মাকে (ইনসেটে) শ্রদ্ধা নৃত্যশিল্পী মল্লিকা সারাভাইয়ের। ছবি: রয়টার্স।
শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরেই নিজের জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে নিয়েছিলেন তিনি। শুরু হয়েছিল নাচের সঙ্গে ‘ভালবাসা’র নতুন সফর।
অবশেষে সেই সফর থামল। ৯৭ বছর বয়সে মারা গেলেন ভরতনাট্যমের প্রথিতযশা শিল্পী মৃণালিনী সারাভাই। ফেসবুকে এ দিন মায়ের মৃত্যুর খবরটি জানান শিল্পী-কন্যা নৃত্যশিল্পী মল্লিকা সারাভাই।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, সংক্রমণে ভুগছিলেন মৃণালিনী। গত কালই তাঁকে আমদাবাদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই আজ সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
১৯১৮ সালে কেরলের এক মালয়ালি পরিবারে জন্মেছিলেন মৃণালিনী। বাবা ছিলেন নামকরা ব্যারিস্টার। মৃণালিনীর শৈশব কেটেছিল সুইৎজারল্যান্ডে। সেখানেই নাচের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয়। ভর্তি হয়েছিলেন পশ্চিমী নাচের স্কুলে। এর পর সুইৎজারল্যান্ড থেকে ফিরে এসেছিলেন নিজের দেশে। সোজা চলে এসেছিলেন শান্তিনিকেতনে। সেখানে রবি ঠাকুরের কাছে শিক্ষা গ্রহণ। এর পর কিছু দিনের জন্য মার্কিন মুলুকে পাড়ি। সেখানে আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টসে ভর্তি হন। পরে শাস্ত্রীয় নৃত্যের টানে ফের ভারতে ফেরেন। মীনাক্ষী সুন্দরম পিল্লাইয়ের কাছে জোরকদমে শুরু হয় ভরতনাট্যমের তালিম। এ ছাড়াও কথাকলি এবং মোহিনীআট্টমের তালিমও নিয়েছিলেন মৃণালিনী। শুধু শাস্ত্রীয় নৃত্য নয়, কবিতা ও লেখালিখি— সব ক্ষেত্রেই তিনি তাঁর প্রতিভার ছাপ রেখে গিয়েছেন।
বিয়ে হয়েছিল বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাইয়ের সঙ্গে। বড় বোন ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসুর আইএনএ সেনানী লক্ষ্মী সেহগল। দেশবিদেশে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতীয় নৃত্যশৈলীকে তুলে ধরার কাজে মৃণালিনীর নাম একেবারে প্রথম সারিতে। জওহরলাল নেহরু নিজে বলে গিয়েছিলেন সে কথা। এ দেশের নৃত্যজগতে ‘আম্মা’র স্থান ছিল বটবৃক্ষের মতো।
মৃণালিনীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সোনাল মানসিংহ এ দিনও বলছিলেন, চোখের কাজল আর নাকছাবি ছাড়া ভাবাই যেত না মৃণালিনীকে।