। ‘ক্যাট অ্যান্ড মাউস’ কনসেপ্টের উপরে সাজানো পুরো সিরিজ়। তবে রহস্য নির্মাণ ও রূপায়ণে খুঁত রয়ে গেল। আগের সিজ়নে যে প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়, তা হিমশৈলের মাথাটুকু। আসল রহস্যের উন্মোচন হয়েছে সিজ়ন টুয়ে।
মুখ্যমন্ত্রী হান্ডার (দলীপ তাহিল) অপারেশন বেডে মৃত্যু দিয়ে শুরু হয় সিজ়ন টু। হান্ডার ঔরসজাত সন্তান সাবা (শ্রীস্বরা)। তাঁর বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুর প্লট সাজিয়ে হান্ডাকে অপহরণ করে সাবার স্বামী পৃথ্বী সিংহ (রণিত রায়)। কিন্তু নানা কারণে মাঝপথে তাদের আশ্রয় নিতে হয় এক পরিত্যক্ত বাড়িতে। সেখানে এসে উপস্থিত হান্ডার সেক্রেটারি, যে নিজ উদ্দেশ্যসাধনে হান্ডাকে মারতে চায়। গোলাগুলির আওয়াজে পুলিশ উপস্থিত। বাড়িটিকে আতঙ্কবাদীদের ডেরা হিসেবে চিহ্নিত করে তা ঘিরে ফেলে পুলিশ ও অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড। এ বার শুরু হয় পুলিশ বনাম টেররিস্টের লুকোচুরি।
সিরিজ় এগোনোর সঙ্গেই ধাঁধা বাড়তে থাকে। নাটকের বিভিন্ন অঙ্কে প্রবেশ ঘটে ইন্টেলিজেন্স অফিসার শিখার (শ্বেতা বসু প্রসাদ), রহস্যজনক সাংবাদিক অর্জুনের (দানিশ হুসেন), আন্তর্জাতিক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ইশা অ্যান্ড্রুজ় (শিবানী দান্ডেকর) ও রণবীরের (ডিনো মোরিয়া)। মোড় বদলাতে থাকে রহস্যের। প্রথম কয়েকটি এপিসোডে সেই ধাঁধায় মজে গেলেও সিজ়নের মাঝপথে পৌঁছে ক্লান্ত লাগতে শুরু করে।
একটা পরিত্যক্ত বাড়ির মধ্যে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টও হয়ে যায়। আগের সিজ়নেই দেখানো হয়েছে, সাবাকে লাইফ-সাপোর্ট দিয়ে রাখা রয়েছে। এই সিজ়নে পরিত্যক্ত বাড়িতে লাইফ-সাপোর্ট, ওষুধ তো দূরস্থান, দিনের পর দিন খাবার না খেয়ে এত মানুষ থাকল কী করে, তার কোনও আভাস পাওয়া গেল না। বাড়ির অনতিদূরে তাদের গাড়ি পার্ক করা থাকলেও তা নজরে পড়ল না অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াডের কর্মকর্তাদের।
এ সিজ়নে প্রাণসঞ্চার করেছেন অভিনেতারা। রণিত, দিব্যা দত্ত, শ্বেতা, ডিনো প্রত্যেকেই ভাল অভিনয় করেছেন। আলাদা করে প্রশংসার দাবি রাখেন ডিনো। ঠান্ডা মাথার খুনির চরিত্রে তাঁকে ‘ভয়ংকর সুন্দর’ লেগেছে। আর গোটা সিরিজ়ের শো-পিস শিবানী। অভিনয়ের বিশেষ জায়গা ছিল না তাঁর। আধুনিক সাজে তিনি শোয়ের গ্ল্যামার বাড়িয়েছেন বটে! তবে গোটা সিরিজ়ে টিসকা চোপড়ার অভাব অনুভূত হয়েছে।
থ্রিলারের উত্তেজনা ধরে রাখতে সফল পরিচালক। তার জন্য সাবপ্লটও অনুঘটকের মতো কাজে লাগিয়েছেন। কিন্তু রহস্যের থিয়োরি জমল না। আন্তর্জাতিক কনস্পিরেসি বড় সহজে বুনে দিয়েছেন। যেহেতু ক্রাইম থ্রিলার, তাই সিরিজ়টির আরও এডিটিং প্রয়োজন ছিল। এমন অনেক চরিত্র ও দৃশ্য আছে, যা সিরিজ়কে সমৃদ্ধ করে না, বরং বোঝা বাড়ায়। সিরিজ়শেষে সত্যিই যেন এই থ্রিলার থেকে মুক্তির স্বাদ অনুভব করা যায়।