প্রথম সারির নায়িকার বিপরীতে আত্মপ্রকাশ। অভিষেকেই বাজিমাত। ‘চকোলেট বয়’-এর পরিচয় পেয়েছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে। কিন্তু প্রথম ছবির পরে হারিয়েই গেলেন পৃথ্বী । সুপারহিট প্রথম ছবির পরেও এই নায়কের নাম আর শোনা যায় না।
দিল্লির ছেলে পৃথ্বীর বাবার সঙ্গে মুম্বইয়ের প্রযোজক মুকেশ দুগ্গলের পরিচয় ছিল। সে সময় মুকেশ ‘দিল কা ক্যয়া কসুর’ ছবিটি তৈরির কথা চিন্তাভাবনা করছিলেন। নায়িকা দিব্যা ভারতীর বিপরীতে তিনি সুযোগ দিলেন বন্ধুপুত্র পৃথ্বীকে।
‘সাজন’ ছবির পরিচালক লরেন্স ডি সু’জা ছিলেন ছবির পরিচালক। সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন নাদিম-শ্রবণ। ‘বিশ্বাত্মা’ ছবির পরে দিব্যা সে সময়কার ব্যস্ত নায়িকা।
সে সময় একসঙ্গে ১০টি ছবিতেও সই করেছিলেন দিব্যা। তাঁর নায়ক হিসেবে প্রথম থেকেই পরিচিতি পেয়ে যান পৃথ্বী।
মুক্তির পরেই ‘দিল কা ক্যয়া কসুর’ সুপারহিট। পৃথ্বী-দিব্যা জুটিও দর্শকদের খুব পছন্দ হল। নাদিম-শ্রবণের সঙ্গীত পরিচালনায় ছবির গান এখনও জনপ্রিয় শ্রোতাদের কাছে।
প্রথম ছবির সাফল্যের পর পৃথ্বীর কাছে সুযোগের অভাব হয়নি। ‘দিলওয়ালে কভি না হারে’, ‘মেরি আন’, ‘প্ল্যাটফর্ম’, ‘ইক্কে পে ইক্কা’, ‘পাণ্ডব’-সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
কিন্তু ছবির সংখ্যার সঙ্গে তাঁর খ্যাতি বেড়ে ওঠার বদলে ক্রমে কমতে থাকে। কয়েক বছরের মধ্যেই বোঝা যায় পৃথ্বীকে তারকা তৈরি করেছিল ছবির গান এবং প্রথম ছবিতে সুপারহিট নায়িকার বিপরীতে অভিনয়ের সুযোগ।
কয়েক বছরের মধ্যেই বলিউডে এই ধারণা তৈরি হয় যে পৃথ্বী নিজের ক্ষমতায় কোনও ছবিকে বক্স অফিসে সফল করাতে পারেন না। ফলে নায়ক থেকে অল্প সময়ের মধ্যে প্রথমে পার্শ্বনায়ক, পরে চরিত্রাভিনয়ের সুযোগ আসতে থাকে তাঁর কাছে।
কিন্তু বলিউডে চরিত্রাভিনেতা হিসেবে আগে থেকেই অনেক কুশীলব ছিলেন, যাঁরা থিয়েটার দুনিয়া থেকে এসেছিলেন। প্রতিযোগিতায় তাঁদের কাছে ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকেন পৃথ্বী।
নয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে ছবির সংখ্যা কমে গেলেও পৃথ্বী পুরোপুরি হারিয়ে যাননি। কিন্তু তারকাবৃত্তের খ্যাতি আর ফিরে পাননি। ২০০৮ সালে মুক্তি পায় তাঁর শেষ ছবি ‘জিমি’। এর পর আর কোনও ছবিতে তাঁকে দেখা যায়নি। টেলিভিশনে তাঁর প্রথম অভিনয় দূরদর্শনে ‘তেহকিকত’ ধারাবাহিকে। তার পর বেসরকারি উপগ্রহ চ্যানেলে ‘হরর শো’, ‘নাগিন’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনয় থেকে দূরে সরে গেলেও বিনোদন দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ হারিয়ে যাননি পৃথ্বী। কালেভদ্রে তাঁকে দেখা যায় পুরস্কার বিতরণী অনু্ষ্ঠানে। তবে তিন দশক আগের সেই সুদর্শন নায়কের চেহারা আজ আমূল পাল্টে গিয়েছে।