মায়ের শেষকৃত্য সেরেই নাটকের মঞ্চে কর্মী পৃথ্বীশ

‘দ্য শো মাস্ট গো অন।’ রাজ কপূরের ‘মেরা নাম জোকার’-এর সেই সংলাপের সঙ্গেই নিজের জীবন মেশালেন নাট্যকর্মী পৃথ্বীশ রানা। সিনেমার পর্দায় মায়ের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সার্কাসের এরিনায় দাঁড়িয়ে দর্শকদের হাসিয়েছিলেন জোকার রাজ। শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতায় মায়ের শেষকৃত্য সেরে শনিবার ভোরের ট্রেনে বোকারোয় তাঁর নাটকের দলের অনুষ্ঠানের তদারকিতে পৌঁছলেন ‘ব্রাত্যজন’-এর পৃথ্বীশ।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

বোকারো শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৪ ০৩:১৫
Share:

পৃথ্বীশ রানা

‘দ্য শো মাস্ট গো অন।’

Advertisement

রাজ কপূরের ‘মেরা নাম জোকার’-এর সেই সংলাপের সঙ্গেই নিজের জীবন মেশালেন নাট্যকর্মী পৃথ্বীশ রানা।

সিনেমার পর্দায় মায়ের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সার্কাসের এরিনায় দাঁড়িয়ে দর্শকদের হাসিয়েছিলেন জোকার রাজ। শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতায় মায়ের শেষকৃত্য সেরে শনিবার ভোরের ট্রেনে বোকারোয় তাঁর নাটকের দলের অনুষ্ঠানের তদারকিতে পৌঁছলেন ‘ব্রাত্যজন’-এর পৃথ্বীশ।

Advertisement

ঘুণপোকা সাহিত্য পত্রিকার উদ্যোগে বোকারোর কলাকেন্দ্রে ঝাড়খণ্ড রাজ্য নাট্য উৎসব শুরু হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় সেখানে ‘কে’ নাটক মঞ্চস্থ করে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নাট্যগোষ্ঠী। সদস্যরা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে হাওড়া স্টেশনে ট্রেন ধরতে পৌঁছনোর পরই পৃথ্বীশ তাঁর মাতৃবিয়োগের খবর পান। দলের সকলে তাঁকে ফিরে যেতে বলেন। হাওড়ার রামরাজাতলার নার্সিংহোমে চলে যান পৃথ্বীশ। রাতেই মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। ভোরে ফের স্টেশনে এসে বোকারোর ট্রেন ধরেন তিনি। দুপুরের মধ্যেই পৌঁছে যান ‘ব্রাত্যজন’-এর সহশিল্পীদের কাছে। কাজ শুরু করে দেন তখনই।

মঞ্চ, আলোর তদারকির পাশাপাশি নাটকের সময় শব্দ ঠিকঠাক আসছে কি না, সে সব নজরে রাখার দায়িত্ব বছর বত্রিশের পৃথ্বীশের। নাটকের দলের অন্য কেউ সে কাজে দক্ষ নন। ব্যাঙ্কের নিরাপদ চাকরি ছেড়ে নাটকের দলে যোগ দেওয়া পৃথ্বীশ শনিবার না-থাকলে তাই কিছুটা হলেও সমস্যায় পড়তেন তাঁর সহশিল্পীরা। এ কথা মেনেছেন তাঁদের অনেকেই।

এমন নজির এর আগেও দেখা গিয়েছে। ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলাকালীন মৃত্যু হয় সচিন তেন্ডুলকরের বাবার। অন্ত্যেষ্টির জন্য দেশে ফেরেন সচিন। তা শেষ করেই পৌঁছে যান ভারতীয় ক্রিকেট শিবিরে।

তবে এ রকম তুলনা চান না পৃথ্বীশ। চোখমুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। তিনি বললেন, “মাকে নিয়ে আমার একটা জগৎ ছিল। থিয়েটারও আমার পৃথিবী। নাটকের জন্যও আমি বাঁচি। মাকে হারানোর দুঃখ রয়েছে। কিন্তু আমার শোকের জন্য নাটকের ক্ষতি হোক চাইনি। দ্য শো মাস্ট গো অন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement