অবস্থান স্পষ্ট করে কী জানালেন পরমব্রত? গ্রাফিক : সনৎ সিংহ।
আরজি কর-কাণ্ডে সরব প্রায় সব পক্ষ। সকলের একটাই দাবি, ‘বিচার চাই’। গত ১৪ অগস্ট থেকেই ঘুম নেই শহরবাসী। প্রতিবাদে পথে নেমেছেন আমজনতা থেকে তারকারা, দিন হোক বা রাত। ‘মেয়েদের রাত দখল’-এর রাতে সস্ত্রীক পথে নামেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। যদিও বিভিন্ন সময়ই অভিনেতাকে শুনতে হয়েছে তিনি ‘শাসকদলের সমর্থক’। এমনকি আরজি কর-কাণ্ডে বিরোধীরা যে সমস্ত প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন, তার সব ক’টি অভিযোগের সঙ্গে সহমত না হওয়ায়ও নাকি কটাক্ষ, সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে অভিনেতাকে। এ বার নিজের তিনি অবস্থান স্পষ্ট করলেন। পাশাপাশি রাজ্যের বিরোধী দলগুলিকে বিঁধতেও ছাড়লেন না।
সমাজমাধ্যমের পাতায় একটি লম্বা পোস্ট করেন পরমব্রত। তাতেই তিনি স্পষ্ট জানান, তিনি মোটেও শাসকদলের ঘনিষ্ঠ নন। পরমব্রত লেখেন, “রাজ্যের শাসকদলের ঘনিষ্ঠ, এই তকমা বার বার গায়ে লাগে আমার! অতীতেও বহু বার হয়েছে! না আমি শাসকদলের সদস্য বা কর্মী, না আমি তাদের নেতা-মন্ত্রী। না আমি তাদের একনিষ্ঠ সমর্থক। না আমাকে তারা খাওয়া, না পরায়। আমি থাকি তাদের কোনও মিটিং-মিছিলে? থাকি না! তা হলে বার বার এই কথা শুনতে হয় কেন?”
পরমব্রত এই প্রশ্ন যেমন তুলেছেন, তেমনই তিনি বেশ কিছু প্রশ্ন করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলগুলিকে। তাঁর কথায়, “রাজ্যের বিরোধী দলগুলির সমর্থকেরা যদি প্রত্যাশা করেন সবাই তাদের সুরেই গলা মেলাবেন, তা হলে তো ভুল হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকের ভাবনাচিন্তা তো ভিন্ন ! আমার তো বটেই। আদর্শের জায়গা থেকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের বিপরীত মেরুর লোক আমি। এই পরিস্থিতিতে, আপনাদের সব পক্ষের অনেকগুলি দাবির সঙ্গে আমি সহমত। কিন্তু সব নয়।”
আরজি কর-কাণ্ডের যেমন বিচার চেয়েছে সব পক্ষই। অভিনেতা অন্য অনেক পক্ষের উদ্দেশে অনুরোধ করেন, সমালোচনা করার আগে কী বিষয় নিয়ে বলছেন সেটা ভেবে করা উচিত।
অভিনেতা প্রশ্ন করেছেন তাঁদের কাছে, যাঁরা এই মুহূর্তে একতরফা সমালোচনা করছেন। পরমব্রত লেখেন, “উন্নাওয়ের সময়, হাতরাসের পরে, কিংবা মণিপুরের ঘৃণ্য ঘটনায়, আসিফার মৃত্যুর পর, এমনকি তিন-চার দিন আগে মুজফ্ফরনগরের ঘটনায় এ ভাবে এতটা ফেটে পড়েননি কেন? ওইগুলোও নারকীয়, আরজি করের ঘটনাও তাই। ওগুলির সমর্থনে যুক্তি সাজানোর বা ধামাচাপা দেওয়ার কোনও অবকাশ নেই, ঠিক যেমন আরজি করে ঘটনাতেও নেই। নিরপেক্ষ এবং দ্রুত বিচার ওগুলিতেও দরকার ছিল, এখানেও!”
অভিনেতা ছেড়ে কথা বলেননি নেটাগরিকদেরও। তাঁদের উদ্দেশে তিনি লেখেন, “কে কোন মিছিলে কবে গেল, ক’পা রাস্তা হাঁটল, ক’টা কথা বলল, সেগুলি আপনার পছন্দ মতো হল কি না! এই ‘উইচ হান্টিং’ করতে গিয়ে আসল বিষয়টা থেকে নজর ঘুরে যাচ্ছে না তো? এটা করে কিছু রাগ প্রকাশ করা যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু যেখানে আসল কৈফিয়ত চাওয়ার কথা সেখানে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। সারা দেশে মহিলাদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার গোটা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন দরকার, সেটার জন্যে সকলে মিলে দাবি জোরদার করি আসুন!”