(বাঁ দিকে) নিতিন দেশাই। হনসল মেহতা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বুধবার সকালে মিলেছে দুঃসংবাদ। প্রয়াত বলিউডে নামজাদা শিল্প নির্দেশক নিতিন দেশাই। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হয়েছিল, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। সদ্য মিলেছে প্রয়াত শিল্পীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। সেই রিপোর্টেও আত্মহত্যার তত্ত্বেই সিলমোহর দিয়েছেন তদন্তকারীরা। মাথার উপরে প্রায় ২৫২ কোটি টাকার দেনা ছিল প্রয়াত শিল্পীর। এমনকি, ধার শোধ করতে নিজের তৈরি ‘এনডি স্টুডিয়ো’ বন্ধকও রাখতে হয়েছিল তাঁকে। আর্থিক অনটনের সঙ্গে আর যুঝতে না পেরেই নাকি আত্মহননের পথ বেছে নেন নিতিন, অনুমান তদন্তকারীদের। নিতিনের মৃত্যুতে শোকবিহ্বল গোটা বলিউড। বিনোদনের এই জগতে আর্থিক সঙ্কটেরর পরিস্থিতি একাধিক বার শিল্পীদের বাধ্য করে চরম সিদ্ধান্ত নিতে, দাবি মায়ানগরীর অন্যতম খ্যাতনামা পরিচালক হনসল মেহতার। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমের পাতায় নিজের জীবনের সেই অন্ধকার সময়ের স্মৃতিচারণ করলেন ‘স্কুপ’ পরিচালক।
নিতিন দেশাইয়ের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে টুইটারের পাতায় হনসল লেখেন, ‘‘যে দুনিয়া আবেগের ব্যবসায় চলে, সেখানে আর্থিক অনটনের মোকাবিলা করা ভীষণ কঠিন। আমিও এক সময় একের পর এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, বিশেষ করে ‘ওমার্তা’ ও ‘সিমরন’-এর পরে। ওই দুই ছবির ব্যর্থতা আর মাথার উপর বিপুল পরিমাণ দেনা থাকার কারণে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। চারপাশের পরিস্থিতি ওই কঠিন সময়কে আরও অসহনীয় করে তুলেছিল। আমার সব সময় মনে হত, এই বুঝি কোনও ভাবে নিজের ক্ষতি করে ফেলব। সৌভাগ্যবশত, আমি সেই সময় আত্মীয় ও বেশ কিছু বন্ধুকে পাশে পেয়েছিলাম, যাঁদের সঙ্গে আমি কথা বলতে পারতাম।’’ ওই কঠিন সময়ে নাকি কোনও সৃজনশীল ভাবনাও আসত না তাঁর মনে, জানান হনসল। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মাথায় কোনও নতুন কিছু করার ভাবনা আসত না। আমার চারপাশের সবার থেকে নিজেকে ছোট বলে মনে হত— শিল্পী হিসাবে তো বটেই, মানুষ হিসাবেও। কোনও ভাবে এক অজানা বিশ্বাসের জোরে ওই অন্ধকার জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলাম আমি।’’
গত কয়েক দশক ধরে নিজে হাতে ক্যামেরার নেপথ্যের জগৎ তৈরি করেছেন প্রয়াত নিতিন দেশাই। ‘১৯৪২ আ লভ স্টোরি’, ‘লগান’, ‘দেবদাস’, ‘জোধা আকবর’, ‘হম দিল দে চুকে সনম’-এর মতো ছবির সেট জীবন্ত হয়ে উঠেছিল তার হাতের ছোঁয়াতেই। অর্জন করেছিলেন জাতীয় পুরস্কারও। তা সত্ত্বেও আর্থিক অনটনের কাছে শেষ পর্যন্ত মাথা নোয়ালেন নিতিন।