অ্যামাজন প্রাইমের সদ্য মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজগুলোর মধ্যে দর্শকদের বেশ নজর কেড়েছে ‘বন্দিশ ব্যান্ডিটস’। ১০টি পর্বের এই সিরিজের রেটিংও বেশ ভাল।
মেন স্ট্রিম থেকে বেরিয়ে একেবারে ভিন্ন কনসেপ্টে সিরিজটি তৈরি করেছেন পরিচালক আনন্দ তিওয়ারি। এই সিরিজের বেশ কয়েকটি অজানা তথ্য রইল এই গ্যালারিতে।
সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব ‘শুদ্ধিকরণ’। এই পর্বের শুটিং সবচেয়ে কঠিন ছিল, এমনটাই জানিয়েছেন পরিচালক। তাঁর কথায়, এই দৃশ্যটি শুটিংয়ের জন্য একটা বহু পুরনো মন্দির, যা শহর থেকে অনেক দূরে, এমন একটা জায়গার খোঁজ করছিলেন তাঁরা। জয়সলমীর, বিকানেরে ঘুরেও এমন কোনও জায়গার খোঁজ পাননি তাঁরা।
আনন্দ তিওয়ারি আরও জানান, জোধপুরেরই এক স্থানীয়ের কাছে তাঁরা জানতে পারেন, শহর থেকে ২০ মিনিটের দূরত্বে একটা হাজার বছরের মন্দির রয়েছে। চামুণ্ডি মন্দির নামে পরিচিত সেটি। সেখানেই ঋত্বিক ভৌমিক ওরফে রাধের (গল্পের নায়ক) শুদ্ধিকরণের দৃশ্যটি শুট করা হয়।
সিরিজের নবম পর্ব ‘আ সেপারেশন’-এ একটি দৃশ্য রয়েছে যেখানে রাধেকে ঘর ঝাড় দিতে হচ্ছে। পরিচালকের কথায়, কী ভাবে ঝাড় দিতে হয় রাধে সেটা জানত না। তখন পরিচালক নিজে গিয়ে তাকে দেখিয়ে দেন কী ভাবে ঝাড় দিতে হয়।
এই সিরিজে রাধের বাবার অভিনয় করেছেন রাজেশ তৈলাং। সঙ্গীতের সঙ্গে তাঁর পরিচয় শৈশব থেকেই। তাঁর ঠাকুরদা পণ্ডিত গোবিন্দলাল গোস্বামী ছিলেন রাজস্থানের খ্যাতনামা তবলাবাদক। অভিনয়ের পাশাপাশি এক জন লেখক, কবি এবং পরিচালক হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে রাজেশের।
এই সিরিজে রাজেশের বাবার অভিনয় করেছেন নাসিরুদ্দিন শাহ। ঘটনাচক্রে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-য় নাসিরুদ্দিন ছিলেন রাজেশের শিক্ষক।
এই সিরিজের পঞ্চম পর্বে একটি দৃশ্য রয়েছে যেখানে নাসিরুদ্দিন শাহ ওরফে পণ্ডিত রাধে মোহন রাঠৌরের কানের সমস্যা হচ্ছে। তাঁকে এক জন ইএনটি স্পেশালিস্টের কাছে নিয়ে যান তাঁর পুত্রবধূ মোহিনী। এই দৃশ্যে ওই চিকিত্সক কিন্তু এক জন সত্যিকারের ইএনটি স্পেশালিস্ট।
ওই চিকিত্সককে বলা হয়েছিল, এই দৃশ্যে এক জনের কান পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু কার কান পরীক্ষা করতে হবে সেটা বলা হয়নি। কিন্তু সেই ব্যক্তি যে নাসিরুদ্দিন শাহ, সেটে তাঁকে দেখার পর আপ্লুত হয়ে পড়েন ওই চিকিত্সক।
এক সাক্ষাত্কারে ঋত্বিক ভৌমিক জানিয়েছেন, প্রথমে রাধের চরিত্রটা তাঁর ভাল লাগেনি। কারণ তাঁর চরিত্রের সঙ্গে সিরিজে রাধের চরিত্রকে খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না। কিন্তু অভিনয় করার পর সেই রাধের চরিত্রই এখন তাঁর আসল জীবনকে প্রভাবিত করেছে। তাঁকে শিখিয়েছে শৃঙ্খলাবোধ, প্যাশনের আসল মানে কী।
এই সিরিজের শেষ পর্ব ‘যুগলবন্দি’। যেখানে অতুল কুলকার্নি ওরফে দিগ্বিজয়ের সঙ্গে সঙ্গীত প্রতিযোগিতা হচ্ছে রাধের। সেখানে মল্লার রাগ ‘গরজ গরজ’ গাওয়া হচ্ছিল যুগলবন্দিতে। পরিচালক আনন্দ তিওয়ারি জানান, গত বছরের এপ্রিলে বিকানেরে এই যুগলবন্দির শুটিং হয়।
সুরকার শঙ্কর মহাদেবন ঠিক করেছিলেন গানটির সময় বৃষ্টির একটা দৃশ্য ঢোকানো হবে। কিন্তু যখন ‘গরজ গরজ’ গানটির শুটিং শুরু হয়, বৃষ্টির কোনও দৃশ্য ঢোকাতে হয়নি, সত্যিই বৃষ্টি নেমেছিল। এবং পুরো সেট ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
পরিচালক জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এপ্রিলে কোনও বছরেই এখানে বৃষ্টি হয় না। অন্তত গত ১৫ বছরে এ রকম বৃষ্টি হয়নি।