কিমী কাটকরকে মনে আছে? ‘টারজন গার্ল’ হিসাবেই অধিক পরিচিত ছিলেন তিনি। তাঁকে শেষবারের মতো পর্দায় দেখা গিয়েছিল সেই ১৯৯২ সালে। তারপর থেকে পর্দা থেকে স্রেফ গায়েব তিনি। আশি-নব্বইয়ের সেই হট নায়িকা এখন কেমন আছেন, কী করছেন জানেন?
১৯৬৫ সালে মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্ম কিমীর। আশি-নব্বইয়ের দশকে কিমী ছিলেন হট মডেল এবং সুঅভিনেত্রী। সেই সময়ে বোল্ড দৃশ্যে অভিনয় করতেও পিছপা হননি তিনি।
এমন একজন নায়িকার প্রেমে অনেকেই পড়েছিলেন। শোনা যায়, কিমীর প্রেমে পড়েন সঞ্জয় দত্ত। সঞ্জয় দত্তের বায়োপিক সঞ্জুতে দেখানো হয়েছিল, তিনশোরও বেশি মহিলার সঙ্গে প্রেম করেছেন সঞ্জয়।
এই তিনশোর তালিকায় একজন নাকি ছিলেন কিমী। কিমীর সঙ্গে সঞ্জয় দত্তের সম্পর্ক বেশ গভীর হয়ে গিয়েছিল বলেও শোনা যায়। কিমীর কোলাবার ফ্ল্যাটে সঞ্জয় দত্তের ঘন ঘন যাতায়াত ছিল। কিমীর মা তাঁকে পছন্দের রান্নাও করে খাওয়াতেন।
কিমীর সঙ্গে সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। এর মাঝে রিচা শর্মার সঙ্গে পরিচয় হয় সঞ্জয়ের। রিচার জন্য কিমীর সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে ফেলেন সঞ্জয়।
এরপর কিমীর জীবনে আসেন অনিল কপূর। অনিল কপূর ফিল্মে আসার আগে থেকেই বিবাহিত ছিলেন। অনিল এবং তাঁর স্ত্রী সুনীতা কপূরকে বলিউডের অন্যতম হ্যাপি কাপল বলা হয়।
কিন্তু এই হ্যাপি কাপলের জীবনেও তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ ঘটেছিল বলে শোনা যায়। এমনও শোনা যায়, তাঁদের সংসার ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল কিমীর জন্য।
ফিল্মের সেটেই কিমীর সঙ্গে পরিচয় অনিলের। দু’জনের মধ্যে এতটাই ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল যে, অনিল কপূর নাকি এক সময় তাঁর সমস্ত ফিল্মেই কিমীকে নেওয়ার জন্য পরিচালকদের কাছে অনুরোধ করতেন। তাঁদের নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
অনিলের স্ত্রী সুনীতা একেবারেই এই গুঞ্জনে কান দেননি প্রথম দিকে। কিন্তু একবার ফিল্মের সেটে আচমকা হাজির হন তিনি। অনিল কপূর অবং কিমীকে ফিল্ম সেটের একটা আলাদা ঘরে একসঙ্গে দেখতে পান সুনীতা। এর পরই সন্তানদের নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান তিনি। অনিলও নাকি তাঁদের বাধা দেননি।
অনিল কপূর এক সাক্ষাত্কারে নিজেই স্বীকার করেছিলেন, তিনিও ওই সময় কিমীর বাড়িতেই থাকতেন। দু’জনে একটাই টুথব্রাশ ব্যবহার করতেন। কিন্তু কিমী বুঝতে পারেন, সুনীতাকে ডিভোর্স দিতে চাইছেন না অনিল কপূর। তখন নিজেই এই সম্পর্ক ভেঙে দেন।
কিমীকে জনপ্রিয় করে তুলেছিল ১৯৮৫ সালের ফিল্ম ‘অ্যাডভেঞ্চার অব টারজান’। হেমন্ত বিরজের বিপরীতে তিনি মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। এর পর ‘মেরা লহু’, ‘দরিয়া দিল’, ‘সোনে পে সুহাগা’-র মতো ফিল্মে অভিনয় করেন। তবে এগুলো বক্স অফিসে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
১৯৯১ সালে ‘হম’ ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অভিনয় করে ফের নজরে আসেন তিনি। অমিতাভের সঙ্গে কিমীর ‘ঝুমা চুমা দে দে’ গানটি ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিল সে সময়ে।
তবে খুব বেশি দিন অভিনয় জগতে থাকেননি তিনি। তাঁকে শেষবারের মতো ১৯৯২ সালে ‘হামলা’ ছবিতে দেখা গিয়েছিল। তারপর যেন আচমকাই হারিয়ে গেলেন সেই হট নায়িকা। বর্তমানে কেমন আছেন? কী করছেন কিমী কটকর?
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে রয়েছেন কিমী। ১৯৯২ সালে কমার্শিয়াল ফটোগ্রাফার এবং অ্যাডভারটাইজিং ফিল্ম প্রডিউসার শান্তনু শোরেকে বিয়ে করেই মেলবোর্নে চলে যান তিনি। তাঁদের সিদ্ধার্থ নামে একটি ছেলে রয়েছে।
ফিল্ম না করলেও ভারতে মাঝে মধ্যেই আসেন। বন্ধুদের সঙ্গে ছবিও শেয়ার করেন কিমী।