দেবিকার গল্পে কোনও সত্যতা নেই? জবাব দিলেন অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
১৭ মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে রানি মুখোপাধ্যায় অভিনীত ছবি ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’। ছবিতে দুই সন্তানের মা দেবিকা চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রানি। প্রায় ১১ বছর আগের এক সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবি। স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে ভিন্দেশে সংসার দেবিকার। তার বড় ছেলে শুভ, ছোট মেয়ে সূচি। চাকরিসূত্রে নরওয়েবাসী দেবিকার স্বামী। দুই সন্তানকে নিয়ে হাসিখুশি সংসার দেবিকার। সেই ভরা সংসারে এক দিন নেমে আসে বিপদ। দেবিকার কোল থেকে কেড়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর দুই সন্তানকে। নিজের সন্তানকে ফিরে পেতে লড়াইয়ে নামে দেবিকা চট্টোপাধ্যায় তথা ‘মিসেস চ্যাটার্জি’। প্রায় এক দশক আগে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন বাঙালি কন্যা সাগরিকা চট্টোপাধ্যায়। দীর্ঘ দু’বছরের আইনি লড়াইয়ের পর নিজের সন্তানদের ফিরে পেয়েছিলেন সাগরিকা। এক মায়ের সেই লড়াইয়ের কাহিনিই ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ ছবির মূল নির্যাস।
‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ মুক্তির পরেই ছবি নিয়ে ঘোরতর আপত্তি জানান ভারতে থাকা নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যান্স জেকব ফ্রাইডেনলন্ড। তাঁর দাবি, ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ আসলে একটি সাজানো গল্প, যাতে তথ্যগত অনেক ত্রুটি আছে। ফ্রাইডেনলন্ডের দাবির ভিত্তির আগেই জবাব দিয়েছেন বাস্তবে দেবিকা চট্টোপাধ্যায় তথা সাগরিকা। এ বার মুখ খুললেন পর্দায় দেবিকা অর্থাৎ রানি মুখোপাধ্যায় নিজে। রানি বলেন, ‘‘সবারই নিজস্ব মতামত থাকতে পারে। এই ছবি তো কাউকে আঘাত করার জন্য বানানো হয়নি। এটা এক জন মায়ের গল্প, যেটা মানুষের জানা উচিত।’’ রানির দাবি, ‘‘এটা একটা সত্যি ঘটনা। ছবিটাকে যে ভাবে দেখা হচ্ছে, তার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে সেটা বানানো হয়েছিল।’’ রানি আরও বলেন, ‘‘ছবিতে পরিষ্কার দেখানো হয়েছে যে, এটা একটা ব্যবস্থার ভুল নয়। বরং যাঁরা ক্ষমতার জায়গায় থেকে তার অপব্যবহার করেছেন, তাঁদের দোষ। সবাই নিজেদের দেশ নিয়ে আবেগপ্রবণ, তাই তাঁরা দেশের ভাবমূর্তিকে রক্ষা করতেই চাইবেন। কিন্তু ভারতীয় হিসাবে আমি কী বুঝব, যখন সরকার এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিল? যদি সাজানো ঘটনাই হত, তা হলে কি সরকার জড়িয়ে পড়ত?’’ পাল্টা প্রশ্ন করেন অভিনেত্রী। তাঁর মতে, এক বিশেষ ব্যক্তির মতামতের উপর ছবির সাফল্য নির্ভর করে না। রানির মতে, নরওয়েতে যে ছবি ভাল সাড়া পেয়েছে, সেটাই ছবির সাফল্যের প্রমাণ।
আগে ফ্রাইডেনলন্ডের ‘সাজানো গল্প’ দাবিতে জবাব দিয়েছিলেন সাগরিকা নিজেও। তিনি বলেন, ‘‘আমি নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের আপত্তি জানাচ্ছি। এত বছর পরও নরওয়ে সরকার আমার কাছে ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি। তারা আমার জীবন নষ্ট করেছে, আমার সম্মান নষ্ট করেছে। আমার সন্তানরা এখনও ওই ঘটনার স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে। ওই সময় শুধু মাত্র ভারত সরকারই আমাকে সাহায্য করেছিল।’’