রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
৯ অগস্টের পর থেকেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিহত চিকিৎসক-পড়ুয়া যাতে বিচার পান, সেই দাবিতে রাজপথে নেমেছেন প্রায় সর্বস্তরের মানুষ। পিছিয়ে নেই তারকারাও। ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে নির্যাতিতার হয়ে বিচার চেয়ে যে ভাবে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ, তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অভিনেত্রী-সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক ভিডিয়ো বার্তায় পাশে থাকার কথা জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। নির্যাতিতা চিকিৎসকের কথা বলতে গিয়ে বার বার চোখ ভিজে গিয়েছে তাঁর। তার পর থেকেই শুরু হয়েছে রচনাকে নিয়ে হাসাহাসি। কেউ তাঁর চোখের জলকে ‘কুম্ভীরাশ্রু’ বলেছেন। কেউ বলেছেন, তাঁকে পুরস্কৃত করা হোক এমন অভিনয়ের জন্য। এ বার সমালোচকদের উত্তর দিলেন রচনা। প্রতিবাদ করলেন ঋতুপর্ণার হয়েও।
রচনা নির্যাতিতা চিকিৎসক-পড়ুয়ার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “যতক্ষণ না নিহত চিকিৎসক সুবিচার পাচ্ছেন আপনারা আওয়াজ তুলবেন, ওঁর বাবা-মা যাতে সুবিচার পান, দোষী যেন শাস্তি পায়। আমি আছি আপনাদের সঙ্গে।” কথা বলতে বলতেই চোখে জল আসে সাংসদের। তাঁর নিজের জীবনটা স্বাচ্ছন্দ্যের হলেও সমাজের একটা বড় অংশের মহিলা যে ভাবে রাস্তাঘাটে, কর্মস্থলে যাতায়াত করেন তা নিয়ে চিন্তিত তিনি। অশ্রুসজল চোখে তিনি বলেন, “রাতে কাজ সেরে আমি গাড়ি করে বাড়ি ফিরি। তবে বহু মেয়ে ট্রেনে ঝুলতে-ঝুলতে ফেরে, কেউ বাসে, আবার কেউ ফেরে আটোতে। অনেকে অনেক কষ্ট করেন। আমি একজনের বোন, একজনের মেয়ে। পুরুষ আমাকে সম্মান করবে, পুরুষ বিপদ পড়লে সাহায্য করবে। কিন্তু পুরুষের জাত আমাকে ছিঁড়ে খাবে, আমি চিৎকার করব, কেউ শুনবে না!” অভিনেত্রী এই ভিডিয়োতে বার কয়েক চোখের জল মুছতেই তাঁকে নিয়ে শুরু হয় বিদ্রুপ। সঙ্গীত শিল্পী সাহানা বাজপেয়ী নাম না করেই অভিনেত্রীর কান্নাকে ‘কুম্ভীরাশ্রু’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। এমনকি অভিনেত্রীর চোখের কাজলের স্থায়িত্বের প্রসঙ্গ টেনেও কটাক্ষ করেন গায়িকা। এ ছাড়া সমাজমাধ্যমে চলছে মিমের বন্যা। অবশেষে এই প্রসঙ্গে রচনা বলেন, “আমাদের এখানে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। সেটা নিয়ে মানুষ এ রকম ভাবে ট্রোল করছে অপর মানুষকে! এখন তো উচিত নির্যাতিতার বাবা-মায়ের পাশে থাকা। যার উপর অত্যাচার হয়েছে তার সম্পর্কে কিছু বলায়। তা না করে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কখন চোখের জল ফেললেন, রচনার চোখে কাজল আছে কিনা, এত সময় মানুষের আছে ওই সমস্ত নিয়ে কথা বলার? আমি এগুলোকে গুরুত্ব দিই না, এগুলো পাত্তা দিই না।”