রাজা এবং মাম্পি।
মুভিটোন স্টুডিয়ো সরগরম। ধারাবাহিক ‘দেশের মাটি’-র সেটে তুমুল হুল্লোড়। ফ্লোর জুড়ে বিয়ের মণ্ডপ। রাজা-মাম্পির বিয়ে বলে কথা! দর্শকদের মতোই উত্তেজিত সমস্ত অভিনেতা, কলাকুশলী, রূপসজ্জা শিল্পীরাও। সবাই ধারাবাহিকের জনপ্রিয় জুটির চার হাত এক করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। ড্রেসার ‘মাম্পি’ ওরফে রুকমা রায়কে সাজাতে নতুন বেনারসী, গয়না এনে দিচ্ছেন। ‘রাজা’ ওরফে রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিখুঁত বর সাজাতে হাজির টোপর, টাটকা মালা, ডিজাইনার ধুতি-পাঞ্জাবি।
দর্শক-অনুরাগীরা ধারাবাহিকের সামাজিক পাতায় ছবি ভাগ করে চলেছেন অনবরত। এই একটি বিয়ের দৌলতে ফের চড়চড়িয়ে বেড়েছে ধারাবাহিকের টিআরপি। অভিনয় সূত্রে গত সাত দিন ধরে পর্দায় একে অন্যের বর-বৌ রাহুল-রুকমা। ক্যামেরার সামনে বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান নিখুঁত ভাবে পালন করে চলেছেন।
পর্দার বিয়ে কতটা উপভোগ করছেন তাঁরা?
‘‘মাম্পিকে নিয়ে ছোট-বড় পর্দা মিলিয়ে আমার ১০০টি বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ে করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি!’’ আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তরে মজা করে ঠিক এই জবাব দিলেন রাহুল। তার পরেই আরও বিশদে বোঝালেন, চিকিৎসক যেমন অস্ত্রোপচার করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁরও এখন ঠিক সেই দশা। ধারাবাহিক দেখতে দেখতে দর্শকেরা ভাবছেন, রাজা মাম্পিকে পেয়ে দুনিয়া ভুলেছে। অভিনেতা তখন আলো, ক্যামেরার কোণ মাপতে ব্যস্ত। ক্লোজ আপ শটে কী ভাবে ‘মাম্পি’ ওরফে রুকমার দিকে তাকালে বেশি রোম্যান্টিক লাগবে তাঁকে, চিন্তা করছেন। রাহুলের দাবি, ‘‘এই সময় আমি যদি আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি, তা হলে সব মাটি। তাই ওই সব দৃশ্যে নিজের বিয়ের কথা ভুলেও ভাবি না। অভিনয়ে বেশি মন দিই। যাতে দৃশ্যগুলো বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে।’’
টানা সাত দিন ধরে বৌ সাজছেন ‘মাম্পি’ ওরফে রুকমা। রোজ ভারী পোশাক, গয়না, রূপসজ্জায় সাজতে সাজতে একটু হলেও ক্লান্ত তিনি, বলেই ফেললেন অভিনেত্রী। রুকমার কথায়, ‘‘আমার অনুরাগীরা কিন্তু ছবি পোস্ট করতে করতে একটুও ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন না! বরং ওঁদের দৌরাত্ম্যে আমার মুঠোফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যাচ্ছে। সব ছবিতে ওঁরা আমায় ট্যাগ করছেন।’’ যদিও অভিনেত্রীর সব ক্লান্তি কেটে যাচ্ছে ফ্লোরে পা দিলেই। সবার আনন্দ দেখতে দেখতে, বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে করতে রুকমার মনে হচ্ছে, তাঁর আর রাহুলের প্রথম জুটি এ ভাবে সফল হবে একেবারেই ভাবেননি। অভিনেত্রীর দাবি, ভাল বন্ধুত্ব পর্দায় কতটা ছাপ ফেলতে পারে রাজা-মাম্পির রসায়ন তাঁর প্রমাণ।
ছোট পর্দার দর্শকদের মতোই মেয়েকে কনের সাজে দেখে নাকি দারুণ খুশি অভিনেত্রীর মা-বাবা। পাড়া-পড়শি রুকমার বিয়ের ভোজ খাওয়ার জন্য মুখিয়ে! ‘‘রোজ একটি করে পর্ব দেখছেন সবাই। তার পরেই মা-বাবার কাছে এসে আবদার জানাচ্ছেন, এ বার মেয়ের বিয়ে দিন। আমরা নেমন্তন্ন খাই।’’ তা হলে সত্যি সত্যিই বিয়ের সানাই বাজতে চলেছে রুকমার? পরিবার পাত্র দেখছে? পর্দার ‘মাম্পি’ এক কথায় নাকচ করে দিয়েছেন সেই সম্ভাবনা। উল্টে ফাঁস করেছেন, বাড়ির লোক এ পথে হাঁটবেন না। মা-বাবা জানেন, দেখেশুনে নয়, আমি প্রেম করে বিয়ে করব।’